জনপ্রিয় সিরিয়াল ‘গঙ্গারাম’-এর দৌলতে অভিষেক বসু (Abhishek basu) এখন পরিচিত মুখ। এর আগে ‘নেতাজী’ সিরিয়ালে নেতাজী সুভাষচন্দ্র বসু (Netaji subhashchandra basu)-র চরিত্রে অভিনয় করে রীতিমত প্রশংসিত হয়েছিলেন অভিষেক।
‘গঙ্গারাম’-এর চরিত্রটি অভিষেক যথেষ্ট এনজয় করছেন। তার কারণ হল গান। অভিষেক নিজেও ভালো গান করেন। ক্লাস সিক্স থেকে চন্ডীগড় ঘরানার ক্লাসিক্যাল গানে তালিম নিয়েছেন অভিষেক। গঙ্গারাম চরিত্রে অভিনয় করার জন্য এখন তিনি নিজেকে নিয়মিত রেওয়াজের মধ্যে রাখেন। গঙ্গারামের মতো হাসিঠাট্টা করতেও পছন্দ করেন অভিষেক। গঙ্গারামের চরিত্রে চুল পেতে আঁচড়াতে হয় অভিষেককে। তিনি নিজেই বললেন, চুলটা আঁচড়ানোর পর সেটে একবার জিজ্ঞাসা করে নেন, তাঁকে বেশি স্মার্ট দেখাচ্ছে কিনা। গঙ্গারামের চরিত্রে অভিষেকের অভিনয় দেখে মমতাশঙ্কর অভিষেককে ফোন করে বলেছিলেন, তিনি তাঁর ফ্যান হয়ে গিয়েছেন।
তবে ‘নেতাজী’ অভিষেকের জীবনের গুরুত্বপূর্ণ মোড়। এই সিরিয়ালে অভিষেক প্রথমবার লিড চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন। নেতাজী সুভাষচন্দ্র বসুর চরিত্রে অভিনয়ের জন্য যথেষ্ট রিসার্চ করতে হয়েছিল অভিষেককে। সেই সময়ে নেতাজী সম্পর্কিত প্রচুর বই পড়েছিলেন অভিষেক। এছাড়াও নেতাজীকে নিয়ে তৈরী বিভিন্ন ফিল্ম ও ওয়েব সিরিজ দেখেছিলেন তিনি। এমনকি সিরিয়ালে নিয়মিত প্রস্থেটিক মেকআপ ব্যবহার করার সমস্যা রয়েছে জানতে পেরে অভিষেক সেই সময় নেতাজীর লুকের জন্য নিজের চুল ধীরে ধীরে ছোট করা শুরু করেছিলেন যাতে হেয়ারফল-টা বোঝা যায়। যতদিন ‘নেতাজী’ সম্প্রচারিত হয়েছিল, ততদিন অভিষেক বাইরে বেরোতেন টুপি পরে। অভিষেকের সেদিন মনে হয়েছিল সত্যিই তিনি নেতাজী হয়ে উঠতে পেরেছেন, যেদিন কলামন্দিরে একজন মহিলা তাঁকে দেখে আপ্লুত হয়ে বলেছিলেন, ভদ্রমহিলার বাবা ‘ইন্ডিয়ান ন্যাশনাল আর্মি’-তে ছিলেন।
সেন্ট জেভিয়ার্স কলেজ থেকে মাল্টিমিডিয়া নিয়ে স্নাতক হওয়ার সময় কলেজের ক্যাম্পাসিং-এ চাকরি পেয়েছিলেন অভিষেক। কিন্তু অভিনয়কে ভালোবেসে একসময় চাকরি ছেড়ে দেন তিনি। ডান্স রিয়েলিটি শোয়ের মাধ্যমে বাংলা টেলিভিশন ইন্ডাস্ট্রিতে পা রেখেছিলেন তিনি। তবে অভিনয় করতে এসে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করার লড়াইটা খুব একটা সহজ ছিল না। প্রথমদিকে বাংলা ফিল্মে ছোট চরিত্রে অভিনয় করতেন অভিষেক। ‘বোঝে না সে বোঝে না ধারাবাহিকের মাধ্যমে ডেইলি সোপে কাজ করা শুরু করেন অভিষেক। 2013 থেকে টেলিভিশনে কাজ করছেন তিনি। সেই সময়ের একটি ঘটনা শেয়ার করেছেন অভিষেক। তিনি বলেছেন, একসময় তাঁর বাবার অ্যাক্সিডেন্ট হয়েছিল। অভিষেকের বাবা হাসপাতালে ভর্তি থাকাকালীন তাঁদের পরিবার এক কঠিন সময়ের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছিলেন। সেই সময় ‘ভক্তের ভগবান শ্রীকৃষ্ণ’ সিরিয়ালে ‘অর্জুন’ চরিত্রে অভিষেকের কাস্ট হওয়ার খবর আসে। অভিষেকের জীবনে সেটাই ছিল টার্নিং পয়েন্ট কারণ সেদিন তাঁর সিলেকশনের খবরে যথেষ্ট আনন্দিত হয়েছিলেন তাঁর পরিবারের সদস্যরা। এরপর ‘সীমারেখা’ সিরিয়ালে অভিনয়ের জন্য পুরস্কার পেয়েছিলেন অভিষেক। ‘সীমারেখা’-র সেট থেকেই আলাপ প্রেমিকা দিয়া মুখার্জী (Diya mukherjee)-র সঙ্গে। লকডাউনের কারণে ভিডিও কলের মাধ্যমে দুজনে কথা বলছেন। একই পেশায় থাকার কারণে দুজনের মধ্যে কাজ নিয়েও আলোচনা হয়ে থাকে। তবে অভিষেক ও দিয়া এখনও বিয়ের প্ল্যানিং করেননি। তাঁরা আজীবন তাঁদের বন্ধুত্বকে শ্রদ্ধার সাথে বজায় রাখতে চান।