মুম্বাই–আহমেদাবাদ বুলেট ট্রেন প্রকল্পে এল আশার আলো। ২১ কিমি দীর্ঘ BKC–Shilphata সুড়ঙ্গের ২.৭ কিমি অংশ সফলভাবে সম্পন্ন হয়েছে, যা এই দেশের প্রথম উচ্চগতির ট্রেন প্রকল্পের অন্যতম মাইলস্টোন বলে মনে করছেন রেল কর্তৃপক্ষ। এই সুড়ঙ্গের নির্মাণে ব্যবহার করা হচ্ছে দুই ধরনের প্রযুক্তি—NATM (New Austrian Tunneling Method) এবং TBM (Tunnel Boring Machine)। NATM পদ্ধতিতে এখনও পর্যন্ত ৪.৩ কিমি অংশ খনন শেষ হয়েছে, যার মধ্যে Shilphata থেকে ১.৬২ কিমি ইতিমধ্যেই সফলভাবে সম্পন্ন।
এই প্রকল্প শুধু সুড়ঙ্গে আটকে নেই—এরই মধ্যে ১৬টি নদী-সেতু নির্মাণ সম্পূর্ণ হয়েছে এবং ৩০০ কিমি ভায়াডাক্ট বা উঁচু রেলপথের কাজ শেষ হয়েছে। সেতু ও ভায়াডাক্ট ছাড়াও ৩৯২ কিমি পিয়ার নির্মাণ ও ৪০৬ কিমি পিয়ার ফাউন্ডেশন সম্পন্ন হয়েছে। রেলপথ নির্মাণের ক্ষেত্রে অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ অগ্রগতির মধ্যে রয়েছে ৪৪,৬০০টির বেশি ট্র্যাক স্ল্যাব, ১,০০০টির বেশি ওভারহেড ইলেকট্রিক মাষ্ট (OHE Mast) এবং ৩.৬ লক্ষ শোর্য অবরোধ স্থাপন। এসবই প্রমাণ করে যে দেশের প্রথম বুলেট ট্রেন প্রকল্প এখন আর কাগজে-কলমে নয়, বাস্তবে রূপ নিচ্ছে।
প্রকল্পটির মোট ব্যয় ধরা হয়েছে ১.০৮ লক্ষ কোটি। এর মধ্যে কেন্দ্রীয় সরকার ১০,০০০ কোটি বরাদ্দ করেছে, Gujarat ও Maharashtra রাজ্য দিয়েছে ৫,০০০ কোটি করে। বাকি অর্থ এসেছে জাপানের থেকে স্বল্পসুদের ঋণের মাধ্যমে। এ যেন ভারতীয় রেল–ইতিহাসে প্রযুক্তি ও আন্তর্জাতিক সহযোগিতার এক যুগান্তকারী দৃষ্টান্ত। বিশেষজ্ঞদের মতে, সুড়ঙ্গ খননের এই সাফল্য প্রকল্প বাস্তবায়নে গতি আনবে। সব কিছু পরিকল্পনামাফিক চললে, আগামী কয়েক বছরের মধ্যেই দেশের প্রথম বুলেট ট্রেন ছুটবে মুম্বাই থেকে আহমেদাবাদ পর্যন্ত।
প্রশ্ন ও উত্তর (FAQ)
১. BKC–Shilphata সুড়ঙ্গের কতটা কাজ সম্পন্ন হয়েছে?
→ ২১ কিমি দীর্ঘ এই সুড়ঙ্গের মধ্যে ২.৭ কিমি কাজ সম্পূর্ণ হয়েছে।
২. এই সুড়ঙ্গ তৈরিতে কোন প্রযুক্তি ব্যবহার হচ্ছে?
→ TBM ও NATM পদ্ধতির মাধ্যমে সুড়ঙ্গ নির্মাণ করা হচ্ছে।
৩. নদী-সেতু ও ভায়াডাক্ট নির্মাণে কতটা অগ্রগতি হয়েছে?
→ ১৬টি নদী-সেতু এবং ৩০০ কিমি ভায়াডাক্ট নির্মাণ সম্পন্ন হয়েছে।
৪. রেলপথে কী পরিমাণ ট্র্যাক স্ল্যাব ও OHE মাষ্ট বসানো হয়েছে?
→ ৪৪,৬০০টির বেশি ট্র্যাক স্ল্যাব ও ১,০০০টির বেশি OHE মাষ্ট স্থাপন করা হয়েছে।
৫. প্রকল্পের মোট বাজেট কত এবং কোন উৎস থেকে অর্থ আসছে?
→ মোট বাজেট ১.০৮ লক্ষ কোটি; কেন্দ্র, রাজ্য ও জাপান সরকারের ঋণের মাধ্যমে অর্থায়ন হচ্ছে।