নতুন পরিকল্পনায় স্থানীয় সমস্যা সমাধানের পথে হাঁটছে রাজ্য সরকার। এবার বুথস্তরে পৌঁছে সরাসরি জনসংযোগের মাধ্যমে ছোটখাটো সমস্যার দ্রুত সমাধান হবে—এমনই উদ্যোগে নামা হয়েছে ‘আমাদের পাড়া, আমাদের সমাধান’ শিবিরের মাধ্যমে। আগামী ২ আগস্ট থেকে রাজ্যজুড়ে চালু হতে চলেছে এই নতুন প্রশাসনিক প্রকল্প। চলবে ৩ নভেম্বর পর্যন্ত। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে জমা পড়া সমস্যাগুলোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে ১৫ নভেম্বরের মধ্যে এবং বাস্তবায়ন শেষ করতে হবে ১৫ জানুয়ারির আগে। লক্ষ্য একটাই—স্থানীয় স্তরের জটিলতা আর দীর্ঘসূত্রিতা দূর করে সাধারণ মানুষকে সরাসরি যুক্ত করে দ্রুত সমাধান করা। এই প্রকল্পে মোট ৮০,০০০ বুথে প্রায় ২৭,০০০ শিবির আয়োজিত হবে। প্রতিটি বুথে বরাদ্দ থাকছে ১০ লক্ষ টাকা, যার ভিত্তিতে প্রয়োজনীয় কাজের অগ্রাধিকার নির্ধারণ করা হবে। গোটা কর্মসূচির জন্য বরাদ্দ মোট বাজেট ৮,০০০ কোটি টাকা।
সরকারের তরফে নির্ধারিত স্ট্যান্ডার্ড অপারেটিং প্রসিডিওর (SOP) অনুসারে শিবিরে অন্তর্ভুক্ত থাকবে ১৫ ধরনের স্থানীয় সমস্যা। এর মধ্যে রয়েছে—ড্রেন নির্মাণ, পানীয় জল সংযোগ, রাস্তার আলো বসানো, কমিউনিটি টয়লেট তৈরি, অঙ্গনওয়াড়ি সংস্কার, খেলার মাঠ সংস্কার ইত্যাদি। তবে বড় ধরনের নির্মাণ প্রকল্প—যেমন জমি অধিগ্রহণ, নতুন স্কুল বা সরকারি ভবন তৈরির মতো বিষয় এই প্রকল্পের আওতায় পড়ছে না। প্রতিটি শিবিরে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি—যেমন পঞ্চায়েত সদস্য, বিধায়ক, জেলা পরিষদের নেতারা এবং সংশ্লিষ্ট সরকারি আধিকারিকদের উপস্থিতি বাধ্যতামূলক। সমাধান প্রস্তাব গ্রহণ থেকে সিদ্ধান্ত প্রক্রিয়া পর্যন্ত সব কিছুই হবে ডিজিটাল মাধ্যমে, যাতে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা বজায় থাকে।
সাধারণ মানুষের জিজ্ঞাস্য
১. ‘আমাদের পাড়া, আমাদের সমাধান’ প্রকল্পে কী ধরনের কাজ করা হবে?
এটি মূলত ছোটখাটো পরিকাঠামোগত সমস্যা যেমন জল, আলো, ড্রেন, অঙ্গনওয়াড়ি বা কমিউনিটি টয়লেটের উন্নয়নের দিকে লক্ষ্য রাখবে।
২. এই প্রকল্পের সময়সীমা কত?
২ আগস্ট থেকে ৩ নভেম্বর পর্যন্ত শিবির চলবে, সিদ্ধান্ত হবে ১৫ নভেম্বরের মধ্যে এবং কাজ সম্পূর্ণ হবে ১৫ জানুয়ারির মধ্যে।
৩. প্রতিটি বুথে কত টাকা বরাদ্দ?
প্রতি বুথের জন্য বরাদ্দ রয়েছে ১০ লক্ষ টাকা।
৪. বড় প্রকল্পের আবেদন এই শিবিরে করা যাবে কি?
না, নতুন স্কুল, জমি সংক্রান্ত কাজ বা বড় নির্মাণের মতো প্রকল্প এই কর্মসূচিতে অন্তর্ভুক্ত নয়।
৫. এই শিবিরগুলো পরিচালনার ধরন কেমন হবে?
শিবিরগুলো পরিচালিত হবে নির্ধারিত SOP অনুযায়ী, স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও সরকারি আধিকারিকদের উপস্থিতিতে, এবং পুরো প্রক্রিয়া চলবে ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মে।
এই উদ্যোগের মাধ্যমে রাজ্য সরকারের লক্ষ্য, মানুষের দোরগোড়ায় গিয়ে সমস্যা শুনে দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণ করা। সাধারণ মানুষের সঙ্গে প্রশাসনের সম্পর্ক মজবুত করতে এবং প্রশাসনিক কার্যকলাপকে আরও স্বচ্ছ ও দায়িত্বশীল করতে এই প্রকল্প গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে বলে মনে করা হচ্ছে।