অশরীরীদের ঘোরাফেরা টের পেয়েই কি মাঝরাতে কাঁদে কুকুর? আসল কারণ শুনলে অবাক হবেন
মাঝরাতে আচমকা কেঁদে উঠল কুকুর। ঘুম থেকে ধড়ফড় করে উঠে বসলেন। কুকুরের কান্না শুনে ভাবলেন কোনো বিপদ আসন্ন। কিংবা হয়তো কোনও অশরীরী আত্মা ঘোরাফেরা করছে আপনার বাড়ির আশেপাশে। ব্যাপারটা কেমন গা ছমছমে না? অনেকেই ঠিক এভাবেই ভয় পেয়ে যান মাঝরাতে কুকুরের কান্না শুনে। কিন্তু ঠিক কি কারণে মাঝরাতেই কেঁদে ওঠে কুকুর? আসন্ন কোনো বিপদের সংকেত পেয়েই কি এমনটা করে তারা? নাকি কোনো অশরীরী আত্মা ঘোরাফেরা করে তাদের আশেপাশে? আত্মার অস্তিত্ব কিভাবে বুঝতে পারে এই অবলা প্রাণী? জেনে নিন।
আমাদের সমাজে অনেক ভাবনা বা ধারণা পোষিত হয়ে আছে যুগ যুগ ধরে। সেগুলি বছরের পর বছর ধরে মেনে চলেছে মনুষ্য সমাজ। তেমনই একটি অদ্যিকালের ধারণা মানুষের মধ্যে কাজ করে কুকুরের কান্নাকে ঘিরে। অনেকেই বিশ্বাস করেন যে কুকুর কাঁদা মানে কারও মৃত্যু আসন্ন। আবার অনেকের মতে প্রাকৃতিক দুর্যোগ বা আবহাওয়ার পরিবর্তন সবার আগে টের পায় পশু-পাখিরাই। তাই এলাকায় কুকুরের কান্নাকে তাঁরা সেই ভাবেই ব্যাখ্যা করেন। আবার জ্যোতিষী শাস্ত্র মতে, কুকুর তখনই কাঁদে যখন আশপাশে কোনো ‘অশরীরী আত্মা’ ঘুরে বেড়ায়।
বিজ্ঞান অবশ্য বিষয়টিকে অন্যভাবে ব্যাখ্যা করে। আসন্ন মৃত্যু কিংবা প্রাকৃতিক দুর্যোগ কিংবা অশরীরীর অস্তিত্বে বিজ্ঞান বিশ্বাস করে না। অনেক বিশেষজ্ঞ এই বিষয়ে অনেক মতামত দিয়েছেন। প্রথমত, বেশিরভাগ কুকুররাই সঙ্গীহীনভাবে থাকতে পছন্দ করে না। তাই মাঝরাতে তারা একা থাকলেই সঙ্গীদের ডাকার জন্য এমনভাবে চিৎকার করে, যা শুনে ‘কান্না’ বলে মনে হয়। এছাড়াও কুকুর কিন্তু এরকম শব্দ করে কাঁদে না মোটেই। বরং তারা সঙ্গীদের উদ্দেশ্যে একত্রিত হওয়ার জন্য এভাবে বিশেষ বার্তা দেওয়ার চেষ্টা করে। যা আপাত কর্ণে শুনে মনে হয় কুকুর কাঁদছে।
অন্যদিকে পশুপ্রেমী বা পশু-পাখিদের চিকিৎসকদের দাবি আবার অন্যরকম। তাদের মতে, কুকুরের চোট-আঘাত লাগলে, ব্যথা, যন্ত্রণা হলে বা শরীরে কোনো কষ্ট হলে তা জানাতেই ওইভাবে আওয়াজ করে সঙ্গীদের ডাকে সাহায্যের জন্য। একথা বিজ্ঞানও বলে থাকে। বিজ্ঞানের মতে, কুকুরের কান্না আসলে কুকুরের ডাক। এভাবে শব্দ করে অন্যান্য কুকুরের কাছে নিজের বার্তা পৌঁছে দিতে সক্ষম হয় একটি কুকুর। আবার আরেকদল বিজ্ঞানীর মতে, রাতে কুকুরের কান্নার অন্যতম কারণ তাদের বয়স। কুকুর যখন বয়সের সঙ্গে দুর্বল হয়ে পড়ে, তখন তারা আরও একাকী বোধ করতে শুরু করে। এটি তাদের দুঃখ দেয়। রাতে যখন এই একাকিত্ব ও দুঃখ বাড়তে থাকে, তখন তারা চিৎকার করে তাদের কষ্ট প্রকাশ করে। তবে বিষয়টি নিয়ে গবেষণা হয়েছে বিস্তর।