টানা বৃষ্টিতে হাঁটু জল কলকাতা শহরে, আর গ্রামের দিকে? নদীর জল গিলে ফেলছে সেতু। দক্ষিণবঙ্গ জুড়ে তৈরি হয়েছে বন্যার আশঙ্কা। গত কয়েকদিন ধরে একটানা ভারী বৃষ্টিপাতে দক্ষিণবঙ্গের বেশ কয়েকটি জেলায় জারি হয়েছে বন্যার সতর্কতা। আবহাওয়া দফতর জানিয়েছে, একটি স্থায়ী নিম্নচাপ ঘূর্ণাবর্ত দক্ষিণবঙ্গে সক্রিয় থাকায় প্রবল বৃষ্টিপাত শুরু হয়েছে। পশ্চিম মেদিনীপুর, পূর্ব মেদিনীপুর, বাঁকুড়া ও হাওড়া—এই চারটি জেলায় বৃষ্টিপাতের পরিমাণ ১০০ মিলিমিটার ছাড়িয়ে গেছে। এই প্রবল বর্ষণের ফলে জলস্তর বেড়ে গেছে কংসাবতী, দারকেশ্বর, গন্ধেশ্বরী, শিলাবতী ও সুবর্ণরেখা নদীতে। ফলে নদীগুলি বিপদসীমার কাছাকাছি পৌঁছেছে এবং আগামী ২৪ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে বন্যার সম্ভাবনা একেবারে উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না।
জানা গিয়েছে, বাঁকুড়া জেলার দারকেশ্বর নদীর উপর অবস্থিত মীনাপুর সেতু ইতিমধ্যেই নদীর জলে ডুবে গিয়েছে। প্রশাসনের তরফে ওই সেতু দিয়ে যান চলাচল সম্পূর্ণরূপে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। এছাড়াও, কিছু নিচু এলাকায় জল ঢুকে পড়েছে বলে খবর মিলেছে স্থানীয় সূত্রে। জেলা প্রশাসনগুলিকে ইতিমধ্যেই সতর্ক করে দিয়েছে রাজ্য বিপর্যয় মোকাবিলা দফতর। নদীর পাড় সংলগ্ন এলাকাগুলিতে নজরদারি চালানো হচ্ছে এবং প্রয়োজন হলে দ্রুত উদ্ধারকারী দল পাঠানো হবে বলেও জানানো হয়েছে। বন্যা মোকাবিলায় প্রস্তুতি হিসাবে বিভিন্ন ব্লকে ত্রাণ কেন্দ্র প্রস্তুত রাখা হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে সাধারণ মানুষকে সতর্ক থাকার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। বিশেষ করে যাঁরা নদী বা নিচু এলাকায় বসবাস করেন, তাঁদের বাড়তি সতর্কতা অবলম্বন করতে বলা হয়েছে। অপ্রয়োজনীয় ভ্রমণ এড়িয়ে চলা ও স্থানীয় প্রশাসনের সঙ্গে যোগাযোগ রাখা গুরুত্বপূর্ণ বলে জানানো হয়েছে।
প্রশ্নোত্তর (FAQs):
১. কেন আজ সারাদেশে বন্যার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে?
→ দক্ষিণবঙ্গে টানা ভারী বৃষ্টিপাত এবং নদীগুলির জলস্তর বৃদ্ধির ফলে বন্যার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
২. কোন জেলাগুলিতে সবচেয়ে বেশি সতর্কতা দেখানো হয়েছে?
→ পশ্চিম মেদিনীপুর, পূর্ব মেদিনীপুর, বাঁকুড়া ও হাওড়া জেলায় উচ্চ সতর্কতা জারি হয়েছে।
৩. কোন নদীগুলির জল উদ্বেগজনকভাবে বেড়েছে?
→ কংসাবতী, দারকেশ্বর, গন্ধেশ্বরী, শিলাবতী ও সুবর্ণরেখা নদীর জল বিপদসীমা ছুঁইছুঁই করছে।
৪. প্রশাসনের তরফে কী পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে?
→ নজরদারি জোরদার করা হয়েছে, প্রয়োজনে ত্রাণ ও উদ্ধারকারী দল মোতায়েনের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে।
৫. অবকাঠামো কতটা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে?
→ বাঁকুড়ার মীনাপুর ব্রিজ সম্পূর্ণরূপে জলের তলায় চলে গিয়েছে এবং সেতুটি বন্ধ রাখা হয়েছে।