দেশজুড়ে রেল পরিষেবায় যুক্ত হল আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স (AI)। সাতটি বড় রেল স্টেশনে চালু হল অত্যাধুনিক ফেসিয়াল রিকগনিশন প্রযুক্তি। যাত্রী সুরক্ষা নিশ্চিত করতে এবং অপরাধীদের দ্রুত শনাক্ত করতে এই প্রযুক্তি ব্যবহারের সিদ্ধান্ত নিয়েছে রেল মন্ত্রক। এই বিশেষ নজরদারি ব্যবস্থার আওতায় প্রথম পর্যায়ে যেসব স্টেশনগুলোতে এই প্রযুক্তি চালু করা হয়েছে, সেগুলি হল—মুম্বাই CST, নিউ দিল্লি, হাওড়া, চেন্নাই, বেঙ্গালুরু, আহমেদাবাদ এবং পুণে। ওই স্টেশনগুলিতে প্রতিদিন লক্ষাধিক যাত্রীর যাতায়াত হয়। তাই এই প্রযুক্তি সঠিকভাবে কাজ করলে যাত্রী নিরাপত্তার এক নতুন দিগন্ত খুলে যেতে পারে বলে মনে করছে রেল কর্তৃপক্ষ।
মূলত National Database on Sexual Offenders (NDSO)-র সঙ্গে এই ফেসিয়াল রিকগনিশন সিস্টেম সংযুক্ত করা হয়েছে। NDSO-তে ২০ লক্ষেরও বেশি অপরাধীর মুখাবয়ব ও তথ্য সংরক্ষিত রয়েছে। স্টেশনে বসানো উচ্চক্ষমতাসম্পন্ন ক্যামেরাগুলির সাহায্যে যাত্রীদের মুখ স্ক্যান করে সন্দেহভাজনদের সঙ্গে মিল খোঁজা হবে। যদি মিল পাওয়া যায়, সঙ্গে সঙ্গে কর্তৃপক্ষকে সতর্ক করে দেবে সিস্টেম। রেল সূত্রে খবর, এই প্রযুক্তির মাধ্যমে নারীদের উপর নির্যাতন ও শিশু পাচার রোধে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া সম্ভব হবে। পাশাপাশি সন্ত্রাসবাদী কার্যকলাপেও নজরদারি জোরদার করা যাবে।
বর্তমানে দেশজুড়ে ৪৯৯টি স্টেশনে ২৪ ঘণ্টার Integrated Emergency Response Management System চালু রয়েছে। কনকণ রেলওয়ে অঞ্চলে ইতিমধ্যেই ৬৭টি স্টেশনে ৭৪০টি CCTV বসানো হয়েছে। ফলে ফেসিয়াল রিকগনিশনের সঙ্গে মিলিয়ে গোটা নজরদারি ব্যবস্থাকে আরও শক্তিশালী করা হচ্ছে। সরকার জানিয়েছে, প্রযুক্তি প্রয়োগের সময় গোপনীয়তা রক্ষা ও তথ্যের সুরক্ষার দিকেও গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। AI সিস্টেমে যাত্রীর তথ্য গোপন রাখা হবে এবং কেবলমাত্র সন্দেহভাজনের ক্ষেত্রেই সেটি ব্যবহৃত হবে। বিশেষজ্ঞদের মতে, সঠিক প্রয়োগ ও নিয়ম মেনে এই ব্যবস্থা চালালে ভবিষ্যতে আরও স্টেশনে এটি চালু করা যেতে পারে। এতে যেমন অপরাধ রোধে সহযোগিতা মিলবে, তেমনই সাধারণ যাত্রীদের মধ্যে নিরাপত্তা নিয়ে আস্থা বাড়বে।
পাঠকের সাধারণ প্রশ্নোত্তর (FAQ)
১. কোন কোন স্টেশনে ফেসিয়াল রিকগনিশন প্রযুক্তি চালু হয়েছে?
মুম্বাই CST, নিউ দিল্লি, হাওড়া, বেঙ্গালুরু, চেন্নাই, আহমেদাবাদ এবং পুণে স্টেশনে এই প্রযুক্তি ব্যবহার শুরু হয়েছে।
২. এই প্রযুক্তির মূল উদ্দেশ্য কী?
NDSO-র অপরাধীদের সঙ্গে যাত্রীদের মুখ মিলিয়ে দ্রুত শনাক্ত করা এবং অপরাধ রোধ করাই এর প্রধান লক্ষ্য।
৩. কতজন অপরাধীর তথ্য রয়েছে এই সিস্টেমে?
২০ লক্ষেরও বেশি যৌন অপরাধীর তথ্য রয়েছে NDSO ডেটাবেসে।
৪. সাধারণ যাত্রীর তথ্য কি সুরক্ষিত থাকবে?
হ্যাঁ, সরকার জানিয়েছে তথ্যের গোপনীয়তা বজায় রেখে প্রযুক্তি প্রয়োগ করা হবে।
৫. ভবিষ্যতে এই প্রযুক্তি আরও কোথায় চালু হতে পারে?
এই প্রাথমিক পর্যায়ে সফলতা এলে দেশের আরও গুরুত্বপূর্ণ স্টেশনগুলিতেও এই প্রযুক্তি চালু হতে পারে।