বিদ্যুৎ মিটারের পুরনো ব্যবস্থাকে ছাপিয়ে এবার রাজ্যজুড়ে চালু হচ্ছে ‘স্মার্ট মিটার’। কিন্তু এই প্রযুক্তিগত রূপান্তরের পথে দেখা দিচ্ছে নতুন কিছু জটিলতা। শহরের তুলনায় গ্রামীণ এলাকায় এই মিটার ঘিরে তৈরি হয়েছে বিভ্রান্তি ও বিরক্তি।২০২১ সালের জুলাই মাস থেকেই পশ্চিমবঙ্গে স্মার্ট মিটার বসানোর কাজ শুরু হয়েছিল। এর বহু পরে ২০২২ সালে কেন্দ্রীয় সরকার ‘রিভ্যাম্পড ডিস্ট্রিবিউশন সেক্টর স্কিম’ (RDSS) প্রকল্পের মাধ্যমে গোটা দেশে প্রায় ২৬ কোটি প্রথাগত মিটার বদলে স্মার্ট মিটার বসানোর পরিকল্পনা নেয়। নতুন এই মিটার একাধারে বিদ্যুৎ বণ্টন ব্যবস্থাকে আরও উন্নত ও আধুনিক করে তুলবে বলে দাবি করা হচ্ছে।
এই স্মার্ট মিটারগুলি এক ধরনের ডিজিটাল যন্ত্র, যা রিয়েল-টাইমে বিদ্যুৎ ব্যবহার মাপতে পারে এবং সেই তথ্য সরাসরি বিদ্যুৎ সংস্থার সার্ভারে পাঠিয়ে দেয়। ফলে আর আলাদা করে লোক পাঠিয়ে মিটার রিডিং নেওয়ার প্রয়োজন পড়ে না। সবচেয়ে বড় পরিবর্তন— এটি সম্পূর্ণ প্রিপেইড সিস্টেমে চলে। অর্থাৎ, মোবাইল রিচার্জের মতোই আগে টাকা রিচার্জ করতে হবে, তার পর বিদ্যুৎ ব্যবহার করা যাবে।
তবে ঠিক এখানেই তৈরি হয়েছে ভোগান্তির মূল জায়গা। রাজ্যের বহু গ্রামীণ এলাকায় গ্রাহকরা এখনও এই নতুন পদ্ধতির সঙ্গে মানিয়ে নিতে পারেননি। অনেকেই বুঝতে পারছেন না কবে বিদ্যুৎ শেষ হয়ে যাবে বা কীভাবে রিচার্জ করতে হবে। কোথাও কোথাও অভিযোগ উঠেছে, আগে যে বিল আসত, তার থেকে বেশি পরিমাণ অর্থ রিচার্জ করতে হচ্ছে। ফলে বিভিন্ন জেলায় স্মার্ট মিটার বিরোধী বিক্ষোভও দেখা গিয়েছে।তবে বিদ্যুৎ দফতরের মতে, এই মিটার বিলিং-এ অনেক বেশি স্বচ্ছতা আনবে। রিয়েল-টাইম তথ্য পাওয়া যাবে বলেই ভুল বিলের আশঙ্কা কমবে এবং খরচ সম্পর্কে গ্রাহকও সচেতন হবেন। মানুষের বিভ্রান্তি দূর করতে এখন প্রচার বাড়ানো ও সচেতনতা কর্মসূচির উপর জোর দেওয়া হচ্ছে।
প্রশ্নোত্তর:
১. স্মার্ট মিটার কীভাবে কাজ করে?
→ এটি ডিজিটাল মিটার, যা বিদ্যুৎ ব্যবহারের তথ্য সরাসরি সার্ভারে পাঠায়।
২. প্রিপেইড মিটার মানে কী?
→ এটি এমন এক ব্যবস্থা, যেখানে গ্রাহককে আগে টাকা রিচার্জ করে তারপর বিদ্যুৎ ব্যবহার করতে হয়।
৩. স্মার্ট মিটারের সুবিধা কী কী?
→ স্বচ্ছ বিলিং, রিয়েল-টাইম মনিটরিং, মানুষের খরচের উপর সচেতনতা বাড়ানো ইত্যাদি।
৪. স্মার্ট মিটার নিয়ে কেন অসন্তোষ তৈরি হয়েছে?
→ গ্রামাঞ্চলে অনেকেই নতুন সিস্টেম বুঝতে পারছেন না এবং বিল নিয়ে বিভ্রান্তি তৈরি হয়েছে।
৫. এই পরিবর্তনের মূল লক্ষ্য কী?
→ দেশের বিদ্যুৎ বণ্টন ব্যবস্থাকে আধুনিক ও দক্ষ করে তোলা।