দুজন ভুল পথে চলা, হতাশাগ্রস্ত মানুষ হঠাৎই জীবনের এক বাঁকে খুঁজে পায় একে অপরকে। আর তারপর তাদের জীবনে আসে বহু প্রতীক্ষিত ‘হ্যাপি এন্ডিং’। না, এ শুধু সিনেমার গল্পেই হয় এমনটা কিন্তু নয়। বাস্তবেও দেখা গিয়েছে এমন গল্প। খাস টলিপাড়াতেই এমন উদাহরণ রয়েছে চোখের সামনেই। বাংলা ইন্ডাস্ট্রির দুই খ্যাতনামা অভিনেতা অভিনেত্রী কৌশিক বন্দ্যোপাধ্যায় (Kaushik Banerjee) এবং লাবণী সরকার (Laboni Sarkar)। শুরুটা ভুল মানুষের সঙ্গে হলেও শেষমেষ পরস্পরকে খুঁজে পেয়েছিলেন তাঁরা। বর্তমানে দুজনেই সুখী দাম্পত্য জীবন কাটাচ্ছেন।
কৌশিক এবং লাবণীর প্রথম দেখা ‘শান্তির চিতা জ্বলছে’ নামক একটি যাত্রাপালায় অভিনয় করতে গিয়ে। সে সময় লাবণী সরকারের ব্যক্তিগত জীবন হয়ে উঠেছিল ভয়াবহ। বিবাহিত জীবনে ছিলেন চরম অসুখী। বাবা প্রয়াত হয়েছিলেন তাঁর। এমন একজনকে খুঁজছিলেন তিনি যাঁর মধ্যে নিজের বাবাকে খুঁজে পান। তখনই অদ্ভূত ভাবে লাবণীর দেখা হয় কৌশিকের সঙ্গে।
অভিনেতাও ছিলেন নিজের বিবাহিত জীবনে অসুখী। ছেলের ‘সিঙ্গেল ফাদার’ হয়ে কাটাচ্ছিলেন জীবন। লাবণীর সঙ্গে পরিচয় হওয়ার পর একে অপরের প্রতি টান অনুভব করেন তাঁরা। আগের বিয়ে থেকে অব্যাহতি পেয়ে একে অপরের সঙ্গে দ্বিতীয় বার গাঁটছড়া বাঁধেন তাঁরা। অভিনেতার প্রথম পক্ষের ছেলেকে প্রাণ ঢেলে ভালোবাসা দিয়েছেন লাবণী। কৌশিক বলেছিলেন, লাবণী তাঁর ছেলের জন্মদাত্রী মা না হলেও তাঁদের সম্পর্ক এই পৃথিবীতে শ্রেষ্ঠ। তিনি এও বলেছিলেন, ছেলের সিঙ্গেল ফাদার হয়েছিলেন তিনি ঠিকই। কাজের ফাঁকে এসে দেখে যেতেন ছেলে খেয়েছে কিনা। কিন্তু মায়ের যত্নটা কখনোই দিতে পারেননি। তাঁর মতে, মায়ের অভাব বাবা কখনোই পূরণ করতে পারে না।
সিনেমা, সিরিয়ালের দুর্দান্ত খলনায়কের চরিত্রে অভিনয় করেছেন কৌশিক। কিন্তু লাবণীর কথায়, পৃথিবীতে তাঁর মতো মানুষ হয় না। অবশ্য লাবণীর সঙ্গে সঙ্গে বাংলা ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রির অনেকেই একজন মানুষ হিসেবে কৌশিক বন্দ্যোপাধ্যায়কে দিয়েছেন দরাজ সার্টিফিকেট। বলিউডে যেমন খলনায়ক প্রাণের ব্যক্তি জীবন নিয়ে ধন্য ধন্য করা হয়, তেমনি অনেকের মতে কৌশিক হলেন টলিউডের প্রাণ।