মুম্বই থেকে আহমেদাবাদ—দুটি মহানগরীর মধ্যে এক ঝটকায় পৌঁছে যাওয়ার স্বপ্ন এবার বাস্তব হতে চলেছে। দেশের প্রথম হাই-স্পিড রেল প্রকল্প, অর্থাৎ মুম্বই-আহমেদাবাদ বুলেট ট্রেন করিডর, ধাপে ধাপে শেষের পথে এগোচ্ছে। ২০২৮ সালের মধ্যে এই করিডরের আংশিক অংশে পরিষেবা চালু হওয়ার সম্ভাবনা প্রবল।
৫০৮ কিমি দীর্ঘ এই করিডরটি মহারাষ্ট্রের মুম্বই থেকে শুরু হয়ে গুজরাটের আহমেদাবাদ পর্যন্ত বিস্তৃত। দেশে এই প্রথম এত উচ্চ গতির ট্রেন চালু হতে চলেছে, যার মাধ্যমে দুই শহরের মধ্যে যাত্রা সময় তিন ঘণ্টারও কমে নামিয়ে আনা যাবে।
নির্মাণের অগ্রগতি ও প্রযুক্তি:
২০২৫ সালের মে মাস পর্যন্ত প্রায় ৩০০ কিমি ভায়াডাক্টের কাজ সম্পন্ন হয়েছে। এর মধ্যে ২৫৭.৪ কিমি নির্মিত হয়েছে Full Span Launching Method (FSLM)-এর মাধ্যমে, যা দ্রুত কাজ শেষ করতে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা পালন করেছে। এছাড়াও, Span-by-Span (SBS) পদ্ধতিতে তৈরি হয়েছে আরও ৩৭.৮ কিমি।
এই প্রকল্পে নির্মিত হয়েছে ৩৮৩ কিমি পিয়ার, ৪০১ কিমি ফাউন্ডেশন ও ৩২৬ কিমি গার্ডার। ব্যবহৃত হয়েছে দেশীয় প্রযুক্তিতে তৈরি ৪০ মিটার লম্বা ও ৯৭০ মেট্রিক টন ওজনের বক্স গার্ডার। পরিবেশগত প্রভাব কমাতে বসানো হয়েছে ৩ লক্ষের বেশি নয়েজ ব্যারিয়ার।
স্টেশন ও পরিকাঠামো:
মোট ১২টি অত্যাধুনিক স্টেশন থাকবে এই করিডরে—বাঁদ্রা-কুরলা কমপ্লেক্স (মুম্বই), থানে, বিরার, বোইসার, বাপি, বিলিমোরা, সুরাত, ভরুচ, বড়োদরা, আনন্দ, আহমেদাবাদ এবং সবরমতি। প্রতিটি স্টেশন সাজানো হবে এয়ারপোর্টের মতো সুযোগ-সুবিধা দিয়ে—বিজনেস লাউঞ্জ, খুচরো দোকান, ও অন্য ট্রান্সপোর্ট মোডের সঙ্গে সংযুক্তি।
পরিচালনা ও আন্তর্জাতিক সহায়তা:
এই প্রকল্পটি পরিচালনা করছে National High-Speed Rail Corporation Limited (NHSRCL)। জাপানের প্রযুক্তি ও আর্থিক সহায়তায় বাস্তবায়িত হচ্ছে এই মেগা-ইনফ্রাস্ট্রাকচার উদ্যোগ।
সম্ভাব্য পরিষেবা সূচি:
২০২৮ সালের মধ্যে গুজরাটের সবরমতি থেকে বাপি অংশে ট্রেন চালু হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। সম্পূর্ণ করিডরের উপর পরিষেবা শুরু হতে পারে ২০৩০ সালের মধ্যে।
প্রশ্নোত্তর (FAQ):
-
মুম্বই-আহমেদাবাদ বুলেট ট্রেন প্রকল্পটি কত কিমি দীর্ঘ?
-
এই করিডরের মোট দৈর্ঘ্য ৫০৮ কিমি।
-
-
এই ট্রেনে যাত্রা করলে কত সময় লাগবে?
-
আনুমানিক সময় ৩ ঘণ্টার কম হবে।
-
-
কবে নাগাদ পরিষেবা শুরু হতে পারে?
-
২০২৮ সালে আংশিক এবং ২০৩০ সালে পূর্ণ পরিষেবা শুরু হতে পারে।
-
-
স্টেশনগুলিতে কী ধরনের সুবিধা থাকবে?
-
স্টেশনগুলোতে থাকবে এয়ারপোর্টের মতো সুযোগ, যেমন বিজনেস লাউঞ্জ ও খুচরো বাজার।
-
-
এই প্রকল্পে কোন প্রযুক্তি ব্যবহার করা হয়েছে?
-
Full Span Launching Method (FSLM), Span-by-Span (SBS), ও দেশীয় নির্মাণ সরঞ্জাম ব্যবহৃত হয়েছে।
-