“সাহেবরা নাকি ঢেঁড়সকে লেডিস ফিঙ্গার মেয়েদের আঙ্গুল বলে” এই কথা বলেই হো হো করে হাসি। তারপর দাপুটে গিন্নি বলে ওঠে, “এক চড়ে তোমার গালে একেবারে লেডিস ফিঙ্গার বসিয়ে দেব মুখপুড়ি”- কথা হচ্ছে মৌচাক সিনেমার একটি দৃশ্য নিয়ে। এই সিনেমায় রত্না ঘোষাল (Ratna Ghoshal) ছিলেন যে কিনা জানেই না ঢেঁড়সকে লেডিস ফিঙ্গার মেয়েদের আঙ্গুল বলা হয়। ছিপছিপে, ছোটখাটো মিষ্টি রত্না এখন প্রবীণ অভিনেত্রী। সৌভাগ্যক্রমে উত্তম কুমার, রঞ্জিত মল্লিক, সাবিত্রী দেবী, মহুয়ার মতন তাবড় তাবড় অভিনেতা ও অভিনেত্রীদের সঙ্গে একই পর্দা শেয়ার করেছিলেন। প্রসঙ্গত এই রত্না ঘোষাল বাংলার জনপ্রিয় অভিনেত্রী মহুয়ার খুব কাছের বান্ধবী ছিলেন।
রত্না ঘোষাল প্রধানত পার্শ্বঅভিনেত্রী হিসেবেই অভিনয় করেন। তিনি ‘রাজা রামমোহন’ চলচ্চিত্রে অভিনয়ের মাধ্যমে এই জগতে পা রাখেন। এরপর তিনি প্রায় পঞ্চাশটিরও বেশি চলচ্চিত্রে অভিনয় করেন। তাঁর উল্লেখযোগ্য কিছু বাংলা সিনেমাআ হল – ‘ছোট বউ’, ‘স্বয়ংসিদ্ধা’, ‘দেনা পাওনা’, ‘অচেনা অতিথি’, ‘মৌচাক’ এবং অন্যান।
এখন তিনি বয়সের ভারে অনেকটা নুইয়ে গেছেন ঠিকই, কিন্তু অভিনয় তাঁর রক্তে। পেশা থেকে এখনও অবসর নেননি তিনি। বাংলা ধারাবাহিকে চুটিয়ে অভিনয় করে যাচ্ছেন রত্না ঘোষাল। বাংলা সিরিয়াল ‘কনক কাঁকন’, ‘হৃদয়হরণ বি-এ পাস’, ‘কলের বৌ’ ও ‘কেশব’ ছাড়াও স্টার জলসার হিট সিরিয়াল ‘খড়কুটো’ তে ননীবালার চরিত্রে অভিনয় করছেন তিনি।
কিছুদিন আগে এক সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে রত্না ক্ষোভ নিয়ে জানান যে ইদানিং সব ধারাবাহিকের গল্প প্রায় একই ধরণের। আগেকার দিনে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে কাজ হত, যেমন আশির দশকে জোছন দস্তিদারের পরিচালনায় ‘সেই সময়’ হয়েছিল। পার্ট নিয়ে পরিশ্রম করার জন্য একটা গোটা সপ্তাহ পাওয়া যেত। আজকাল সে সব ভাবাই যায় না। প্রযুক্তি উন্নত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে বাংলা ধারাবাহিকের গুণগত মানও অনেক পড়ে গেছে।
‘মৌচাক’-এর চাঁপার কথায় উঠে এসেছে আরও একটি ক্ষোভ। কোন পরিচালক তাঁকে একসময় বলেছিলেন সংলাপ মুখস্থ করে নিন শট নেব। অভিনেত্রীর কথায়, সংলাপ মুখস্থ করেই শট দেওয়া সম্ভব নয়। তবে এই সমস্ত ক্ষোভের বাইরে গিয়েও সত্তর ঊর্ধ্ব রত্না ঘোষাল অভিনয় জগতে হেসে খেলে দাপটের সঙ্গে বিভিন্ন চরিত্রে অভিনয় করে চলেছেন।
View this post on Instagram