Nita Ambani: সোনার সুতোয় কাজ করা শাড়ি, লিপস্টিকের ভান্ডার, আর কি কি রয়েছে নীতা আম্বানির সংগ্রহে!
ভারত তথা বিশ্বের অন্যতম ধনী পরিবার হল আম্বানি পরিবার। ধীরুভাই আম্বানি (Dhirubhai Ambani)-র পর রিলায়েন্স ইন্ডাস্ট্রিজ-কে অগ্রসর করার ক্ষেত্রে পথিকৃৎ মুকেশ আম্বানি (Mukesh Ambani)। তাঁর স্ত্রী নীতা আম্বানি (Neeta Ambani) কোনোদিনই আম্বানি পরিবারে বধূ হিসাবে প্রাধান্য পেতেন না। তাঁর পরিবর্তে আম্বানি পরিবারের সদস্যরা পছন্দ করতেন অনিল আম্বানি (Anil Ambani) ও টিনা আম্বানি (Tina Ambani)। তাঁদের বিলাসবহুল জীবনযাত্রার ফলে উচ্চবিত্ত মহলে তাঁরা ছিলেন ঈর্ষার কারণ। অপরদিকে উচ্চশিক্ষিত মুকেশ ও তাঁর স্ত্রী নীতার জীবনযাত্রা ছিল সাধারণ মানের। নীতার পোশাক দেখে মনে হত না তিনি আম্বানি পরিবারের বধূ। কিন্তু ধীরুভাই-এর মৃত্যুর পর অনিল চেয়েছিলেন সম্পূর্ণ রিলায়েন্স সাম্রাজ্যের উপর অধিকার তৈরি করতে। তাঁর মা কোকিলাবেন আম্বানি (Kokilaben Ambani) এই ব্যাপারে সহমত ছিলেন না। ফলে ধীরুভাই-এর তৈরি সাম্রাজ্য মুকেশ ও অনিলকে ভাগ করে দেন কোকিলাবেন।
View this post on Instagram
অনিল ও টিনার কাছে রিলায়েন্স ছিল সোনার ডিম পাড়া হাঁস। অচিরেই এই মনোভাবের খেসারত দিতে হয় তাঁদের। ব্যবসায়িক ক্ষতি ও অসদুপায় অবলম্বনের কারণে দেউলিয়া হয়ে যান অনিল। অপরদিকে মুকেশ তাঁর ব্যবসায়িক বুদ্ধির মাধ্যমে বিশ্বের সেরা ধনীদের তালিকাভুক্ত হন। তাঁর পাশে আগাগোড়াই ছিলেন নীতা। নীতা সাধারণ জীবনযাত্রা পছন্দ করলেও তাঁর চারপাশের মানুষরা তাঁকে পাত্তা দিতে চাইতেন না। মূলতঃ মুকেশের উৎসাহেই অন্দরমহল ছেড়ে বাইরে আসেন নীতা। নিজেকে সঠিক ভাবে গ্রুম করেন। মুকেশই তাঁকে উচ্চবিত্ত জীবনযাপন সাথে মানিয়ে চলার পরামর্শ দেন। এটি পরোক্ষ ভাবে মুকেশের ব্যবসার সহায়ক হয়ে উঠেছিল। নীতার বুদ্ধিদীপ্ত উপস্থিতি ও সিদ্ধান্ত রিলায়েন্স গোষ্ঠীকে সমৃদ্ধ করেছে।
View this post on Instagram
বর্তমানে নীতাই প্রথম ভারতীয় মহিলা যিনি ইন্টারন্যাশনাল অলিম্পিক কমিটির সদস্য পদে রয়েছেন। এছাড়াও ‘এশিয়া টুডে’ প্রকাশিত তালিকায় তিনিই ‘মোস্ট ইনফ্লুয়েন্সিয়াল উওম্যান বিজনেস লিডার’। ‘অ্যান্টিলিয়া’-র বাসিন্দা নীতার জীবন নিয়ে যেমন রয়েছে বহু মিথ, তেমনই রয়েছে বেশ কিছু চমকপ্রদ তথ্য। এগুলির মধ্যে অন্যতম হল নীতার পছন্দের গাড়ি। এই গাড়িটি ডিজাইন করেছেন স্প্যানিশ কার ডিজাইনার ড্যানিয়েল গার্সি (Daniel Garci)। এই গাড়িটির অন্যতম বৈশিষ্ট্য হল ড্রাইভারের আসনের কাছে তৈরি একটি বাটন যার মাধ্যমে গাড়ির বাইরের রঙ লহমায় পরিবর্তিত করা যায়। এই গাড়ির দাম নব্বই কোটি টাকা ও এটি একটি লিমিটেড এডিশন কার। নীতা অবশ্য এই গাড়িটি বেশি ব্যবহার করেন না।
