কেন্দ্রীয় কর্মচারীদের মুখে হাসি ফোটাতে চলেছে ৮তম বেতন কমিশন। বেতন কাঠামোয় বড় পরিবর্তন এনে ২০২৬ বা ২০২৭ সাল নাগাদ এই কমিশনের সুপারিশ কার্যকর হতে পারে বলে এক বিশ্লেষণ থেকে জানা গিয়েছে। Kotak Institutional Equities-এর রিপোর্ট অনুযায়ী, নতুন fitment factor ১.৮ হলে ন্যূনতম বেসিক বেতন ১৮,০০০ থেকে বেড়ে হতে পারে ৩০,০০০–৩২,০০০। এই হিসেব অনুযায়ী প্রকৃত বেতনবৃদ্ধি হবে প্রায় ১৩ শতাংশ।
কাদের উপর প্রভাব পড়বে এই পরিবর্তনের?
এই নতুন কমিশনের সুবিধা সরাসরি ভোগ করবেন প্রায় ৩.৩ মিলিয়ন কেন্দ্রীয় কর্মচারী, যার অধিকাংশই Grade C স্তরের কর্মী। সরকারিভাবে কর্মরত মোট কর্মীদের মধ্যে প্রায় ৯০ শতাংশই এই শ্রেণির অন্তর্গত, ফলে বৃহৎ অংশের জন্য এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হতে চলেছে।
আর্থিক বোঝা ও অর্থনীতিতে সম্ভাব্য প্রভাব
কমিশন কার্যকর হলে সরকারের অতিরিক্ত ব্যয় হতে পারে ২.৪ থেকে ৩.২ লক্ষ কোটি টাকা পর্যন্ত, যা দেশের মোট GDP‑র প্রায় ০.৬–০.৮ শতাংশ। তবে এই বেতনবৃদ্ধির ফলে কর্মচারীদের হাতে অতিরিক্ত নগদ অর্থ আসবে, যার পরিমাণ আনুমানিক ১–১.৫ লক্ষ কোটি টাকার মতো। এই অতিরিক্ত সঞ্চয় এবং ব্যয়বৃদ্ধি গ্রাহক চাহিদা বাড়াতে সাহায্য করতে পারে, বিশেষ করে অটোমোবাইল ও হোয়াইট গুডসের মতো ক্ষেত্রে। পূর্ববর্তী কমিশনগুলিতেও একই রকম প্রভাব লক্ষ্য করা গিয়েছিল।
পাঁচটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন ও উত্তর
১. Fitment Factor বলতে কী বোঝায়?
এটি এমন একটি গুণনীয়ক যা বর্তমান বেসিক বেতনের উপর ভিত্তি করে নতুন বেসিক নির্ধারণে সাহায্য করে। যেমন, ১.৮ fitment factor মানে বেতন প্রায় ৮০ শতাংশ বেড়ে যাবে।
২. ৮তম পে কমিশন কবে কার্যকর হতে পারে?
বর্তমান পূর্বাভাস অনুযায়ী, এটি ২০২৬ সালের শেষ অথবা ২০২৭ সালের শুরু থেকে কার্যকর হতে পারে।
৩. কারা সবথেকে বেশি লাভবান হবেন এই কমিশনের ফলে?
Grade C স্তরের কর্মচারীরা, যারা কেন্দ্রীয় কর্মচারীদের বড় অংশ, এই বেতনবৃদ্ধি থেকে সবচেয়ে বেশি উপকৃত হবেন।
৪. সরকারের আর্থিক পরিমাণিক প্রভাব কতটা হতে পারে?
কমিশনের প্রস্তাব কার্যকর হলে সরকারের উপর অতিরিক্ত ব্যয় আসবে ২.৪–৩.২ লক্ষ কোটি টাকা।
৫. এই সিদ্ধান্ত কি বাজারে প্রভাব ফেলবে?
হ্যাঁ, কর্মচারীদের ব্যয়ক্ষমতা বাড়ায় বাজারে সাময়িকভাবে পণ্যের চাহিদা বৃদ্ধি পেতে পারে, বিশেষত ভোক্তা পণ্যের ক্ষেত্রে।
৮তম পে কমিশন কার্যকর হলে তা দেশের লক্ষ লক্ষ কেন্দ্রীয় কর্মচারীর জন্য যেমন স্বস্তিদায়ক হবে, তেমনই সরকারের ব্যয়ভারও বাড়াবে। যদিও প্রকৃত বেতনবৃদ্ধি তুলনামূলকভাবে সীমিত, তবু সাময়িকভাবে ভোগ্যপণ্যের বাজারে ইতিবাচক প্রভাব পড়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এখন দেখার, সরকার কত দ্রুত এই কমিশনের রূপরেখা প্রকাশ করে এবং বাস্তবায়নের দিকে এগোয়।