Bhojpuri Song: চিন্টুর কাছে শরীরের খিদে মেটাতে চাইলেন পাবনী, ভুলেও বাচ্চাদের সামনে দেখবেন না
একসময় কলকাতা তথা বাংলা জুড়ে ছিল প্রচুর প্রেক্ষাগৃহ যেখানে ভোজপুরি ফিল্ম দেখানো হত। কিছু গ্রামীণ অঞ্চলে সকলের অগোচরে চুল্লুর ঠেকে বাজত ভোজপুরি গান। কারণ ওই অঞ্চলগুলিতে উত্তর ভারতের মানুষের তুলনায় বাঙালিদের দেখা মেলে বেশি। কিন্তু কলকাতার ধর্মতলা, বড়বাজার ও উত্তর কলকাতার বিভিন্ন অংশে উত্তর ভারতীয় শ্রমিকরা এখনও ভিড় জমান। অনেকে রয়ে গিয়েছেন বংশ পরম্পরায়। তাঁরাই মূলতঃ ধর্মতলার কিছু প্রেক্ষাগৃহে নাইট শোয়ে ভিড় জমাতেন ভোজপুরি ফিল্ম দেখতে। পর্দায় নিরাহুয়ার সাথে আম্রপালির রোম্যান্টিক মুহূর্তের সাথে নিজেদের আত্মস্থ করতে পারতেন কলকাতাবাসী উত্তর ভারতীয় শ্রমিকরা। তবে মাল্টিপ্লেক্স নিয়ে এল বিরাট পরিবর্তন। ছোট প্রেক্ষাগৃহগুলি ঝাঁপ ফেলল। মাল্টিপ্লেক্সের ঠান্ডা হাওয়ায়, পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন প্রেক্ষাগৃহে ধূমায়িত কফির কাপে চুমুক দিতে দিতেই তথাকথিত ক্রিয়েটিভ ফিল্ম দেখতে পছন্দ করেন বর্তমান দর্শক। ভোজপুরি ফিল্ম আপাতত সীমাবদ্ধ ইউটিউবে ও উত্তর ভারতের অঞ্চলগুলিতে। কিছু ভোজপুরি ফিল্মের দেখা মেলে ওটিটিতেও। তবে এর ফলে ভোজপুরি ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রি পৌঁছে গিয়েছে আরও বেশি দর্শকের কাছে। উত্তর ভারতের দর্শকরা ছাড়াও বহু প্রবাসী ভারতীয় আছেন যাঁরা চোখ রাখেন ভোজপুরি ফিল্ম ও মিউজিক ভিডিওয়।
ভোজপুরি ফিল্মে বর্তমান প্রজন্মের তারকাদের উদয় হয়েছে। তাঁদের মধ্যে অন্যতম প্রদীপ পান্ডে (Pradeep Pandey) ও পাবনী (Pavani)। দীনেশ লাল যাদব নিরাহুয়া (Dinesh Lal Yadav Nirahua), আম্রপালি দুবে (Amrapali Dubey), খেসারি লাল যাদব (Kheshari lal Yadav), মোনালিসা (Monalisha)-দের পাশাপাশি নজর কাড়ছেন এই জুটিও। তবে প্রদীপ স্টারকিড। তিনি ভোজপুরি ফিল্মের প্রযোজক ও পরিচালক রাজকুমার আর.পান্ডে (Rajkumar R. Pandey)-র পুত্র। এই কারণে মুম্বইয়ের মাটিতে জন্ম হওয়া সত্ত্বেও বলিউডের পরিবর্তে ভোজপুরি ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিকেই বেছে নিয়েছেন তিনি। 2019 সালে প্রদীপের ডেবিউ ফিল্ম ‘দিওয়ানা’ তাঁকে যথেষ্ট জনপ্রিয়তা দিয়েছিল। একই বছর রিলিজ করে তাঁর আরও একটি ফিল্ম ‘নায়ক’। এই ফিল্মটিও ছিল ব্লকবাস্টার।
‘চিন্টু’ নামে পরিচিত প্রদীপ অভিনয়ের পাশাপাশি নাচেও সমান দক্ষ। প্রদীপ ও পাবনী জুটির ফিল্ম ‘নায়ক’-এর গান ‘ফেভারেট ভইল বা জওয়ানি’ বর্তমান প্রজন্মের ভোজপুরি দর্শকদের কাছে যথেষ্ট বিখ্যাত হয়ে উঠেছে। গানের শুরুতে পাবনী চুম্বন করেন প্রদীপকে। তিনি নিজের করে পেতে চান নায়ককে। প্রদীপ তাঁকে এড়িয়ে যাওয়ার অভিনয় করলেও একসময় তাঁর ডাকে সাড়া দেন। কিন্তু নিরাহুয়া, আম্রপালি বা খেসারিলালদের ফিল্মি গানগুলির মতো প্রদীপ ও পাবনীর এই গানের ভিডিও তথাকথিত উষ্ণতাময় ভোজপুরি গ্রামীণ ভিডিও নয়। এটির মধ্যে রয়েছে যথেষ্ট আধুনিকতা ও নাগরিকত্বের ছোঁয়া। প্রদীপ ও পাবনীর নৃত্যশৈলীও যথেষ্ট শহুরে। তবু এই গানটির ভিউ অতিক্রম করে গিয়েছে 2.9 মিলিয়ন।
অর্থাৎ বোঝা যাচ্ছে, ধীরে ধীরে অনেকটাই পরিবর্তিত হয়েছেন দর্শকদের একটি বড় অংশ। তাঁরা অবশ্যই পছন্দ করছেন নিরাহুয়া ও আম্রপালিদের, কিন্তু চাহিদা বাড়ছে প্রদীপ ও পাবনীদের মতো ‘পলিশড’ শিল্পীদের। গানের ভিডিওর কমেন্ট সেকশনে নেটিজেনদের কমেন্টেই বোঝা যাচ্ছে চিন্টুর প্রতি তাঁদের ভালোবাসা। গানটিও যথেষ্ট পছন্দ হয়েছে তাঁদের। সঠিক পরিবর্তন সবসময়ই ইতিবাচক তা আরও একবার প্রমাণ করে দিলেন প্রদীপ ও পাবনী।