নিম্নবিত্ত পরিবারগুলির জন্য আন্ধ্রপ্রদেশ সরকারের এক যুগান্তকারী পদক্ষেপ—এক বছরে তিনটি গ্যাস সিলিন্ডার বিনামূল্যে! ‘দীপম-২’ নামের এই প্রকল্পে শুধু বিনামূল্যে রান্নার গ্যাসই নয়, বরং সরাসরি ব্যাংকে ভর্তুকি পাঠানোর মাধ্যমে আর্থিক লেনদেনে স্বচ্ছতা আনার পরিকল্পনাও নেওয়া হয়েছে। ২০২৪ সালের ৩১ অক্টোবর থেকে কার্যকর হওয়া এই প্রকল্পে আর্থিকভাবে দুর্বল (BPL) পরিবারদের প্রতিটি চার মাসে একটি করে মোট তিনটি গ্যাস সিলিন্ডার সরবরাহ করা হবে। ডিসেম্বর-মার্চ, এপ্রিল-জুলাই এবং আগস্ট-নভেম্বর—এই তিনটি পর্যায়ে সিলিন্ডার পাওয়া যাবে।
কারা এই সুবিধা পাবেন?
এই প্রকল্পের আওতায় আসতে হলে পরিবারটির একটি সক্রিয় এলপিজি সংযোগ, আধার সংযুক্ত ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট, এবং রেশন কার্ড থাকা আবশ্যক, যা অবশ্যই আন্ধ্রপ্রদেশের স্থায়ী ঠিকানার সঙ্গে যুক্ত থাকতে হবে। ২০২৪-২৫ অর্থবর্ষের জন্য সরকার মোট ২,৬৮৪.৭৫ কোটি বরাদ্দ করেছে এই প্রকল্পের জন্য। যার মধ্যে প্রাথমিক ধাপে ৮৯৪.৯২ কোটি খরচ করে অক্টোবর থেকেই সিলিন্ডার সরবরাহ শুরু হয়েছে।
DBT-এর পাইলট চালু
আগে গ্যাস সরবরাহকারীরা সরাসরি ভর্তুকি পেতেন সরকারের কাছ থেকে। তবে ২০২৫ সালের জুলাই মাস থেকে NTR এবং গুন্টুর জেলার মোট ছয়টি ডিস্ট্রিবিউটরের মাধ্যমে শুরু হয়েছে ডাইরেক্ট বেনিফিট ট্রান্সফার (DBT) পদ্ধতির পাইলট প্রকল্প। এখন ভর্তুকির টাকা গ্রাহকদের ব্যাংক অ্যাকাউন্টে পাঠিয়ে, তাদের নিজে থেকেই সেই টাকা দিয়ে গ্যাস বুক করতে বলা হচ্ছে। এই DBT পদ্ধতির উদ্দেশ্য—পুরো প্রক্রিয়াকে স্বচ্ছ এবং ডিজিটাল করা। তবে নতুন ব্যবস্থায় কিছু প্রযুক্তিগত সমস্যা এবং তথ্যগত অসঙ্গতির কারণে ৫৫ লক্ষ গ্রাহকের মধ্যে কিছুজনের ভর্তুকি আটকে আছে।
কী কী সমস্যা হচ্ছে?
অনেক গ্রাহকের আধার, রেশন কার্ড বা KYC সংক্রান্ত তথ্য এখনও সম্পূর্ণ আপডেট নয়। আবার কারও কারও গ্যাস সংযোগ নিষ্ক্রিয়, কেউ কেউ আয়সীমা ছাড়িয়ে গেছেন—এই সমস্ত কারণে অনেকেই এখনও এই সুবিধা পাচ্ছেন না। বর্তমানে প্রায় ১ কোটি উপভোক্তা এই প্রকল্পের অন্তর্ভুক্ত। সফল হলে DBT মডেলটি রাজ্যের বাকি জেলাতেও চালু করা হবে।
প্রশ্নোত্তর:
এই প্রকল্পে কতগুলি গ্যাস সিলিন্ডার বিনামূল্যে পাওয়া যায়?
বছরে তিনটি গ্যাস সিলিন্ডার বিনামূল্যে দেওয়া হয়, প্রতি চার মাস অন্তর একটি করে।
কে এই সুবিধা পেতে পারেন?
যাঁরা BPL তালিকাভুক্ত, একটি সচল LPG সংযোগ রয়েছে, আধার ও রেশন কার্ড সংযুক্ত আছে এবং ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট সক্রিয় আছে, তাঁরাই এই প্রকল্পে অন্তর্ভুক্ত হতে পারবেন।
DBT কীভাবে কাজ করে?
DBT-এর মাধ্যমে ভর্তুকির টাকা সরাসরি গ্রাহকের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে পাঠানো হয়, পরে সেই টাকা দিয়েই গ্রাহক নিজের গ্যাস বুক করেন।
DBT কোথায় চালু হয়েছে?
বর্তমানে শুধু NTR ও গুন্টুর জেলায় পরীক্ষামূলকভাবে চালু হয়েছে।
ভর্তুকি না পেলে কী করবেন?
e-KYC, আধার বা রেশন কার্ড সংযুক্ত আছে কিনা, LPG সংযোগ সচল কিনা—এইসব তথ্য যাচাই করে সংশ্লিষ্ট LPG ডিস্ট্রিবিউটরের সঙ্গে যোগাযোগ করতে হবে।