নীতার গয়নার সংগ্রহ দেখার মতো। বিবাহ সূত্রে কিছু গয়না তিনি পেয়েছিলেন। এছাড়াও হীরের গয়না সংগ্রহ করতে পছন্দ করেন তিনি। তবে কোনো অনুষ্ঠান ছাড়া গয়নায় সেজে থাকতে ভালোবাসেন না নীতা।
নীতার ডিজাইনার শাড়ির মধ্যে অন্যতম হল ‘চেন্নাই সিল্ক’-এর ডিরেক্টর শিবলিঙ্গম (Shivalingam)-এর ডিজাইন করা একটি শাড়ি যাতে ভগবান শ্রীকৃষ্ণের একটি প্রতিকৃতি এমব্রয়ডারি করা রয়েছে। এছাড়াও এই শাড়িতে বসানো রয়েছে হীরে ও মুক্তো। ব্যবহার করা হয়েছে সোনার সুতো। এই শাড়ির দাম চল্লিশ লাখ টাকা।
নীতা বরাবর চা খেতে ভালোবাসেন। তাঁর পুত্রবধূ শ্লোক মেহতা (Shlok Mehta) তাঁকে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের চায়ের সাথে পরিচয় করিয়ে দিয়েছেন। নীতা এই ব্যাপারে যথেষ্ট শৌখিন। তাঁর একটি দেড় কোটি টাকা মূল্যের টি-সেট রয়েছে। এটি জাপানের নামী ক্রকারি কোম্পানি নরিটেকের তৈরি। এই টি-সেটটি নীতার অত্যন্ত ব্যক্তিগত। প্রতিদিন সকালে এই টি-সেটের কাপে তিনি চা খেতে পছন্দ করেন।
View this post on Instagram
এর পাশাপাশি নীতার পানীয় জল ও লিপস্টিক নিয়ে কিছু মিথ রয়েছে। নীতা নাকি ক্রিস্টাল দেওয়া পানীয় জল ব্যবহার করেন। কিন্তু তা একেবারেই সত্যি নয়। নীতা তাঁর বাড়িতে আর পাঁচ জন মানুষের মতোই ব্যবহার করেন ‘আর ও প্লাস ইউ ভি’ ফিল্টারড পানীয় জল। বাইরে নীতা পান করেন মিনারেল ওয়াটার। নীতার কাস্টমাইজড লিপস্টিক কালেকশন নিয়ে রয়েছে মিথ। অনেকে বলেন সেগুলি নাকি সোনা ও রূপোর প্যাকেজিং করা। এই প্রসঙ্গে একটি তথ্য জেনে রাখা ভালো, নীতা কোনো কাস্টমাইজড লিপস্টিক ব্যবহার করেন না। তিনি আন্তর্জাতিক ব্র্যান্ড ‘মেবিলিন নিউ ইয়র্ক’, ‘ম্যাক্সফ্যাক্টর’, ‘ল্যাকমে’, ‘ববি ব্রাউন’-এর লিপস্টিক এবং ফাউন্ডেশন ব্যবহার করেন। অত্যধিক মেকআপ পছন্দ না করলেও বিয়ের আগে থেকেই লিপস্টিকের প্রতি নীতার দূর্বলতা রয়েছে। লিপস্টিকের বিরাট কালেকশনের কথা যদি বলা হয়, তাহলে প্রায় সব মেয়ের নামই সেই তালিকায় থাকবে। কারণ বোরখা পরিহিতা নারীরাও লিপস্টিক পরতে পছন্দ করেন।
View this post on Instagram