স্বল্প জায়গা, সীমিত পুঁজি, কিন্তু আয় লক্ষ টাকারও বেশি—শুনতে অবিশ্বাস্য হলেও বাস্তবে সম্ভব হচ্ছে মাশরুম চাষের মাধ্যমে। দেশের নানা প্রান্তে তরুণ-তরুণীরা এখন নতুন ব্যবসার খোঁজে ঝুঁকছেন এই দিকেই। কারণ মাশরুম এখন শুধু পুষ্টিকর খাবার নয়, এটি এক লাভজনক কৃষিভিত্তিক উদ্যোগও বটে। একজন উদ্যোক্তা ১৫x১৫ ফুট ঘরেই শুরু করেছিলেন মাশরুম চাষ। প্রাথমিকভাবে ৫০০ ব্যাগ স্পন ও কম্পোস্ট ব্যবহার করে মাত্র দুই মাসেই উৎপাদন করেন প্রায় ১,০০০ কেজি মাশরুম। এই চাষে মোট খরচ পড়েছিল ৪৫,০০০, অথচ আয় দাঁড়ায় ২.৫০ লক্ষ—প্রতি কেজির বিক্রয়মূল্য ছিল প্রায় ২৫০।
এই সাফল্যের পর, তিনটি নিয়ন্ত্রিত পরিবেশের রুমে সম্প্রসারণ ঘটিয়ে বার্ষিক উৎপাদন নিয়ে যাওয়া হয়েছে ৪০,০০০ কেজিরও বেশি। বর্তমানে মাসিক আয় পৌঁছেছে ৫ লক্ষ পর্যন্ত। শীতকালে উৎপাদন বেশি হলেও বাজারদর পড়ে যায় ১০০ প্রতি কেজি, অন্যদিকে গরমকালে সেই দাম উঠে দাঁড়ায় ৪৫০ পর্যন্ত। গড় দাম হিসাব করলে বছরে প্রতি কেজি মাশরুম বিক্রি হচ্ছে ১৫০ দরে। বিশেষজ্ঞদের মতে, ঠান্ডা পরিবেশ বজায় রাখতে পারলে এবং নিয়মিত পরিচর্যার মাধ্যমে মান নিয়ন্ত্রণ করা গেলে মাশরুম চাষ অত্যন্ত লাভজনক হতে পারে। কম জায়গাতেও অধিক উৎপাদন সম্ভব বলেই অনেকেই আজ এই চাষের দিকে আকৃষ্ট হচ্ছেন। ভারতে মাশরুমের বাজারও ক্রমে বাড়ছে। ২০২৩ সালে এই বাজারের আকার ছিল প্রায় ২৫৮.৬ মিলিয়ন ডলার, যা ২০৩২ সালে গিয়ে পৌঁছাতে পারে প্রায় ৪৬৬.৮ মিলিয়ন ডলারে। ফলে শুধুমাত্র আয়ের সম্ভাবনাই নয়, ভবিষ্যতের চাহিদাও এখানে যথেষ্ট উজ্জ্বল।
প্রশ্নোত্তর (FAQ)
১. কীভাবে বেশি উৎপাদন ছাড়াই স্বল্প বিনিয়য়ে লাভ করা যায়?
কম স্পেসে নিয়ন্ত্রিত পরিবেশ ও গুণমান বজায় রেখে উৎপাদন করলে দ্রুত ফল পাওয়া সম্ভব।
২. গরম ও শীতকালে মাশরুমের মূল্য পার্থক্য কেন এত বেশি?
শীতে উৎপাদন বেশি হয়, ফলে সরবরাহ বেড়ে গিয়ে দাম কমে যায়; গরমে উৎপাদন কম হলেও চাহিদা থাকে একই, তাই দাম বাড়ে।
৩. একটি ৫০০ স্কোয়ার ফুট রুমে কত কেজি মাশরুম উৎপাদন সম্ভব?
ঠিক মতো পরিচর্যা করলে প্রতি রুমে বার্ষিক কয়েক হাজার কেজি পর্যন্ত উৎপাদন সম্ভব।
৪. মাশরুম চাষ বাড়াতে ঠান্ডা রুমের গুরুত্ব কী?
ঠান্ডা পরিবেশ মাশরুমের বৃদ্ধির জন্য অপরিহার্য, তাই কন্ট্রোলড ক্লাইমেট রুমই সফলতার চাবিকাঠি।
৫. ভবিষ্যতে বাজারে চাহিদা বৃদ্ধির সুযোগ কী?
খাবারে সচেতনতা বাড়ার ফলে প্রোটিনসমৃদ্ধ মাশরুমের চাহিদাও ক্রমাগত বাড়ছে, যা ব্যবসার সম্প্রসারণে সহায়ক।