ভগবান শিবকে কেন লিঙ্গ রূপে পুজো করা হয়
আজ সোমবার। আজ বাবা মহাদেবের দিন। শিবকে লিঙ্গ হিসেবে পূজা করা হয়। শিবমূর্তি হিসেবে অনেক জায়গাতেই বাবা মহাদেব পূজিত হন। কিন্তু বেশিরভাগ ধর্মীয় তীর্থকেন্দ্র গুলিতে পূজিত হন লিঙ্গ রূপে। লিঙ্গ শব্দটির উৎপত্তি সংস্কৃত ‘লিঙ্গম’ শব্দ থেকে। যার অর্থ প্রতীক বা চিহ্ন। বাংলায় এই শব্দটি ব্যাকরণ শাস্ত্রের কোনো ব্যক্তি বা বস্তু পুরুষ, স্ত্রী নাকি ক্লীব ইত্যাদি চিহ্নিত করতে ব্যবহৃত হয়।
‘শিবলিঙ্গ’ শব্দের শাব্দিক অর্থ হলো ‘শিবের মাথা’। তবে অজ্ঞাতবশত ‘লিঙ্গ’ শব্দটি তার অর্থ পরিবর্তন করে বাংলায় পুরুষ জননেন্দ্রিয় অর্থ লাভ করেছে। যা ক্রমশ বিকৃত ও অশালীন হয়ে পড়েছে। শিব লিঙ্গের ওপরে তিনটি সাদা দাগ থাকে। যাকে ‘ত্রিপুন্ড্র’ বলা হয়। শিবলিঙ্গ যদি জননেন্দ্রিয়কে বোঝাতো তাহলে লিঙ্গের ওপরে ওই তিনটে সাদা তিলক থাকত না।
শিবলিঙ্গ তিনটি অংশ নিয়ে তৈরি হয়। সবার নিচের অংশকে বলা হয় ব্রম্ভপিঠ, মাঝখানের অংশে বিষ্ণুপিঠ, এবং সবার উপরের অংশ শিবপিঠ। একটি সাধারন তথ্য অনুযায়ী, বলা হয় শিবলিঙ্গ হলো শিবের আদি-অন্তহীন সত্বার প্রতীক।
অথর্ববেদের লিঙ্গ পূজা নিয়ে বলা হয়েছে। কারও কারও মতে, এটি সম্ভবত লিঙ্গ পূজার উৎসব। কেউ কেউ মনে করেন, যূপস্তম্ভ বা হাঁড়ি কাঠের সঙ্গে শিবলিঙ্গের যোগ রয়েছে। যজ্ঞের আগুন, ধোঁয়া, ছাই, মাদক, সোমরস যজ্ঞের কাঠ বহন করার ষাঁড় ইত্যাদির সঙ্গে শিবের শারীরিক বৈশিষ্ট্য ও গুণাবলী যোগ লক্ষ্য করা যায়।
মনে করা হয় পরবর্তীকালে যূপস্তম্ভ শিবলিঙ্গের রূপ নিয়েছে। তবে এখনো পূজিত হয় এমন একটি প্রাচীনতম লিঙ্গের নিদর্শন পাওয়া যায় গুডিমাল্লামে। এ লিঙ্গটি তৈরি হয়েছিল খ্রীস্টপূর্ব দ্বিতীয় শতাব্দীতে।