দেশের রেল ইতিহাসে এক নতুন অধ্যায় লিখতে চলেছে ভারত। অবশেষে সামনে এল দেশের প্রথম বুলেট ট্রেন প্রকল্প ‘মুম্বই–আহমেদাবাদ হাই-স্পিড রেল করিডর’-এর বিস্তারিত রুট ম্যাপ। ১২টি স্টেশন সংযুক্ত করে প্রায় ৫০০ কিলোমিটার পথ পাড়ি দেবে এই হাইস্পিড ট্রেন। প্রযুক্তির উন্নয়নের পাশাপাশি পরিবহণ ব্যবস্থার রূপান্তর ঘটাতে চলেছে এই উদ্যোগ।
এই প্রকল্পের মূল উদ্দেশ্য হল পশ্চিম ভারতের দু’টি গুরুত্বপূর্ণ শহর—মুম্বই ও আহমেদাবাদকে উচ্চগতির রেলে সংযুক্ত করা। মোট ৫০৮ কিলোমিটার দীর্ঘ এই রেলপথ পেরোবে মহারাষ্ট্র, গুজরাট এবং দাদরা ও নগর হাভেলির মধ্য দিয়ে।
স্টেশন তালিকা কী রকম?
এই করিডরে যাত্রা শুরু হবে মুম্বইয়ের বান্দ্রা কুরলা কমপ্লেক্স থেকে। তার পর পর্যায়ক্রমে থানে, বিরার, বোইসার, বাপি, বিলিমোরা, সুরাট, ভরুচ, ভদোদরা, আনন্দ/নাদিয়াদ, আহমেদাবাদ ও সবরমতী স্টেশনে থামবে এই ট্রেন।
প্রযুক্তিগত দিক থেকে কী বিশেষত্ব আছে?
ট্রেনগুলি চলবে সর্বোচ্চ ৩২০ কিমি প্রতি ঘণ্টা গতিতে। ব্যবহৃত হবে জাপানি শিনকানসেন E5 সিরিজ প্রযুক্তি, যা আগে থেকেই বিশ্বব্যাপী উচ্চ প্রশংসিত। রুটটির মধ্যে থাকছে এলিভেটেড ভায়াডাক্ট, আন্ডারগ্রাউন্ড টানেল ও থানে ক্রিকের নীচে প্রায় ২ কিমির একটি আন্ডারসি টানেল।
কবে থেকে চলবে এই ট্রেন?
২০২১ সালে শুরু হয় নির্মাণ কাজ। ২০২৭ সালের শেষে গুজরাট অংশে প্রথম ট্রেন চলাচল শুরু হবে বলে আশা করা হচ্ছে। সম্পূর্ণ প্রকল্পটি ২০২৮ সালের মধ্যে সম্পূর্ণ করার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে।
আর্থিক ও পরিচালনার দিক থেকে প্রকল্পটি কেমন?
এই উচ্চাভিলাষী প্রকল্পটির পরিচালনার দায়িত্বে আছে National High-Speed Rail Corporation Limited (NHSRCL)। জাপানের JICA থেকে নেওয়া হয়েছে ₹৮৮,০০০ কোটির ঋণ, যার সুদের হার মাত্র ০.১% এবং ৫০ বছরে পরিশোধযোগ্য।
ভারতের পরিকাঠামো উন্নয়নে এই বুলেট ট্রেন প্রকল্প একটি মাইলস্টোন হিসেবেই ধরা হচ্ছে। একদিকে যেমন সময় সাশ্রয় হবে, তেমনই উন্নত প্রযুক্তির ছোঁয়ায় দেশীয় পরিবহণে আসবে এক নতুন দিশা।
FAQ (প্রশ্নোত্তর):
মুম্বই–আহমেদাবাদ বুলেট ট্রেনের মোট কতগুলি স্টেশন থাকবে?
মোট ১২টি স্টেশনে থামবে এই ট্রেন।
ট্রেনটির সর্বোচ্চ গতি কত হবে?
ট্রেন চলবে সর্বোচ্চ ৩২০ কিমি প্রতি ঘণ্টায়।
কবে থেকে এই ট্রেন চলা শুরু হবে?
গুজরাট অংশে ২০২৭ সালের শেষের দিকে ট্রেন চলা শুরু হতে পারে।
প্রকল্পটি কে পরিচালনা করছে?
National High-Speed Rail Corporation Limited এই প্রকল্প পরিচালনার দায়িত্বে আছে।
এই প্রকল্পের অর্থায়ন কীভাবে হয়েছে?
জাপানের JICA থেকে ₹৮৮,০০০ কোটির ঋণ নিয়ে অর্থায়ন করা হয়েছে।