বীরভূম জেলার জাগ্রত পীঠস্থান কঙ্কালীতলা সতীপীঠ
সতীর ৫১ পীঠের ঐতিহাসিক কাহিনী অনুসারে জানা যায়, দক্ষের যজ্ঞের সময় মহাদেব এর অপমান সহ্য না করতে পেরে যজ্ঞকুন্ডে নিজেকে আত্মাহুতি দেন সতী। প্রচন্ড রাগে মহাদেব সতীর দেহকে নিয়ে তান্ডব লীলায় মাতেন। মহাদেবকে থামাতে বিষ্ণু তার সুদর্শন চক্রের সাহায্যে সতীর দেহ খন্ড বিখন্ড করে দেন। সতীর সেই টুকরো টুকরো অংশ পৃথিবীর বুকে পতিত হয়েছে যেখানে যেখানে, সেখানেই তৈরি হয়েছে একেকটি সতীপীঠ।
বীরভূম জেলার অন্তর্গত বোলপুর থেকে প্রায় ৯ কিলোমিটার দূরে কোপাই নদীর তীরে অবস্থিত ৫১ সতী পীঠের মধ্যে একটি হলো ‘কঙ্কালীতলা’। তবে অতীতে এই স্থান ‘কাঞ্চি’ নামে পরিচিত ছিল। এখানকার দেবীর নাম গর্ভাদেবী, তবে তিনি ভৈরব রুরু নামে পূজিত হন। ঐতিহাসিক বিভিন্ন কাব্যগ্রন্থ যথা ভারতচন্দ্রের ‘অন্নদামঙ্গল’ থেকে জানা যায়, এখানে দেবীর কটি দেশ বা কোমরের অংশ পড়েছিল। তন্ত্র সাধনার জন্য এই ‘কঙ্কালীতলা’ বেশ জনপ্রিয়।
মন্দিরের সংলগ্ন একটি কুন্ড রয়েছে। সেই কুন্ডের মধ্যে থাকা পাথরখণ্ডকেই সেখানকার সাধকরা মনে করেন, এগুলি হল দেবীর শরীরের সেই ছিন্নবিচ্ছিন্ন অংশ। এক অলৌকিক বিশ্বাস এখানকার মানুষের মধ্যে আছে তারা মনে করেন, কাশীর মণিকর্ণিকা ঘাটের সঙ্গে কঙ্কালীতলার কুন্ডের সংযোগ রয়েছে। যদিও এর সত্যতা এখনো জানা যায়নি। তবে মানুষের অগাধ বিশ্বাসের প্রতিবছর এখানে অনেক ভক্ত সমাগম হয়।