বলিউডের চলার সময় থেকেই সিনেমা জগৎ-এর সঙ্গে আন্ডারওয়ার্ল্ডের চোরাগোপ্তা সম্পর্ক তৈরি হয়েছিল। পরবর্তীকালে হাজি মস্তান (haji mastan)-কে হত্যা করে দাউদ ইব্রাহিম (daoud ibrahim) যখন নিজেকে অপরাধজগতের মুকুটহীন সম্রাট ঘোষণা করেন, তার পর থেকেই বলিউড সুন্দরী ও মাফিয়া ডনদের সম্পর্ক সামনে আসতে থাকে। কিন্তু তা নিয়ে সেইসব সুন্দরী নায়িকাদের আফশোস ছিল না। কারণ তাঁরা জানতেন, সেই সময় ধীরে ধীরে বলিউড মাফিয়াদের কুক্ষিগত হচ্ছে। এই বিষয়ে প্রথমেই নাম আসে অভিনেত্রী অনিতা আয়ুব (Anita ayub)-এর।
পাকিস্তানি অভিনেত্রী অনিতা 1993 সালে বলিউডে হিন্দি ফিল্ম ‘পেয়ার কা তরানা’-র মাধ্যমে ডেবিউ করেছিলেন। সেইসময় ক্রমশ বলিউডের কমার্শিয়াল অ্যাড এবং ফিল্মের পরিচিত মুখ হয়ে উঠেছিলেন অনিতা। কিন্তু তাঁর চটজলদি পরিচিতি পাওয়ার কারণ তখন সামনে আসে যখন 1995 সালে দাউদ ইব্রাহিমের গুন্ডারা পরিচালক জাভেদ সিদ্দিকি (javed siddique)-কে গুলি করে হত্যা করে কারণ জাভেদ তাঁর ফিল্মে অনিতাকে নিতে চাননি। পরবর্তীকালে ‘ফ্যাশন সেন্ট্রাল’ নামে একটি পাকিস্তানি ফ্যাশন ম্যাগাজিনের তরফে জানানো হয় অনিতা একজন পাকিস্তানি গুপ্তচর ছিলেন। এমনকি মুম্বই বিস্ফোরণের পিছনে অনিতার হাত ছিল বলে জানা যায়। কিন্তু পরবর্তীকালে অনিতা অদ্ভুতভাবে উধাও হয়ে যান। তিনি আদৌ বেঁচে আছেন কিনা তা জানা যায়নি।
এরপরেই আসে বলিউডের হরর মুভি ‘ভিরানা’ খ্যাত নায়িকা জেসমিন ধুন্না (jasmine dhunna)-র নাম। ‘ভিরানা’-র মাধ্যমে জেসমিন সমগ্র ভারতবর্ষের হার্টথ্রব হয়ে উঠেছিলেন। অসাধারণ সুন্দরী জেসমিন দাউদের নজরেও পড়ে গিয়েছিলেন। জেসমিন দাউদের শয্যাসঙ্গিনী হতে রাজি না হওয়ায় জেসমিনকে ক্রমাগত হুমকি দেওয়া হতে থাকে। হঠাৎই জেসমিনের অন্তর্ধান ঘটে। এরপর জেসমিনকে আর খুঁজে পাওয়া যায়নি। তবে এক বছর আগে জানতে পারা গেছে, এই মুহূর্তে জেসমিন বিবাহিতা এবং ফরিদাবাদের বাসিন্দা। তবে তাঁর পরিচয় এখন জেসমিন নামে নয়, অন্য নামে। রূপোলি পর্দার জাঁকজমকপূর্ণ জীবন থেকে অনেক দূরে নতুন পরিচয়ে সাধারণ ভাবে ভালোই আছেন জেসমিন।
দাউদ ইব্রাহিমের সবচেয়ে কাছের ছিলেন মন্দাকিনী। ‘রাম তেরি গঙ্গা মইলি’-র মাধ্যমে বিখ্যাত হওয়া মন্দাকিনীকে প্রকাশ্যে দাউদের সঙ্গে একাধিক স্থানে দেখা গেছে। এমনকি মন্দাকিনীকে কাছে রাখতে দাউদ ঘনিষ্ঠ এক ব্যক্তির সঙ্গে মন্দাকিনীর বিয়ে দিয়েছিলেন দাউদ। পরবর্তীকালে দাউদ অসুস্থ হতেই মুম্বইয়ে ফিরে আসেন মন্দাকিনী।
আবু সালেম (Abu salem) ও মণিকা বেদী (manika bedi)-র প্রেমকাহিনী সর্বজনবিদিত। শোনা যায়, দুজনে গোপনে বিয়েও করেছিলেন। কিন্তু আবু সালেম গ্রেফতার হওয়ার পর দুজনের ব্রেক-আপ হয়ে যায়।
মমতা কুলকার্নি (Mamta kulkarni) বলিউডে তাঁর কেরিয়ারের পিক টাইমে ড্রাগ মাফিয়া বিক্রম গোস্বামী (vikram Goswami)-র সঙ্গে সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েছিলেন। এমনকি বিক্রমের মাধ্যমে তিনি আন্তর্জাতিক ড্রাগ চক্রেও জড়িয়ে পড়েন। বিক্রমকে বিয়ে করে দুবাইয়ে সেটল হয়ে যান মমতা। বলিউডের সঙ্গে তিনি যোগাযোগ ছিন্ন করে দেন। কয়েক বছর আগে মমতা ও বিক্রমকে ড্রাগ পাচার করার অভিযোগে কেনিয়া থেকে গ্রেফতার করা হয়।