উত্তর বঙ্গোপসাগরের উপর তৈরি হয়েছে নতুন এক সুস্পষ্ট নিম্নচাপ। আগামী ২৪ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে সেটি স্থলভাগে প্রবেশ করতে পারে পশ্চিমবঙ্গ ও উত্তর ওড়িশার উপকূলের দিক দিয়ে। ইতিমধ্যেই আবহাওয়া দফতর জানিয়েছে, এই সিস্টেমটি আগামী দিনে আরও শক্তি বাড়িয়ে ডিপ্রেশনে পরিণত হতে পারে। এর প্রভাবে দক্ষিণবঙ্গের একাধিক জেলায় বৃষ্টির দফা দফা দাপট চলবে আগামী কয়েকদিন। গত ১৭ থেকে ২৩ জুলাইয়ের মধ্যে দক্ষিণবঙ্গে মাঝারি থেকে ভারী বৃষ্টি হয়েছে। আলিপুরদুয়ার সহ কিছু উত্তরের জেলায় ২০ সেন্টিমিটারেরও বেশি বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। তবে এই সময়ে রাজ্যের সামগ্রিক বৃষ্টিপাত ছিল ৪০ শতাংশ কম — মাত্র ৫৮.৫ মিমি। জুনের ১ তারিখ থেকে ২৩ জুলাই পর্যন্ত পশ্চিমবঙ্গে মোট বৃষ্টিপাত হয়েছে প্রায় ৫৯৭.৭ মিমি, যা মরসুমের গড়ের তুলনায় সামান্য (১ শতাংশ) কম।
অন্যদিকে, কলকাতার বৃষ্টির হিসেব একেবারেই অন্যরকম। চলতি জুলাই মাসে ইতিমধ্যেই শহরে পাঁচটি নিম্নচাপের প্রভাব পড়েছে। এর ফলে শহরে রেকর্ড করা হয়েছে ৬১১.৯ মিমি বৃষ্টিপাত, যা স্বাভাবিক গড়ের (৫৫২ মিমি) তুলনায় ১১ শতাংশ বেশি। দক্ষিণবঙ্গেও এই সময়ে গড় বৃষ্টিপাতের তুলনায় ১৯ শতাংশ বেশি বৃষ্টি হয়েছে। এই সপ্তাহেই জুলাই মাসের ষষ্ঠ নিম্নচাপ ঢুকতে চলেছে রাজ্যে। আবহাওয়া অফিস জানাচ্ছে, ২৪ জুলাই থেকে ২৮ জুলাই পর্যন্ত দক্ষিণবঙ্গে আরও বৃষ্টি বাড়বে। কলকাতা এবং আশেপাশের এলাকায় বৃষ্টি থাকবে নিয়মিত। সেইসঙ্গে তাপমাত্রা কিছুটা হ্রাস পাওয়ায় অনুভূত হবে তুলনামূলক শীতলতা। আগামী ৩০ জুলাইয়ের দিকে বৃষ্টির তীব্রতা সর্বোচ্চ হতে পারে বলে অনুমান। ঘন মেঘলা আকাশ, বজ্রবিদ্যুৎ সহ ভারী বৃষ্টিপাত এবং মাঝারি থেকে ঝড়ো হাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে উপকূল ও দক্ষিণবঙ্গের বিস্তীর্ণ অঞ্চলে।
প্রশ্নোত্তর
১. এই নিম্নচাপ অঞ্চল কীভাবে পশ্চিমবঙ্গের আবহাওয়ায় প্রভাব ফেলবে?
→ এই সিস্টেমটি বৃষ্টিপাত বাড়াবে, উপকূলবর্তী জেলাগুলিতে সমুদ্র হবে উত্তাল, এবং গ্রীষ্মের দাপট কমিয়ে আর্দ্রতা ও ঠান্ডা আবহাওয়া ফিরিয়ে আনবে।
২. গত সপ্তাহে কোথায় সবচেয়ে বেশি বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে?
→ উত্তরবঙ্গের আলিপুরদুয়ার ও জলপাইগুড়িতে দিনে ২০ সেন্টিমিটারেরও বেশি বৃষ্টি হয়েছে।
৩. ওই সময়কালের আবহাওয়া সামগ্রিকভাবে স্বাভাবিক ছিল কি?
→ না, সাপ্তাহিক ও মৌসুমি বৃষ্টিপাত স্বাভাবিকের চেয়ে কিছুটা কম রেকর্ড করা হয়েছে রাজ্যে।
৪. কলকাতায় কী ধরনের আবহাওয়ার পরিস্থিতি চালু থাকবে?
→ নিয়মিত বৃষ্টি চলবে, সঙ্গে থাকবে হালকা ঠান্ডা পরিবেশ; কখনও কখনও বৃষ্টির তীব্রতা বাড়তে পারে।
৫. আগামী দিনগুলিতে কী ধরনের সতর্কতা নেওয়া উচিত?
→ সমুদ্র উত্তাল থাকতে পারে, বজ্রসহ বৃষ্টিতে ট্র্যাফিক বিঘ্ন ঘটতে পারে, তাই মাছ ধরায় নিষেধাজ্ঞা আরোপের পরামর্শও দেওয়া হয়েছে।