ধর্মঘট হলেও চলবে অফিস, হাজিরা বাধ্যতামূলক—নবান্নের কড়া বার্তায় ফের উত্তাল রাজ্য সরকারি দফতর। আগামী ৯ জুলাই ঘোষণা করা ধর্মঘটকে ঘিরে রাজ্য সরকার জানিয়ে দিল, সরকারি কর্মীদের সেই দিন অবশ্যই অফিসে উপস্থিত থাকতে হবে। এর ব্যতিক্রম ঘটলে কাটা পড়বে এক দিনের বেতন, এবং প্রয়োজনে কর্মজীবনের হিসাব থেকেও বাদ পড়তে পারে ওই দিনটি। নবান্নের তরফে জারি হওয়া নির্দেশিকায় স্পষ্টভাবে জানানো হয়েছে, কোনও অবস্থাতেই ক্যাজুয়াল লিভ, হাফ ডে কিংবা অন্যান্য সাধারণ ছুটি গ্রহণযোগ্য নয়। কেবলমাত্র নির্দিষ্ট কয়েকটি ক্ষেত্রেই ছুটির অনুমতি মিলতে পারে—যেমন হাসপাতাল ভর্তি থাকা, পরিবারের মৃত্যুজনিত পরিস্থিতি, গুরুতর অসুস্থতা, পূর্বনির্ধারিত ছুটি (৮ জুলাই), অথবা মাতৃত্বকালীন বা সন্তানের দেখভালের কারণ।
অন্যথায় কোনও কর্মী যদি এই দিন অনুপস্থিত থাকেন, তাহলে তার বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ নেওয়া হবে। শুধু বেতন কাটা নয়, সরকারি নিয়ম ভঙ্গের অভিযোগ এনে কারণ দর্শানোর নোটিসও পাঠানো হবে, যার জবাব জমা দিতে হবে ৩১ জুলাইয়ের মধ্যে। উল্লেখ্য, এই ধরনের নির্দেশিকায় নতুন কিছু নেই। অতীতেও ধর্মঘট বা বনধের দিনে সরকারি কর্মীদের উপস্থিতি বাধ্যতামূলক করার নির্দেশ জারি হয়েছে। তবে এবারের নির্দেশ ঘিরে আবারও তৈরি হয়েছে বিতর্ক। কর্মীদের একাংশ সরকারের পদক্ষেপকে ‘অতিলজ্জা’ ও ‘স্বৈরাচারী’ আখ্যা দিয়ে তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। তাঁদের মতে, গণতান্ত্রিক দেশে ধর্মঘটে অংশ নেওয়া একজন কর্মচারীর অধিকার। আর তা হরণ করা মানে মৌলিক অধিকার খর্ব করা।
অন্যদিকে, সরকারের যুক্তি—ধর্মঘটের নামে পরিষেবা ব্যাহত হওয়া চলবে না। অফিস চালু রাখতে হলে সবারই দায়িত্ব নিতে হবে। সুশৃঙ্খল প্রশাসনিক পরিবেশ বজায় রাখার স্বার্থেই এই কড়াকড়ি প্রয়োজন। অর্থ দফতর স্পষ্ট করেছে, অনুপস্থিতি মানেই শৃঙ্খলাভঙ্গ, আর সেটাই সরকার মেনে নিতে রাজি নয়। দেখা যাক, ৯ জুলাই ঠিক কতজন কর্মী এই নির্দেশ মান্য করেন, আর কতজন থাকেন অনুপস্থিত।
প্রশ্নোত্তর (FAQs):
১. এই নির্দেশ কবে থেকে কার্যকর হবে?
→ ৯ জুলাই সকাল থেকে সরকারি দফতরগুলিতে এই নির্দেশ লাগু হবে।
২. কী কী ছুটি গ্রহণযোগ্য?
→ হাসপাতাল ভর্তি, মৃত্যুর ঘটনা, গুরুতর অসুস্থতা, পূর্বনির্ধারিত ছুটি (৮ জুলাই), মাতৃত্বকালীন ছুটি ও সন্তানের দেখভাল সংক্রান্ত ছুটি।
৩. নির্ধারিত ছাড়া কেউ না এলে কী হবে?
→ এক দিনের বেতন কাটা হতে পারে, কর্মজীবন থেকে দিনের বাদ এবং কারণ দর্শানোর নোটিস পাঠানো হবে।
৪. নোটিসের জবাব কীভাবে ও কখন জমা দিতে হবে?
→ সরকারি কর্মীকে ৩১ জুলাই-এর মধ্যে নবান্নে নোটিসের যুক্তিযুক্ত জবাব পাঠাতে হবে।
৫. এই সিদ্ধান্তে কর্মীদের প্রতিক্রিয়া কেমন?
→ একাংশ সরকারের সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানালেও, অন্য অংশ তা ‘অধিকার হরণ’ হিসেবে দেখছেন।