Arpita Chakroborty: স্টেজ শো করতে গিয়ে হেনস্থার শিকার ‘সারেগামাপা’ খ্যাত অর্পিতা চক্রবর্তী
গায়িকা বা অভিনেত্রীরা ইদানিং প্রায়ই শো করতে গিয়ে হ্যারাসমেন্টের শিকার হচ্ছেন। এর আগে গায়িকা ইমন চক্রবর্তী (Iman Chakraborty) এই ধরনের পরিস্থিতির সম্মুখীন হয়েছিলেন। তিনি প্রতিবাদ করেছিলেন। একবার ফেসবুক লাইভে এসে প্রতিবাদ জানালেন লোকসঙ্গীত শিল্পী অর্পিতা চক্রবর্তী (Arpita Chakraborty)।
কয়েকদিন আগে পূর্ব মেদিনীপুরের মারিশদা জামুয়া শঙ্করপুরে লোকগানের অনুষ্ঠান করতে গিয়েছিলেন অর্পিতা। এই অনুষ্ঠানের অর্গানাইজার সোমাশ্রেয়া (Shomashreya)-র মাধ্যমে অনুষ্ঠান করতে গিয়েছিলেন অর্পিতা। সোমাশ্রেয়া অর্পিতার একজন পরিচিত অর্গানাইজারের মাধ্যমে তাঁর সাথে যোগাযোগ করেছিলেন। সোমাশ্রেয়ার উপর ভরসা করে অনুষ্ঠান করতে গিয়েছিলেন অর্পিতা। কিন্তু সেখানে তাঁকে রীতিমত হেনস্থা করা হয়। 2014 সাল থেকে স্টেজ শো করেন অর্পিতা। জীবনে এই প্রথমবার এত খারাপ পরিস্থিতির সম্মুখীন হতে হল তাঁকে।
মারিশদার ‘মা বিপত্তারিণী’ রাইস মিলে শো করতে গিয়েছিলেন অর্পিতা। সেখানে দেড় ঘন্টার স্থানে টানা দুই ঘন্টা গান গেয়ে দর্শকদের মনোরঞ্জন করেছিলেন অর্পিতা। সমগ্র অনুষ্ঠানটি আশীর্বাদ স্টুডিও নামক একটি ফেসবুক পেজ থেকে লাইভ টেলিকাস্ট হয়েছে। অর্পিতার অনুষ্ঠানে কমিটির সদস্যরা ও দর্শকবৃন্দ যথেষ্ট খুশি হয়েছিলেন। অনুষ্ঠান শেষ করার আধ ঘণ্টা আগে থেকে অর্পিতা ঘোষণা করেছিলেন, তাঁরা ধীরে ধীরে অনুষ্ঠানের শেষ পর্বের দিকে এগোচ্ছেন, কারও যদি কিছু গানের অনুরোধ থাকে, তাহলে তা অবিলম্বে তাঁকে জানাতে। অনেকেই তাঁদের পছন্দের গানের অনুরোধ জানিয়েছিলেন ও অর্পিতাও সবকটি গান গেয়েছিলেন। কিন্তু সোমাশ্রেয়া স্টেজের কর্ণারে বসে অর্পিতাকে ইশারা করে আরও একটি গান গেয়ে অনুষ্ঠান শেষ করতে বলেন। কিন্তু জনতার অনুরোধে বাড়তি সময় গান গেয়েছেন অর্পিতা। এরপর যখন তিনি দর্শকদের ধন্যবাদ জানিয়ে অনুষ্ঠান শেষ করার কথা বলে স্টেজ থেকে নামার মুখে একজন ব্যক্তি এসে আরও একটি গান গাওয়ার অনুরোধ করেন অর্পিতাকে। অর্পিতা জানেন, এটি খুব স্বাভাবিক একটি অনুরোধ। এটি তাঁদের সম্মান বলেও মনে করেন তিনি। এই ধরনের পরিস্থিতি সাধারণতঃ অর্গানাইজাররাই সামাল দেন।
কিন্তু সোমাশ্রেয়া অর্পিতাকে কড়াভাবে বলেন, তিনি আর তিন মিনিট না গাইতে পারার জন্য সোমাশ্রেয়ার পেমেন্ট আটকে গেছে। এরপর সোমাশ্রেয়া দর্শকদের বলেন, অর্পিতার গাড়ি আটকে দিতে। এমনকি কমিটির মেম্বারদের কাছেও অর্পিতার নামে খারাপ কথা বলে তাঁদের বিচলিত করতে থাকেন সোমাশ্রেয়া। এমনকি তিনি অর্পিতার গাড়ির গেট খুলে তাঁর কাছে অনুষ্ঠান থেকে বেরোনোর জন্য দশ হাজার টাকা দাবি করেন। সোমাশ্রেয়া বলেন, তাঁর কাছে মিউজিশিয়ানদের পেমেন্ট করার টাকা নেই, ফলে অর্পিতাকেই দশ হাজার টাকা দিতে হবে। অর্পিতা গাড়িতে একা বসে ছিলেন। তাঁর কাছে মোবাইল ছিল না। ফলে তিনি কারও সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারছিলেন না। তাঁর সহশিল্পী ছিলেন রোহিত (Rohit)। তিনি পারিজাত (Parijat) ও পৌষালি (Poushali)-কে ফোন করে সাহায্য চান। এরপর শিল্পী সংগঠন বিএসপিজি ও ‘সুরতান’-এর রাজু (Raju) নামে এক ব্যক্তির সহায়তায় মারিশদা থানার পুলিশ অর্পিতা ও তাঁর ব্যান্ডকে উদ্ধার করে। অর্পিতা এই ধরনের ঘটনায় অত্যন্ত হতাশ। এমনকি তাঁদের খাবারের বন্দোবস্ত ছিল না সেখানে। সোমাশ্রেয়া নিজের গাড়ি দিয়ে অর্পিতার গাড়ির সামনে ব্লক করে দিয়েছিলেন। তবে মারিশদা থানার পুলিশ এসে রাইস মিলের দরজা খোলার পর রেহাই পান অর্পিতারা। রাত আড়াইটের সময় তাঁদের ভাগ্যে খাবার জোটে। অর্পিতার ঘটনা শোনার পর নেটিজেনদের একাংশ এই ধরনের পরিস্থিতির বিরুদ্ধে সরব হয়েছেন।