বজ্রপাত, ঝোড়ো হাওয়া আর বিক্ষিপ্ত বৃষ্টিতে ভিজতে চলেছে গোটা বাংলা। আগামী পাঁচ দিন রাজ্যের দক্ষিণ ও উত্তর অংশে তীব্র আবহাওয়াগত পরিবর্তনের পূর্বাভাস দিয়েছে আবহাওয়া দফতর। ইতিমধ্যেই কিছু জেলায় ৫০ কিমি প্রতি ঘণ্টা গতিবেগে হাওয়া বইতে শুরু করেছে, যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।মৌসুমি পরিস্থিতির হঠাৎ এই রূপ পরিবর্তনের পিছনে রয়েছে ওড়িশা থেকে অন্ধ্র উপকূল পর্যন্ত বিস্তৃত উচ্চ-স্তরের ঘূর্ণাবর্ত ও নিম্নচাপ অক্ষরেখা। এর ফলেই রাজ্যজুড়ে তৈরি হয়েছে ব্যাপকভাবে অস্থিরতা, যা বৃষ্টিপাত ও বজ্র-বিদ্যুৎ ঘটনার সংখ্যা বাড়িয়ে তুলতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।
দক্ষিণবঙ্গের বর্ধমান, বীরভূম ও মুর্শিদাবাদ জেলায় আগামী কয়েকদিনের মধ্যে ৫০-৬০ কিমি প্রতি ঘণ্টা গতির ঝোড়ো হাওয়ার সঙ্গে বজ্রপাতের সম্ভাবনা প্রবল। পাশাপাশি নদিয়া, পুরুলিয়া, বাঁকুড়া, ঝাড়গ্রাম, দুই মেদিনীপুর ও দুই ২৪ পরগনায় বইতে পারে ৪০-৫০ কিমি প্রতি ঘণ্টা বেগে ঝোড়ো হাওয়া। এই সময়কালে হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টিপাতও দেখা যেতে পারে।ইতিমধ্যেই দক্ষিণবঙ্গের একাধিক জেলায় গত ২৪ ঘণ্টায় ৩১-৫০ কিমি বেগে ঝোড়ো হাওয়া রেকর্ড করা হয়েছে। উত্তরবঙ্গের ক্ষেত্রে বৃষ্টিপাতের পরিমাণ তুলনামূলকভাবে কম হতে পারে, তবে হালকা বৃষ্টির সঙ্গে হাওয়া বইবে বলেই পূর্বাভাস।
আবহাওয়ার এই রূপান্তরজনিত পরিস্থিতিতে প্রশাসন থেকেও সতর্কতা অবলম্বনের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সাধারণ মানুষকেও যতটা সম্ভব বাড়ির ভিতরে থাকার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। বিশেষ করে কৃষক, ট্রেন যাত্রী ও খোলা জায়গায় যাঁরা কাজ করেন, তাঁদের ক্ষেত্রে বাড়তি সতর্কতা অবলম্বন জরুরি।বাজার, যানবাহন, বিদ্যুৎ সংযোগ—সব ক্ষেত্রেই এই ঝোড়ো হাওয়া ও বৃষ্টির প্রভাব পড়তে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। তাই আগাম সতর্কতাই এই পরিস্থিতি মোকাবিলার মূল চাবিকাঠি হয়ে উঠতে পারে।
প্রশ্নোত্তর (FAQs):
১. এই ঝোড়ো হাওয়ার কারণ কী?
→ উচ্চ স্তরের ঘূর্ণাবর্ত ও অন্ধ্র উপকূল পর্যন্ত বিস্তৃত নিম্নচাপ অক্ষরেখা এই পরিস্থিতির মূল কারণ।
২. কোন জেলাগুলি সবচেয়ে বেশি প্রভাবিত হতে পারে?
→ বর্ধমান, বীরভূম, মুর্শিদাবাদ, নদিয়া, পুরুলিয়া, বাঁকুড়া, ঝাড়গ্রাম, দুই মেদিনীপুর ও দুই ২৪ পরগনা।
৩. কতদিন এই আবহাওয়ার প্রভাব থাকবে?
→ পরবর্তী পাঁচ দিন রাজ্যজুড়ে বজ্রপাত, বৃষ্টিপাত ও ঝোড়ো হাওয়া চলতে পারে।
৪. সাধারণ মানুষ কীভাবে সাবধান থাকবে?
→ খোলা জায়গায় না যাওয়া, বৈদ্যুতিক তার বা গাছের নিচে দাঁড়ানো থেকে বিরত থাকা জরুরি।
৫. কৃষিকাজে এই আবহাওয়া কতটা প্রভাব ফেলতে পারে?
→ বজ্রপাত ও ভারী হাওয়ার কারণে ফসলের ক্ষতির আশঙ্কা রয়েছে; তাই আগেভাগেই জমি সুরক্ষার ব্যবস্থা করা প্রয়োজন।