একবার টাকা বিনিয়োগ করলেই প্রতি মাসে হাতে আসবে নিশ্চিত আয়—সেই সুবিধাই দিচ্ছে সরকার অনুমোদিত পোস্ট অফিস মাসিক আয় প্রকল্প (POMIS)। বাজারের ঝুঁকি ছাড়াই নিশ্চিত রিটার্নের আশ্বাসে এই স্কিম দিন দিন জনপ্রিয় হয়ে উঠছে অবসরের পরিকল্পনা, সঞ্চয় অথবা পরিবারের ভবিষ্যৎ সুরক্ষিত রাখতে আগ্রহী মধ্যবিত্তদের মধ্যে।
কী এই পোস্ট অফিস মাসিক আয় প্রকল্প?
এই স্কিমের মূল বৈশিষ্ট্য হলো এককালীন টাকা বিনিয়োগ করে মাসে মাসে নির্দিষ্ট সুদের টাকা পাওয়া যায়। ১ এপ্রিল, ২০২৩ থেকে এই স্কিমে বার্ষিক সুদের হার ৭.৪% নির্ধারিত হয়েছে, যা স্থায়ী আমানতের তুলনায় অনেকটাই বেশি।
কত টাকা বিনিয়োগ করলে কত আয়?
-
এই প্রকল্পে সর্বনিম্ন ১,০০০ বিনিয়োগ করা যায়।
-
একক অ্যাকাউন্টে সর্বোচ্চ ৯ লক্ষ পর্যন্ত বিনিয়োগের সুযোগ রয়েছে। এতে মাসে প্রায় ৫,৫০০ রোজগার হয়।
-
যৌথ অ্যাকাউন্টে (সর্বোচ্চ ৩ জন প্রাপ্তবয়স্ক অথবা প্রাপ্তবয়স্ক অভিভাবক ও নাবালক) সর্বোচ্চ ১৫ লক্ষ পর্যন্ত রাখা যায়, যেখানে মাসিক আয় দাঁড়ায় প্রায় ৯,২৫০।
-
প্রকল্পের মেয়াদ ৫ বছর, অর্থাৎ পাঁচ বছর পর পুরো মূলধন ফেরত পাওয়া যাবে।
আগে টাকাই তুলতে চাইলে?
প্রথম বছরের মধ্যে কোনওভাবেই টাকা তোলা যাবে না।
-
১ থেকে ৩ বছরের মধ্যে তুললে মূলধনের ওপর ২% কাটা পড়বে।
-
৩ থেকে ৫ বছরের মধ্যে তুললে ১% কাটা পড়বে।
কাদের জন্য উপযুক্ত এই প্রকল্প?
এই স্কিম মূলত তাদের জন্য আদর্শ যাঁরা স্থিতিশীল, ঝুঁকিমুক্ত মাসিক রোজগারের পথ খুঁজছেন—বিশেষত অবসরপ্রাপ্ত ব্যক্তি, গৃহিণী, অথবা এমন কেউ যাঁর নিয়মিত আয়ের প্রয়োজন কিন্তু বাজারের ওঠানামা নিয়ে উদ্বিগ্ন।
প্রাথমিক সুবিধাসমূহ এক নজরে:
-
সরকার অনুমোদিত, নিরাপদ প্রকল্প
-
নির্দিষ্ট সময়ের জন্য গ্যারান্টিড রিটার্ন
-
ন্যূনতম ১,০০০ থেকে শুরু
-
যৌথ অ্যাকাউন্টের সুবিধা
-
নির্দিষ্ট মাসিক আয়ের নিশ্চয়তা
প্রায়শই জিজ্ঞাসিত প্রশ্ন (FAQs)
১. পোস্ট অফিস মাসিক আয় প্রকল্পে কে বিনিয়োগ করতে পারবেন?
ভারতের যেকোনো নাগরিক যিনি প্রাপ্তবয়স্ক, তিনিই এই স্কিমে অ্যাকাউন্ট খুলতে পারেন। নাবালকের পক্ষ থেকেও অভিভাবক বিনিয়োগ করতে পারেন।
২. এই প্রকল্পে NRI (বিদেশবাসী ভারতীয়) বিনিয়োগ করতে পারেন কি?
না, এই প্রকল্প শুধুমাত্র ভারতীয় নাগরিকদের জন্য উন্মুক্ত।
৩. স্কিমের মেয়াদ শেষে কি সুদ ছাড়াও মূলধন ফেরত দেওয়া হয়?
হ্যাঁ, ৫ বছর পরে পুরো আসল টাকা ফেরত দেওয়া হয়। মাঝে সুদ মাসে মাসে পাওয়া যায়।
৪. যদি কেউ মৃত্যুবরণ করেন, তাহলে বিনিয়োগের কী হবে?
মৃত্যুর ক্ষেত্রে নমিনি বা উত্তরাধিকারীর হাতে সম্পূর্ণ টাকার নিয়ন্ত্রণ যায়।
৫. এই প্রকল্পে কীভাবে টাকা জমা করা যায়?
নিকটবর্তী যেকোনো পোস্ট অফিসে গিয়ে অ্যাকাউন্ট খোলা যায়। বর্তমানে কিছু জায়গায় অনলাইন ব্যবস্থাও চালু হয়েছে।