দেশজুড়ে সোনার দামের ওঠানামা নিয়ে যখন সাধারণ মানুষ এবং বিনিয়োগকারীরা চিন্তিত, তখনই বড় সিদ্ধান্ত নিল দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্ক। এপ্রিল ২০২৫ থেকে সোনার ক্রয় কার্যক্রম সাময়িকভাবে বন্ধ করেছে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়া (RBI)। একাধিক মাস ধরে ধারাবাহিকভাবে সোনার ভাণ্ডার বাড়ানোর পরে হঠাৎ কেন এই সিদ্ধান্ত, তা ঘিরে তৈরি হয়েছে নানা জল্পনা। বর্তমানে RBI-এর সোনার মোট রিজার্ভ দাঁড়িয়েছে প্রায় ৮০০ টন। এই বিশাল ভাণ্ডারের অর্ধেকের বেশি এখন দেশের মাটিতেই সংরক্ষিত, যা আগে বিদেশের (বিশেষত যুক্তরাজ্য) ভল্টে রাখা থাকত। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, শুধুমাত্র নিরাপত্তার কারণেই নয়, বৈদেশিক মুদ্রার অস্থিরতার সময়ে সোনাকে একটি ‘safe haven asset’ হিসাবে দেখা হয়। তাই অতীতে একটানা কেনা হয়েছে বিপুল পরিমাণ সোনা।
তবে এই সাময়িক বিরতি থেকে কেউ কেউ ধরে নিচ্ছেন, সোনার দামে আগামী দিনে হয়তো কিছুটা কমতি দেখা যেতে পারে। যদিও বাজার বিশ্লেষকদের মতে, এটি কোনও দীর্ঘমেয়াদি সিদ্ধান্ত নয়, বরং RBI তার অ্যাসেট অ্যালোকেশনের পদ্ধতিতে কিছুটা ভারসাম্য আনতে চাইছে। আন্তর্জাতিক বাজারেও সোনার চাহিদা এবং কেনার গতি কিছুটা কমেছে, যা মূল্য হ্রাসের সম্ভাবনা তৈরি করেছে। বিগত কয়েক বছরে বিশ্বজুড়ে বিভিন্ন দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্কগুলি সোনার রিজার্ভ বাড়িয়েছে, যার পেছনে রয়েছে বিশ্ব রাজনীতির অনিশ্চয়তা এবং ডলারের শক্তি হারানোর আশঙ্কা। ভারতও সেই পথেই হেঁটেছে। তবে বর্তমান সিদ্ধান্ত স্পষ্ট করে দেয়, RBI সোনার উপর আস্থা হারায়নি, বরং সঠিক সময়ে আবার বাজারে ফিরে আসবে।
জেনে নিন, এই সিদ্ধান্ত নিয়ে পাঁচটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন
১. কেন হঠাৎ সোনা কেনা বন্ধ করল RBI?
→ মূলত রিজার্ভের ভারসাম্য রক্ষার জন্য এবং দেশের মধ্যে সঞ্চয় বৃদ্ধির পর একটি সাময়িক বিরতি নেওয়া হয়েছে।
২. সোনার দাম কি এখন কমবে?
→ বাজারে এমন জল্পনা উঠলেও, এটি নিশ্চিত নয়। দাম বিশ্ববাজারের চাহিদা ও সরবরাহের উপর নির্ভর করবে।
৩. RBI এর সোনার মোট ভাণ্ডার কত?
→ বর্তমানে প্রায় ৮০০ টন সোনা রয়েছে RBI-এর হেফাজতে।
৪. সোনার কতটা অংশ এখন দেশে সংরক্ষিত?
→ ৫০ শতাংশেরও বেশি অংশ এখন ভারতের ভল্টে রাখা হয়েছে।
৫. এই সিদ্ধান্তের প্রভাব সাধারণ বিনিয়োগকারীর ওপর কী হতে পারে?
→ স্বল্পমেয়াদে কিছু প্রভাব পড়তে পারে, তবে দীর্ঘমেয়াদে সোনার গুরুত্ব একই থাকবে।