২০০৯ থেকে ২০১৯—দশ বছরের বকেয়া ডিএ নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে চাপা ক্ষোভ চলছিল রাজ্যের প্রায় ১০ লক্ষ সরকারি কর্মী ও পেনশনভোগীদের মধ্যে। অবশেষে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে চলতি বছরের ২৭ জুনের মধ্যে সেই বকেয়ার ২৫% মেটাতে চলেছে রাজ্য সরকার। এই পরিশোধে সরকারকে নিতে হয়েছে বড়সড় ঋণ, যা ঘিরে নতুন করে প্রশ্ন উঠেছে অর্থনীতি পরিচালনার ধরণ নিয়ে।সুপ্রিম কোর্ট গত ১৬ মে এক অন্তর্বর্তী আদেশে জানিয়েছিল, মোট প্রাপ্য ৪১,৭৭০ কোটির ২৫% অর্থাৎ প্রায় ১০,৪২৫ কোটি কর্মীদের পরিশোধ করতে হবে ২৭ জুনের মধ্যে। এই অর্থ দিতে গিয়ে রাজ্য সরকার ইতিমধ্যে ৪,০০০ কোটি ঋণ তুলেছে দীর্ঘমেয়াদি বন্ড ইস্যুর মাধ্যমে, যার সুদের হার প্রায় ৭.১%। এছাড়া রাজ্য কোষাগারে ঘাটতি মেটাতে আরও ৩,৫০০ কোটি নেওয়া হয়েছে রিজার্ভ ব্যাংকের থেকে—যার মধ্যে ২,০০০ কোটি ২৫ বছরের ও ১,৫০০ কোটি ২৬ বছরের মেয়াদে নেওয়া হয়েছে।
অন্যদিকে, তথ্য বলছে কেন্দ্রীয় কর্মীরা যেখানে বর্তমানে ৫৫% ডিএ পান, সেখানে রাজ্যের কর্মীরা পান মাত্র ১৮%। এই বিশাল ফারাক, প্রায় ৩৭%, দীর্ঘদিন ধরে অসন্তোষের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। এখন সুপ্রিম কোর্টের হস্তক্ষেপে একাংশ বকেয়ার নিস্পত্তি হতে চলেছে, কিন্তু পুরো অর্থ কবে মেটানো হবে, তা স্পষ্ট নয়।বিতর্ক আরও ঘনীভূত হয়েছে এই কারণে যে, রাজ্যের সরকারি রিজার্ভ ফান্ডে রয়েছে প্রায় ১.১৬ লক্ষ কোটি টাকা। তা সত্ত্বেও ঋণ করে এই অর্থপরিশোধে নামায় প্রশাসনিক স্তরে প্রশ্ন উঠেছে—সত্যিই কি রাজ্যের তরফে বাজেট পরিচালনায় স্বচ্ছতা রয়েছে?বকেয়া ডিএ সংক্রান্ত পরবর্তী শুনানি হবে ২০২৫ সালের আগস্টে। সেই শুনানিতে আদালত বাকি ৭৫% অর্থ নিয়ে সিদ্ধান্ত জানাবে। তবে আপাতত কর্মীদের একাংশের মুখে হাসি, কারণ প্রথম কিস্তি পরিশোধের প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নের দিকে এগোচ্ছে সরকার।
প্রশ্নোত্তর (FAQs)
১. কেন ২৫% ডিএ-র টাকা ২৭ জুনের মধ্যে দিতে হবে?
সুপ্রিম কোর্টের অন্তর্বর্তী আদেশে নির্ধারিত হয়েছে এই সময়সীমা।
২. মোট বকেয়া ডিএ কত টাকা?
প্রায় ৪১,৭৭০ কোটি।
৩. সরকার কেন ঋণ নিল এই অর্থ দিতে?
পরিশোধের জন্য কোষাগারে পর্যাপ্ত তরল অর্থ না থাকায় বাজার থেকে ঋণ নিতে হয়েছে।
৪. রাজ্যের হাতে ১.১৬ লক্ষ কোটি থাকা সত্ত্বেও ঋণ কেন?
এই প্রশ্ন ঘিরেই তৈরি হয়েছে বিতর্ক, যা বাজেট ব্যবস্থাপনার ওপর আলো ফেলছে।
৫. পুরো বকেয়া কবে পরিশোধ হবে?
আগামী আগস্টে শুনানির পর বাকি ৭৫% অর্থ সংক্রান্ত সিদ্ধান্ত হবে।