বর্তমান বাজারের ওঠানামা ও অনিশ্চয়তার মধ্যে নিরাপদ ও নির্ভরযোগ্য বিনিয়োগ খুঁজছেন? এমন পরিস্থিতিতে জাতীয় সঞ্চয়পত্র বা ন্যাশনাল সেভিংস সার্টিফিকেট (NSC) হয়ে উঠতে পারে এক উপযুক্ত সমাধান। সরকারের মঞ্জুরিপ্রাপ্ত এই স্কিমটি শুধুমাত্র স্থির ও ধারাবাহিক মুনাফা নয়, একইসঙ্গে কর ছাড়ের সুবিধাও দিচ্ছে।
বর্তমানে এনএসসি-র সুদের হার ধার্য হয়েছে বার্ষিক ৭.৭ শতাংশ, যা বছরে একবার কম্পাউন্ড হয় এবং পরিপক্বতার সময় অর্থাৎ ৫ বছর পরে পুরো টাকার সঙ্গে জমা হয় বিনিয়োগকারীর অ্যাকাউন্টে। এই সুদের হার অনেক ক্ষেত্রেই ব্যাঙ্কের ফিক্সড ডিপোজিটের তুলনায় বেশি, ফলে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে আগ্রহ ক্রমশ বাড়ছে।
এই স্কিমে ন্যূনতম ১,০০০ বিনিয়োগ করে শুরু করা যায়, এবং কোনও সর্বোচ্চ সীমা নেই। এর ফলে সাধারণ মধ্যবিত্ত থেকে শুরু করে বড় বিনিয়োগকারী—সবাই তাদের সামর্থ্য অনুযায়ী এনএসসি-তে অংশ নিতে পারেন।একটি বড় সুবিধা হল এনএসসি-তে বিনিয়োগ করলে আয়কর আইনের ৮০সি ধারায় ১.৫ লক্ষ পর্যন্ত করছাড় পাওয়া যায়। ফলে এটি কেবল সঞ্চয়ের নয়, ট্যাক্স প্ল্যানিংয়ের ক্ষেত্রেও একটি কার্যকর উপায়।
এনএসসি শুধুমাত্র ভারতীয় নাগরিকদের জন্য উপলব্ধ। এনআরআইদের এই স্কিমে বিনিয়োগের অনুমতি নেই। তবে যৌথভাবে তিনজন পর্যন্ত মিলে একটি এনএসসি অ্যাকাউন্ট খোলা যেতে পারে, যা পরিবার বা পার্টনারদের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ সুবিধা।বিনিয়োগকারীদের আর্থিক প্রয়োজনে এনএসসি লোন নেবার জন্য জামানত হিসেবেও ব্যবহার করা যায়। অনেক ব্যাঙ্ক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান এই সার্টিফিকেটকে কল্যাটারাল হিসেবে গ্রহণ করে থাকে।
তবে একটি বিষয় মাথায় রাখা জরুরি—এনএসসি-র নির্ধারিত মেয়াদ শেষ হওয়ার আগে অর্থ তুলতে সাধারণত অনুমতি নেই। শুধুমাত্র কিছু বিশেষ পরিস্থিতিতে, যেমন বিনিয়োগকারীর মৃত্যু বা আদালতের নির্দেশ থাকলে, আগাম টাকা তোলা যেতে পারে।সব মিলিয়ে, যাঁরা ঝুঁকিহীন, স্থিতিশীল এবং করসাশ্রয়ী বিনিয়োগের কথা ভাবছেন, তাঁদের কাছে এনএসসি হতে পারে একটি কার্যকর ও লাভজনক বিকল্প।