Lifestyle: একাদশীর দিন ভাত খাওয়া কেন অনুচিত জানেন!
বাংলা ক্যালেন্ডারে নানান গ্রহ ও নক্ষত্রের প্রভাব বেশ উল্লেখযোগ্য। মূলত গ্রহ ও নক্ষত্রের অবস্থানের উপরে ভিত্তি করেই তৈরি হয় নানা দিন, তিথি ও লগ্নের হিসাব। এর মাঝে একটি গুরুত্বপূর্ণ তিথি হল একাদশী। এক মাসে দুই পক্ষ থাকে। আর দুই পক্ষে দুবার আসে একাদশী। এই দিনটির এক বিশেষ তাৎপর্য রয়েছে। এই দিনে বাঙালির ঘরে ঘরে শ্রী নারায়ণের পুজো করার রীতি রয়েছে। কেউ কেউ আবার দিনটিতে উপবাস করেন। বিশেষত এমন মহিলারা যাদের স্বামী পরলোকগমন করেছেন, অর্থাৎ বিধবা মহিলারা আজো এই একাদশীতে নির্জলা উপবাস করেন। বিধবা মহিলা ছাড়াও অনেকেই দিনটি পালন করেন। কিন্তু কেন পালন করা হয় দিনটি? এদিন ভাত খেলে কিই বা হবে? কেন এই একাদশী পালনের রীতি রয়েছে? দেখুন বিস্তারিত।
হিন্দুশাস্ত্র মতে, একাদশীর দিন উপবাস করলে শরীর ও মন দুইই শুদ্ধ থাকে। শরীরে বৃদ্ধি পায় কর্মক্ষমতা। মনেও ঈশ্বরচেতনা ও আধ্যাত্মিক চিন্তাভাবনার বিকাশ ঘটে। ফলে মানুষের সার্বিক সমৃদ্ধি হয় বলে বিশ্বাস হিন্দুদের। তবে অনেকেই উপবাস করতে পারেন না। কিন্তু তারা এই দিনটিতে ভাত খাননা। ভাত না খাওয়ার পিছনেও রয়েছে একটি কারণ। ভাতকে সাধারণত রসালো খাবার বলেই মনে করা হয়। আর একাদশীর দিন ভাত না খেলে শরীরে রসের ভারসাম্য বজায় থাকে। এর ফলে শরীরে সতেজতা বজায় থাকে। মন ও ইন্দ্রিয়ের উপর নিয়ন্ত্রণ বৃদ্ধি পায়।
এ প্রসঙ্গে একটি পৌরাণিক গল্পও বেশ প্রচলিত। দেবী পুরাণে রয়েছে এই গল্পের উল্লেখ। সেখানে বলা হয়েছে, একবার মাতা শক্তির রাগ থেকে বাঁচতে মহর্ষি মেধা নিজের শরীর ত্যাগ করে যোগবলে মাটিতে মিশে যান। পরে তিনি ধানের মতো শস্য হয়ে জন্ম নেন। এই ঘটনা একাদশী তিথিতে ঘটেছিল। সেই কারণে একাদশী তিথিতে ধান ও এরকম শস্য খেতে বারণ করা হয়। এদিন চাল অর্থাৎ ভাত খাওয়া মানে মহর্ষি মেধার শরীর গলার্ধকরণ করা। এছাড়াও একাদশীতে বিষ্ণুর উপাসনা করার কথা বলা হয়। সেজন্যও এই দিনটিতে ভাত খেতে বারণ করা হয়।
তবে আজকাল অনেকেই এসব তিথি নক্ষত্রে তেমন একটা বিশ্বাস রাখেন না। তাই এসব দিন পালনের রীতি আজকাল অনেক কম মানুষই মেনে চলেন। কিন্তু আজও অনেকের বিশ্বাস, এই দিনগুলির বিশেষ গুরুত্ব ও প্রভাব বর্তমান আমাদের মানবজীবনে।
Disclaimer: প্রতিবেদনটি সম্পূর্ণ তথ্যভিত্তিক। যেকোনো সমস্যায় আগে বিশেষজ্ঞর পরামর্শ নিন।