whatsapp channel

Amit Mondal: মাত্র বাইশে চলে গেল তরতাজা প্রাণ, স্কুটি কিনেই কাল হলো ইউটিউবার অমিতের!

বহু ধারণাকে ভুল প্রমাণিত করেছিলেন তিনি। সমাজের প্রচলিত ধারণার বিরুদ্ধে লড়াই করেছিলেন বিশেষ রূপে সক্ষম অমিত মন্ডল (Amit Mondal)। কারণও সহানুভূতি কুড়াতে চাননি। চেয়েছিলেন নিজের মতো করে জীবন বেঁচে উদাহরণ…

Avatar

Nilanjana Pande

Advertisements
Advertisements

বহু ধারণাকে ভুল প্রমাণিত করেছিলেন তিনি। সমাজের প্রচলিত ধারণার বিরুদ্ধে লড়াই করেছিলেন বিশেষ রূপে সক্ষম অমিত মন্ডল (Amit Mondal)। কারণও সহানুভূতি কুড়াতে চাননি। চেয়েছিলেন নিজের মতো করে জীবন বেঁচে উদাহরণ স্থাপন করতে। কিন্তু মঙ্গলবারের দূর্ঘটনা বদলে দিয়েছে তাঁর কাহিনীকে। বাঁচার জন্য লড়াই বুধবার সকালে শেষ হয়ে গিয়েছে এসএসকেএম হাসপাতালের বেডে। মাত্র বাইশ বছর বয়সে না ফেরার দেশে চলে গিয়েছেন অমিত।

Advertisements

Advertisements

ফ্রেজারগঞ্জ এলাকার শিবপুর জংশনের বাসিন্দা অমিতের জন্ম হয়েছিল সুস্থ শরীরেই। কিন্তু ষষ্ঠ শ্রেণীতে পড়াকালীন বাড়িতে একটি ছোট্ট দূর্ঘটনা ঘটে তাঁর সাথে। ফলে তাঁর ডান পায়ে সামান্য জোর থাকলেও অকেজো হয়ে যায় বাঁ পা। অমিতের জীবনে নেমে আসে বিষাদের ছায়া। কিন্তু নেতিবাচক পরিস্থিতিকে চ্যালেঞ্জ হিসাবে গ্রহণ করেছিলেন অমিত। খুলেছিলেন নিজের ইউটিউব চ্যানেল। নিজের জীবনের রোজনামচা শেয়ার করে বিখ্যাত হয়ে উঠেছিলেন তিনি। দরিদ্র পরিবারের সন্তান অমিতের ব্যয়বহুল চিকিৎসা করানোর ক্ষমতা ছিল না। মা-বাবা দুজনেই পেশায় সাফাইকর্মী। তবে অমিতের স্বনির্ভর হয়ে ওঠার লড়াইয়ে তাঁর পাশে থেকেছেন মা। গত বছর চারশো আটত্রিশ নম্বর পেয়ে উচ্চ মাধ্যমিক পাশ করে স্থানীয় কলেজে ভর্তি হয়েছিলেন অমিত। মাত্র চারদিন আগেই শেয়ার করেছিলেন কলেজের নবীনবরণ উৎসবের ভিডিও।

Advertisements

Advertisements

ইউটিউব থেকে উপার্জন করে মা, বাবা ও দিদির পাশে দাঁড়িয়েছিলেন অমিত। রাজ্য সরকারের তরফে বিশেষ ভাবে সক্ষম মানুষদের জন্য নির্ধারিত গাড়ি দেওয়া হয়েছিল তাঁকে। কিন্তু নিজে তিন মাস আগে স্কুটি কিনেছিলেন অমিত। মা-বাবাকে স্কুটিতে কর্মস্থলে পৌঁছে দেওয়া ছিল তাঁর নিত্য কাজ। বন্ধুদের সাথে বকখালি বেড়িয়ে এসেছেন স্কুটিতে। কলেজেও যেতেন স্কুটি চড়েই। কিন্তু মঙ্গলবার বিকালে একটি মোটর ভ্যানকে ওভারটেক করতে গিয়েই ঘটে দূর্ঘটনা। সেই সময় অমিতের সাথে তাঁর স্কুটিতে ছিলেন আরও দুই বন্ধু। নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে স্কুটি ধাক্কা মেরেছিল পাশের দোকানের পিলারে। অমিত ও তাঁর বন্ধুরা ছিটকে পড়ে গিয়েছিলেন স্কুটি থেকে। অমিতের মাথা থেঁতলে গিয়েছিল। স্থানীয় হাসপাতাল, কাকদ্বীপ সুপারস্পেশ্যালিটি হাসপাতাল ও ডায়মন্ড হারবার জেলা হাসপাতাল ঘুরে অবশেষে রাত এগারোটার সময় অমিতকে নিয়ে আসা হয় কলকাতার এসএসকেএম হাসপাতালে।

মাথায় মারাত্মক আঘাত লাগার কারণে অমিতের শারীরিক পরিস্থিতি প্রথম থেকেই ছিল আশঙ্কাজনক। বুধবার সকালে হল জীবন অঙ্কের যবনিকা পতন। প্রয়াত হলেন অমিত। অমিতের প্রয়াণে তাঁর অনুরাগীরা মর্মাহত। অপরদিকে বারবার উঠে আসছে বেশ কিছু প্রশ্ন। অমিত কেন অযথা ওভারটেক করে বিপদকে ডেকে আনলেন? কে অমিতকে স্কুটি কেনার বুদ্ধি দিয়েছিলেন? যদি স্কুটি না কিনতেন অমিত, তাহলে হয়তো তাঁকে এত তাড়াতাড়ি চলে যেতে হত না। অমিতের আত্মার শান্তি কামনার পাশাপাশি তাঁর মা-বাবার জন্য ‘হুপহাপ’ (HOOPHAAP)-এর তরফ থেকে রইল সমবেদনা।

whatsapp logo
Advertisements