ভারতের অসংখ্য ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট বহুদিন ধরে ব্যবহৃত হচ্ছে না। অনেক গ্রাহকই জানেন না, তাঁদের জমানো টাকা পড়ে রয়েছে আরবিআইয়ের ‘ডিপোজিটার এডুকেশন অ্যান্ড অ্যাওয়ারনেস ফান্ডে’। এবার সেই অর্থ ফেরত পাওয়ার এবং বন্ধ হয়ে যাওয়া অ্যাকাউন্ট পুনরায় চালুর পথ আরও সহজ করল রিজার্ভ ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়া (RBI)।প্রায় ৭৮,০০০ কোটিরও বেশি অপ্রত্যাহৃত জমা অর্থ এখন পড়ে রয়েছে আরবিআইয়ের তহবিলে। ২ বছর যদি কোনও সেভিংস বা কারেন্ট অ্যাকাউন্টে লেনদেন না হয়, তবে সেই অ্যাকাউন্টকে ‘ইনঅপারেটিভ’ বা নিষ্ক্রিয় বলে গণ্য করা হয়। আর ১০ বছর ধরে পড়ে থাকা অর্থ চলে যায় RBI-র DEA ফান্ডে।
নতুন নিয়মে কী কী পরিবর্তন এল?
ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট রিঅ্যাক্টিভেট করতে এতদিন পর্যন্ত গ্রাহককে নিজের হোম ব্রাঞ্চে গিয়ে কেওয়াইসি (KYC) আপডেট করতে হত। এবার থেকে কোনও শাখাতেই এই প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা যাবে। শুধু তাই নয়, গ্রাহকদের সুবিধার্থে চালু হয়েছে ভিডিও-ভিত্তিক KYC (V-CIP)। ফলে ঘরে বসেই আধার ও প্যান কার্ডের মাধ্যমে প্রমাণ পেশ করে অ্যাকাউন্ট চালু করা যাবে।গ্রামাঞ্চলের জন্য আরও এক গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ নিয়েছে RBI। স্বীকৃত ব্যাঙ্কিং প্রতিনিধি বা ‘বিজনেস করেসপন্ডেন্ট’-রাও এখন এই প্রক্রিয়ায় সাহায্য করতে পারবেন। ফলে যাঁদের ডিজিটাল পরিষেবা বা শহুরে ব্যাংকিং সুবিধা সীমিত, তাঁরাও এই নতুন ব্যবস্থার সুফল পাবেন।
কেন এই সিদ্ধান্ত?
এই পদক্ষেপগুলির মূল লক্ষ্য হল ব্যাংকিং ব্যবস্থায় আরও স্বচ্ছতা আনা, আর্থিক অন্তর্ভুক্তিকে উৎসাহ দেওয়া এবং অপ্রত্যাহৃত জমা অর্থের পরিমাণ কমানো। পাশাপাশি, এই দীর্ঘমেয়াদি নিষ্ক্রিয় অ্যাকাউন্টগুলিকে কেন্দ্র করে হওয়া সম্ভাব্য জালিয়াতিও রোখা যাবে।
প্রশ্নোত্তর (FAQ)
১. কতদিন অ্যাকাউন্টে লেনদেন না হলে তা নিষ্ক্রিয় হয়ে যায়?
যদি টানা ২ বছর কোনও লেনদেন না হয়, তবে সেই অ্যাকাউন্ট নিষ্ক্রিয় হিসেবে চিহ্নিত হয়।
২. নিষ্ক্রিয় অ্যাকাউন্ট আবার কিভাবে চালু করা যায়?
নতুন নিয়মে, যে কোনও শাখায় গিয়ে বা ভিডিও KYC এর মাধ্যমে অ্যাকাউন্ট পুনরায় চালু করা যাবে।
৩. অপ্রত্যাহৃত অর্থ কোথায় জমা থাকে?
১০ বছর ধরে পড়ে থাকা অর্থ RBI-র DEA ফান্ডে স্থানান্তরিত হয়।
৪. গ্রামাঞ্চলের মানুষ কীভাবে এই প্রক্রিয়া সম্পন্ন করবেন?
স্বীকৃত ব্যাঙ্কিং এজেন্ট বা বিজনেস করেসপন্ডেন্টরা এখন KYC ও রিঅ্যাক্টিভেশন প্রক্রিয়ায় সাহায্য করতে পারবেন।
৫. এর ফলে কী উপকার হবে সাধারণ মানুষের?
সহজে নিজস্ব অর্থ ফেরত পাওয়া যাবে, গ্রামীণ এলাকায় আর্থিক পরিষেবা পৌঁছবে এবং প্রতারণার সম্ভাবনা কমবে।