সরকারি কর্মচারীদের বহু প্রতীক্ষিত বকেয়া ডিএ দেওয়ার সময়সীমা পেরিয়ে গেলেও টাকা মেলেনি। ফলে ফের চাপে পড়ল রাজ্য সরকার। ২০০৯ থেকে ২০১৯ সালের মধ্যে জমে থাকা মহার্ঘভাতা (Dearness Allowance) বকেয়ার ২৫ শতাংশ দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিল সুপ্রিম কোর্ট। সেই অর্থ ২০২৫ সালের ২৭ জুনের মধ্যে মিটিয়ে ফেলার কথা ছিল। তবে নির্ধারিত তারিখ পেরিয়ে গেলেও টাকা মেটানো হয়নি বলে স্বীকার করেছেন রাজ্যের অর্থ প্রতিমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য।
তিনি জানিয়েছেন, রাজ্য সরকার ইতিমধ্যেই সুপ্রিম কোর্টে এক ‘ইন্টারলোকিউটরি অ্যাপ্লিকেশন’ দাখিল করেছে। যেখানে বকেয়া দেওয়ার সময়সীমা বাড়ানোর আবেদন জানানো হয়েছে এবং দেরির কারণ হিসেবে রাজ্যের তীব্র আর্থিক সঙ্কটের কথা উল্লেখ করা হয়েছে। উল্লেখ্য, আগেই শীর্ষ আদালত নির্দেশ দিয়েছিল, রাজ্য সরকারকে মোট বকেয়ার ২৫ শতাংশ ছয় সপ্তাহের মধ্যে দিতে হবে। কিন্তু সময়সীমার শেষ দিন ২৭ জুন পার হয়ে গেলেও সেই অর্থ মেটানো হয়নি। এই অবস্থায় আইনি চাপ এড়াতে রাজ্য সরকার আদালতের দ্বারস্থ হয়েছে।
চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য জানান, রাজ্য সরকার সুপ্রিম কোর্টের প্রতি পূর্ণ সম্মান রেখে এই দেরির কারণ ব্যাখ্যা করেছে। রাজ্যের হাতে পর্যাপ্ত আর্থিক সংস্থান নেই, ফলে সময়মতো টাকা মেটানো সম্ভব হয়নি। তবে সরকারের তরফে জানানো হয়েছে, পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলেই বকেয়া ডিএ মিটিয়ে দেওয়া হবে। এই মামলার পরবর্তী শুনানি হতে চলেছে আগস্ট ২০২৫-এ। ততদিনে সুপ্রিম কোর্ট রাজ্যের যুক্তি মেনে নেয় কিনা, অথবা কোনও নতুন নির্দেশ দেয় কিনা, তা নিয়েই এখন উদ্বেগে রয়েছেন রাজ্যের কয়েক লক্ষ কর্মচারী ও পেনশনভোগী।
সরকারি মহলে এই বকেয়ার অঙ্ক হাজার হাজার কোটি টাকার বলে অনুমান করা হচ্ছে। ফলে এই অর্থ এককালীন মেটানো রাজ্যের পক্ষে যথেষ্ট চাপের বলে মনে করছেন প্রশাসনিক বিশেষজ্ঞরা। এর ফলে রাজ্য বাজেটের উপর বড় প্রভাব পড়তে পারে বলেই ধারণা। অর্থনীতিবিদদের একাংশ বলছেন, আদালতের নির্দেশ কার্যকর না হলে কর্মচারী মহলে অসন্তোষ আরও বাড়বে। অন্যদিকে, সময়মতো বকেয়া মেটাতে না পারলে রাজ্যের বিরুদ্ধে আরও কঠোর ব্যবস্থা নিতে পারে আদালত।
জানুন গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নের উত্তর (FAQ)
১. রাজ্য সরকার কত শতাংশ বকেয়া ডিএ দিতে ব্যর্থ হয়েছে?
→ ২৫ শতাংশ বকেয়া ডিএ এখনও পর্যন্ত দেওয়া হয়নি।
২. সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ অনুযায়ী টাকা কবে দেওয়ার কথা ছিল?
→ ২০২৫ সালের ২৭ জুনের মধ্যে অর্থ মেটাতে বলা হয়েছিল।
৩. কেন সময়মতো টাকা মেটানো সম্ভব হয়নি?
→ রাজ্য সরকার জানিয়েছে, আর্থিক ঘাটতির কারণে সময়মতো অর্থ দেওয়া যায়নি।
৪. আদালতে কী ধরনের আবেদন জানানো হয়েছে?
→ রাজ্য সরকার একটি ইন্টারলোকিউটরি আবেদন করে অতিরিক্ত সময় চেয়েছে এবং দেরির কারণ ব্যাখ্যা করেছে।
৫. মামলার পরবর্তী শুনানি কবে হবে?
→ আগামী আগস্ট মাসে মামলার শুনানি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।