উত্তরের পাহাড়ি রাজ্য সিকিমে রেল সংযোগ দীর্ঘদিনের দাবি। এবার সেই স্বপ্ন বাস্তবে পরিণত হওয়ার পথে। ভারতীয় রেলওয়ে নতুন করে একটি রেল প্রকল্পের সম্ভাব্য রূপরেখা চূড়ান্ত করতে উদ্যোগ নিয়েছে, যা ভবিষ্যতে সিকিম থেকে সরাসরি নেপাল সীমান্ত পর্যন্ত যাত্রা সহজতর করতে পারে।
সম্প্রতি রেল মন্ত্রক মেলি থেকে ডেনটাম পর্যন্ত একটি সম্ভাব্য রেলপথের জন্য ‘ফাইনাল লোকেশন সার্ভে’ (FLS) অনুমোদন করেছে। এই রেলপথটি জোরথাং ও লেগশিপ হয়ে যাবে ডেনটামে, যা ভারত-নেপাল সীমান্তের কাছে চিয়াবাঞ্জিয়াং-এর আশেপাশে অবস্থিত। সার্ভে-র কাজ করবে উত্তর-পূর্ব সীমান্ত রেল, যার জন্য ২.২৫ কোটি টাকা বাজেট ধার্য করা হয়েছে।
প্রস্তাবিত রেলপথটি হবে প্রায় ৭৫ কিমি দীর্ঘ। এটি শুধু সিকিমের প্রত্যন্ত অঞ্চলকেই জাতীয় রেলপথের সঙ্গে যুক্ত করবে না, বরং অঞ্চলটির পর্যটন, ব্যবসা ও কর্মসংস্থানের ক্ষেত্রেও বড়সড় ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে বলে মনে করা হচ্ছে। বিশেষ করে পশ্চিম ও দক্ষিণ সিকিমের মতো তুলনামূলকভাবে পশ্চাদপদ এলাকাগুলির আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের দিকে এই প্রকল্প বড় ভূমিকা নিতে পারে।
এই রেলপথটি আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ রেল প্রকল্প— শিবোক-রংপো রেলপথের সম্প্রসারিত রূপ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। শিবোক-রংপো প্রকল্প ২০২৭ সালের মধ্যে চালু হওয়ার কথা। এই নতুন রেলপথ চালু হলে মেলি হয়ে গোটা অঞ্চল আরও সুসংহতভাবে রেলনেটওয়ার্কে যুক্ত হবে।
গ্যালশিং, ডেনটাম-সহ বিভিন্ন পাহাড়ি শহরে এই প্রকল্পের ফলে রেল পরিষেবা পৌঁছনোর সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে সিকিমকে আরও আকর্ষণীয় করে তুলবে এই রেলপথ। ইতিমধ্যে সার্ভে কাজের জন্য টেন্ডার আহ্বান করার প্রস্তুতি শুরু হয়েছে বলেও সূত্রের খবর।
প্রশ্নোত্তর (FAQ):
১. এই নতুন রেলপথ কোথা থেকে কোথা পর্যন্ত তৈরি হওয়ার কথা?
→ মেলি থেকে ডেনটাম পর্যন্ত প্রায় ৭৫ কিমি দীর্ঘ রেলপথ নির্মাণের পরিকল্পনা হয়েছে, যা জোরথাং ও লেগশিপ হয়ে যাবে।
২. এই রেলপথ কেন গুরুত্বপূর্ণ?
→ এটি ভারত-নেপাল সীমান্তবর্তী অঞ্চলে সংযোগ বাড়াবে এবং সিকিমের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে সাহায্য করবে।
৩. এই রেলপথ কবে নাগাদ তৈরি হতে পারে?
→ এখনই নির্মাণের কাজ শুরু হয়নি, প্রথম ধাপে ‘ফাইনাল লোকেশন সার্ভে’ হচ্ছে। সার্ভে শেষ হলে নির্মাণের পরিকল্পনা শুরু হবে।
৪. কত টাকা খরচে এই সার্ভে হবে?
→ প্রায় ২.২৫ কোটি টাকার বাজেটে এই সার্ভে করবে উত্তর-পূর্ব সীমান্ত রেল।
৫. এই প্রকল্পের ফলে কাদের উপকার হবে?
→ পশ্চিম ও দক্ষিণ সিকিমের সাধারণ মানুষ, পর্যটক, ব্যবসায়ী ও স্থানীয় যুবকদের জন্য এটি লাভজনক হবে।