রেলের ইতিহাসে নতুন অধ্যায় শুরু হতে চলেছে বাংলার মাটিতে। এবার রাজ্যের উত্তরপাড়াতেই তৈরি হবে বন্দে ভারত ও মেট্রো রেলের অত্যাধুনিক কোচ। ৯৯ বছরের জন্য ৪০ একর জমি লিজে নিয়ে বড় প্রকল্প শুরু করল টিটাগড় রেল সিস্টেমস লিমিটেড (TRSL)। শিল্পে নতুন দিশা দিতেই নেওয়া হয়েছে এই উদ্যোগ।
কী পরিকল্পনা নিচ্ছে টিটাগড় রেল?
উত্তরপাড়ার কোত্রঙ-ভদ্রকালী এলাকায় অবস্থিত TRSL-এর বর্তমান কারখানার পাশে আরও ৪০ একর জমি অধিগ্রহণ করা হয়েছে ১২৬ কোটি টাকার বিনিময়ে। এই জমি অধিগ্রহণের ফলে TRSL-এর মোট জমির পরিমাণ দাঁড়াল ৭৪ একর। লক্ষ্য একটাই—দেশীয় প্রযুক্তিতে রেল কোচ তৈরি ও টেস্টিংয়ের পূর্ণাঙ্গ ব্যবস্থা গড়ে তোলা। TRSL ইতিমধ্যেই ভারত হেভি ইলেকট্রিক্যালস লিমিটেড (BHEL)-এর সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে বন্দে ভারত স্লিপার কোচ তৈরির কাজ শুরু করেছে। আগামী কয়েক বছরে উত্তরপাড়া কারখানার উৎপাদন ক্ষমতা বার্ষিক ৩০০ থেকে বাড়িয়ে ৮৫০ কোচে নিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে।
কী কী থাকছে নতুন পরিকাঠামোয়?
নতুন কারখানায় তৈরি হবে উন্নত মানের টেস্টিং ও কমিশনিং জোন, যাতে বন্দে ভারত ও মেট্রোর কোচগুলিকে সঠিকভাবে যাচাই করে ছাড়া যায়। তৈরি হবে একটি পূর্ণাঙ্গ টেস্ট ট্র্যাক, যেখানে পরীক্ষামূলক ট্রায়াল চলবে প্রতিটি কোচের। এই প্রকল্পের আর্থিক মূল্য প্রায় ₹২৪,০০০ কোটি, যার মধ্যে রয়েছে ৩৫ বছরের রক্ষণাবেক্ষণের চুক্তিও। TRSL ইতিমধ্যেই ৮০টি বন্দে ভারত স্লিপার ট্রেন সেটের অর্ডার পেয়েছে। ২০২৬-এর মধ্যে প্রথম প্রোটোটাইপ বাজারে আসবে বলেই জানানো হয়েছে সংস্থার তরফে।
বাজারে TRSL-এর অবস্থা কেমন?
২০২৫ সালের মার্চ পর্যন্ত TRSL-এর হাতে ১১,২০০ কোটি টাকার অর্ডার রয়েছে। এর মধ্যে ৬২% যাত্রীবাহী কোচ ও বাকি ৩৮% মালবাহী ওয়াগনের বরাত। টিটাগড় রেলের এই সম্প্রসারণের ফলে কর্মসংস্থান বাড়ার সম্ভাবনাও প্রবল। রাজ্যের শিল্প পরিকাঠামোয় নতুন জোয়ার আনতে চলেছে এই প্রকল্প।
প্রশ্নোত্তর (FAQ)
১. কোথায় তৈরি হবে নতুন বন্দে ভারত ও মেট্রো কোচ?
উত্তরপাড়ার কোত্রঙ-ভদ্রকালী এলাকায়, টিটাগড় রেল সিস্টেমস-এর সম্প্রসারিত কারখানায়।
২. কত টাকার বিনিময়ে নেওয়া হয়েছে জমি?
TRSL ৯৯ বছরের জন্য ১২৬ কোটিতে ৪০ একর জমি লিজে নিয়েছে।
৩. কখন আসবে প্রথম বন্দে ভারত স্লিপার ট্রেন?
২০২৬ সালের মধ্যে প্রথম প্রোটোটাইপ আসার কথা রয়েছে।
৪. কতগুলো কোচ তৈরি হবে প্রতিবছর?
২০২৮ সালের মধ্যে বছরে ৮৫০টি কোচ তৈরি করার লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে।
৫. এই প্রকল্পের সম্ভাব্য লাভ কী রাজ্যের জন্য?
শিল্প উন্নয়ন, কর্মসংস্থান বৃদ্ধি এবং রেলের আত্মনির্ভরতা বৃদ্ধিতে এই প্রকল্প গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নেবে।