সিঙ্গুরে আজও পূজিত হন ডাকাত কালী, জাগ্রত এই মন্দিরের রহস্য জেনে নিন
ডাকাত কালী কথাটা শুনলেই কেমন যেন ভয়েতে বুকটা কেঁপে ওঠে। আগেকার দিনের ডাকাতের ঘটনা অনেক শোনা যেত। তারা নাকি ডাকাতি করতে যাওয়ার আগে কালী মাকে পুজো করে তারপরে বেরোতেন। এমন ঘটনা অনেক শোনা গেছে। সিঙ্গুরে আজও জাগ্রত ডাকাত কালীর মন্দির।
পশ্চিমবঙ্গের হুগলি জেলার সিঙ্গুর নামক স্থানের কাছে পুরুষোত্তমপুর এ অবস্থিত একটি বিখ্যাত কালীমন্দির ডাকাত কালীমন্দির। তবে এই মন্দির কবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে তা সঠিকভাবে জানা যায় না। এই মন্দিরের প্রতিষ্ঠা কে করেছেন সেই নিয়েও যথেষ্ট মতবিরোধ আছে। এই মন্দির গগন ডাকাত না রঘু ডাকাত নির্মাণ করেছেন তা নিয়ে মতপার্থক্যের শেষ নেই। তবে যারাই শুরু করুক তারা যে ডাকাত ছিলেন এ বিষয়ে কোনো সন্দেহ নেই। তাদের নামানুসারেই এই মায়ের নাম হয়েছে ডাকাত কালী।
মন্দিরটি আটচালা মন্দির। মন্দিরের ভেতরে শুধু কালীমা নয়, মন্দিরের দেওয়ালের শোভা পাচ্ছেন নানা দেব দেবীর মূর্তি। বিষ্ণুর দশ অবতারের মূর্তি ও পোড়ামাটির লতাপাতাও ওইখানে খোদিত রয়েছে। মন্দিরের গর্ভগৃহে প্রায় ৯ ফুট উঁচু একটি মূর্তি রয়েছে। তবে এই মন্দিরের কালী সিদ্ধেশ্বরী কালী মা।
ইতিহাস ঘাটলে জানা যায়, রঘু অথবা গগন ডাকাত ঘট প্রতিস্থাপন করে এই পুজো শুরু করেছিলেন। তখন ঘট পূজো হত, মন্দির তখনও তৈরি করা হয়নি। অতীতে এখানে গভীর জঙ্গল ছিল। অসুস্থ রামকৃষ্ণ পরমহংসদেবকে দেখতে যাওয়ার পথে মা সারদা দেবীকে এই স্থানে দুই ডাকাত আটকে রেখেছিলেন এবং স্বয়ং কালী দেখা দিয়ে ও দুই ডাকাতকে নিবারণ করেন। এই অলৌকিক ঘটনায় ভয় পেয়ে গগন ডাকাত ও রঘু ডাকাত কালী মন্দির প্রতিষ্ঠা করেন। বর্ধমানের মহারাজ মা কালীর স্বপ্নাদেশ পাওয়ার পরে প্রতিমা ও মন্দির নির্মিত হয়। অতীতে এখানে নরবলি প্রচলন ছিল, এমনটা লোকমুখে জানা যায়।