সংসারের অভাব মেটাতে নিষ্ঠাভরে পুজো করুন মা লক্ষ্মীর, পাবেন মায়ের অসীম কৃপা
লক্ষী মানে শ্রী বা সুরুচি। তিনি সম্পদ এবং সৌন্দর্যের দেবী বৈদিক যুগে ও মহা শক্তি হিসেবে তার পুজো হতো।
সময় যত এগিয়েছে পুজো থেকে শুরু করে সবকিছুর পরিবর্তন ঘটেছে দুর্গাপুজোয় সাবেকিয়ানার পাশে স্থান পেয়েছে থিমের সেইরকম লক্ষী পুজোয় এসেছেনতুনত্বের ছোয়া। শুধু আলপনা বা ছড়া নয় পুজোর উপকরনেও পরিবর্তন এসেছে। কলাবউ ঘট লক্ষীসরা ছাড়াও ওপার বাংলায় আরো এক রকমের কোজাগরী পূজা হত বেতের ছোট চুপরি বা ঝুড়িতে ধান ভর্তি করে তার ওপরে দুটি কাঠের লম্বা সিঁদুর ফটো লাল চিনি দিয়ে মুড়ে দেবীর রূপ দেয়া হতো। যা আড়ী লক্ষ্মী নামে প্রচলিত ছিল।
“নীশিথে বরদে লক্ষী কোজাগরী মহীতলে”-
কোজাগরী পুজোর মন্ত্রে প্রতিফলিত হয় যে মধ্যযুগের বণিকেরা এই পুজো করতেন। ঘোর বর্ষার পর প্রসন্ন শরতে জলপথে বাণিজ্য যাওয়ার আগে আগের দিন সারারাত জেগে প্রদীপ জ্বেলে দিয়ে ভোগ নিবেদন করে তাকে পূজো করা হত। আবার নীহাররঞ্জন রায় এর বাঙালির ইতিহাস গ্রন্থ থেকে জানা যায় লক্ষীর পৃথক মূর্তিপূজা প্রচলিত ছিল না এই লক্ষ্মী ছিল কৃষি সমাজের মানস কল্পনা সৃষ্টি শস্য প্রাচুর্যের সমৃদ্ধির দেবী।
জানা যায় পূর্ববঙ্গের গ্রামদেশে দুর্গাপূজা জনপ্রিয় ছিল না। বরং সেখানে লক্ষ্মীপুজো ছিল বড় উৎসব। কোথাও কোথাও কলাবউ গড়ে বা লক্ষীসরায় পুজো হতো। তবে আশ্চর্যের ব্যাপার এটাই যে লক্ষীসরাই বেশিরভাগ সময়ই রাধা কৃষ্ণ -এর ছবি আঁকা থাকত। আর তার সাথে নানারকম ছড়া কেটে গৃহস্থ বধুরা মা কে আহ্বান করত।
“আকিলাম পদ দু’টি তাই মাগো নিই লুটি
দিবারাত পা দুটি ধরি বন্দনা করি।। “
তবে ভারতের অন্যান্য রাজ্যের লক্ষ্মী পুজোর সংস্কৃতি বাংলার থেকে অন্যরকম। যেমন ভারতের বেশিরভাগ অঞ্চলের শুক্রবার মহালক্ষ্মী উপবাস রাখা হয় এবং বিশেষ পুজোর আয়োজন করা হয় কিন্তু বাংলার ঘরে বৃহস্পতিবার লক্ষ্মীবার। কোজাগরী লক্ষ্মী পুজো দক্ষিণ ভারত ও পূর্ব ভারতের জনপ্রিয় হলেও উত্তর ও পশ্চিম ভারতের মা লক্ষ্মীর আবাহন ধনতেরাস তিথিকে কেন্দ্র করে হয়।