আর্থিক সংকটের আবহে আবারও আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে পশ্চিমবঙ্গের রাজ্য সরকারি কর্মীদের প্রিয়তা ভাতা (DA) বকেয়া ইস্যু। সুপ্রিম কোর্টের স্পষ্ট নির্দেশ সত্ত্বেও এখনো পর্যন্ত ২০০৯ থেকে ২০১৯ সালের মধ্যে জমে থাকা বকেয়ার ২৫% অর্থও জমা পড়েনি। ফলে মামলা ঘিরে ফের জটিলতা তৈরি হয়েছে। ২০২৫ সালের ১৬ মে, দেশের সর্বোচ্চ আদালত নির্দেশ দেয় রাজ্য সরকারকে তিন মাসের মধ্যে বকেয়া DA-এর এক-চতুর্থাংশ অর্থ প্রদান করতে হবে। পরিসংখ্যান অনুযায়ী, রাজ্যের মোট দায় প্রায় ৪১,৭৭১ কোটি, যার ২৫ শতাংশ অর্থাৎ প্রায় ১০,৪৪৩ কোটি সময়মতো মেটানো উচিত ছিল। কিন্তু নির্ধারিত সময়সীমা ৩০ জুন পার হয়ে গেলেও টাকা জমা পড়েনি। এই পরিস্থিতিতে রাজ্য সরকার সুপ্রিম কোর্টে ৬ মাসের অতিরিক্ত সময় চেয়ে রিভিউ আবেদন জানিয়েছে। সেইসঙ্গে আর্থিক সঙ্কটের যুক্তি তুলে ধরে আদালতে সরাসরি অর্থ জমা দেওয়ার প্রস্তাবও দেওয়া হয়েছে। যদিও এতে বিরোধ মেটেনি। বরং রাজ্যের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলে দুটি কর্মচারী সংগঠন ‘আদালত অবমাননার’ অভিযোগে মামলা দায়ের করেছে।
বর্তমানে রাজ্য সরকারি কর্মীরা ১৮ শতাংশ DA পাচ্ছেন, যেখানে কেন্দ্রীয় কর্মীদের DA হার ৫৫ শতাংশ। এই ফারাক নিয়েই দীর্ঘদিন ধরে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন রাজ্য সরকারি কর্মীরা। মামলার শুনানি আপাতত ৮ আগস্ট নির্ধারিত থাকলেও, আদালত ১৪ জুলাই থেকেই খুলে যাওয়ায় সম্ভাবনা রয়েছে তার আগেই একটি প্রাথমিক শুনানি শুরু হতে পারে। এই মামলার রায় কেবল আর্থিক দিক নয়, প্রশাসনিক দায়বদ্ধতার ক্ষেত্রেও বড় বার্তা দিতে পারে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্ট মহল। সরকারি কর্মীদের বকেয়া আদায়ের দাবি যেমন ন্যায়সঙ্গত, তেমনি সরকারের পক্ষেও রয়েছে বাজেটঘাটতির বাস্তবতা। ফলে সুপ্রিম কোর্টের পরবর্তী পদক্ষেপের দিকেই নজর সবার।
প্রশ্নোত্তর (FAQs):
১. DA মামলায় সর্বশেষ সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ কী ছিল?
→ সরকারকে ২০০৯–২০১৯ মেয়াদের প্রিয়তা ভাতা (DA) বকেয়ার ২৫% তিন মাসের মধ্যে পরিশোধের নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল।
২. মোট DA দায় কতটুকু, আর ২৫% মানে কত অর্থ?
→ মোট দায় ৪১,৭৭১ কোটি, যার ২৫% অংশ ১০,৪৪৩ কোটি।
৩. রাজ্য কেন সময় বৃদ্ধির আবেদন করল?
→ আর্থিক সংকটের যুক্তি দেখিয়ে রাজ্য ৬ মাস সময় চেয়েছে এবং টাকা আদালতে সরাসরি জমা দেওয়ার প্রস্তাব দিয়েছে।
৪. কর্মী সংগঠন কেন আদালত অবমাননার মামলা করল?
→ নির্দেশ মোতাবেক টাকা জমা না হওয়ায় সংগঠনগুলো সুপ্রিম কোর্টে ‘contempt of court’ মামলা দায়ের করেছে।
৫. পরবর্তী শুনানি কবে হতে পারে?
→ ৮ আগস্ট শুনানির দিন নির্ধারিত থাকলেও, আদালত খুলছে ১৪ জুলাই থেকে। তার আগেই শুনানির সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে।