না ফেরার দেশে চলে গিয়েছেন লতা মঙ্গেশকর (Lata Mangeshkar)। কিন্তু আশা ভোঁসলে (Asha Bhonsle) এখনও ভোলেননি সেই দিনগুলির কথা যখন পিতৃহারা হয়েছিলেন তাঁরা। অত বড় সংসারের দায়িত্ব একাই কাঁধে তুলে নিয়েছিলেন লতা। প্রথম জীবনে অভিনয় ও পরে গান ধীরে ধীরে হাল ফিরিয়েছিল সংসারের। লতা ও আশার দ্বন্দ্ব নিয়ে বহু কাহিনী প্রচলিত থাকলেও লতার মৃত্যুতে সবচেয়ে ভেঙে পড়েছিলেন আশাই। দিদির সাথে শৈশবের ছবি শেয়ার করে স্মৃতি রোমন্থন করেছিলেন তিনি। এবার ‘নাম রহে যায়েগা’-র সাম্প্রতিক পর্বে লতার এক অদ্ভুত বিশ্বাসের কথা জানিয়েছেন আশা।
লতা স্টারকিড ছিলেন না। ভারত-পাকিস্তান বিভাজনের পর অধিকাংশ নামী গায়িকা পাকিস্তানে চলে যান। লতা তখন কিশোরী। দরিদ্র পরিবারের মেয়ে লতার কোনো ব্যাকগ্রাউন্ড ছিল না। ফলে এক নবাগতাকে গান গাওয়ার সুযোগ দিতে রাজি ছিল না মুম্বই ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রি। অনিচ্ছা সত্ত্বেও লতা বেছে নিয়েছিলেন অভিনয়ের পেশাকে। কারণ তাঁর ঘরে সেই সময় তিনি ছাড়া আর কেউ উপার্জনে সক্ষম ছিলেন না। পরবর্তীকালে গায়িকা হওয়ার লড়াইতে লতার সফলতা গড়ে তুলেছে ইতিহাস। আশা জানালেন, লতা কোথাও পড়েছিলেন, যদি সন্তানরা , মা-বাবার পা ধোওয়া জল পান করেন, তাহলে তাঁদের জীবনে প্রচুর সাফল্য আসে।
এই কথা পড়ার পর থেকে লতা নিজে একটি প্লেট নিয়ে এসে আশাকে জল আনতে বলতেন। মা-বাবার পা সেই জল দিয়ে প্লেটের উপর ধুয়ে চরণামৃতের মতো পান করতেন লতা। এমনকি নিজের ভাই-বোনদের এই পরামর্শ দিতেন তিনি। তবে বাবার অস্তিত্ব লতার জীবনে চিরকালের জন্য শেষ হয়ে গিয়েছিল খুব তাড়াতাড়িই। অনেকটা পথ পেরিয়ে এসে আশা আজও ভাবেন সেই দিনগুলির কথা যখন লতা আশি টাকা রোজগার করতেন। সেই যুগে আধি টাকার মূল্য অনেক হলেও পাঁচ জনের সংসারে তাতে কুলাতো না। কিন্তু সেই টাকা থেকেই অতিথিদের আসার জন্য কিছু টাকা আলাদা করে রাখতেন লতা। অধিকাংশ দিন দুই আনার মুড়ি এনে চা দিয়ে খেয়ে ঘুমিয়ে পড়তেন সকলে। তবু লতা সকলকে খুশি রাখার চেষ্টা করতেন।
অশ্রুসজল হয়ে আশা দিদির স্মৃতিচারণ করেছেন। হয়তো তারপরেও মনে হয়েছে, হঠাৎই বেজে উঠবে ফোন। ওপার থেকে দিদি জিজ্ঞাসা করবেন “কেমন আছিস?” সত্যিই কি ভালো আছেন আশা? ভালো নেই প্রভুকুঞ্জও।
View this post on Instagram