স্বাধীনতা সংগ্রামের সঙ্গে যুক্ত আলিপুরদুয়ার জেলার রোমাঞ্চকর ইতিহাস
ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের জলপাইগুড়ি বিভাগের পাঁচটি জেলার মধ্যে এক অন্যতম জেলা হল আলিপুরদুয়ার জেলা। ২০১৪ সালের ২৫ শে জুন এই জেলা গঠিত হয় আলিপুরদুয়ার পুরসভা এবং মাদারিহাট-বীরপাড়া, আলিপুরদুয়ার-১, আলিপুরদুয়ার-২, ফালাকাটা, কালচিনি ও কুমারগ্রাম ব্লক নিয়ে আলিপুরদুয়ার জেলা গঠিত। প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের পাশাপাশি এই জেলাতেই রয়েছে ভারতের দুটি জাতীয় উদ্যান বক্সা জাতীয় উদ্যান, জলদাপাড়া জাতীয় উদ্যান।
আলিপুরদুয়ার জেলার বক্সা পাহাড় অঞ্চলে বক্সা জাতীয় উদ্যান অবস্থিত। এই উদ্যানের আয়তন ৭৬০ বর্গ কিলোমিটার। এখানে রয়েছে ব্যাঘ্র সংরক্ষণ কেন্দ্র। এখানে রয়েছে বাঘ, রেড জঙ্গল ফাউল ইত্যাদি। তাছাড়া দেখার মতো এখানে রয়েছে বক্সা দুর্গ। এটি উদ্যানের মাঝেই রয়েছে। ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনের সময় নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুকে এই দুর্গে বেশ কিছুদিন বন্দী অবস্থায় রাখা হয়েছিল। তাছাড়া এই উদ্যানের মাঝে রয়েছে একটি শিব মন্দির।
তাছাড়াও এখানে আরেকটি দর্শনীয় স্থান হল জলদাপাড়া জাতীয় উদ্যান। পূর্ব হিমালয়ের পাদদেশে এটি অবস্থিত। এর আয়তন ১৪১ বর্গ কিলোমিটার। এই উদ্যানটি তোর্সা নদীর তীরে তৈরি হয়েছে। এখানে পর্যটকরা বেড়াতে গেলে তাদেরকে এলিফ্যান্ট সাফারির মাধ্যমে পুরো বনাঞ্চলে জীবজন্তুকে ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে দেখানো হয়। এখানকার জীবজন্তুর মধ্যে রয়েছে প্রায় অবলুপ্তপ্রায় একশৃঙ্গ গন্ডার। তাছাড়াও টোটো উপজাতির একমাত্র আবাসস্থল ‘টোটোপাড়া’ এই অঞ্চলেই অবস্থিত।
জলদাপাড়া জাতীয় উদ্যান এবং বক্সা জাতীয় উদ্যান এর মধ্যবর্তী করিডোর চিলাপাতা বনাঞ্চল একটি গভীর বনাঞ্চল। এখানেও নানান প্রজাতির পশুপাখি, জীবজন্তু দেখা যায়। এই জঙ্গল থেকেই জীবিকা অর্জন করেন এখানকার রাভা প্রজাতির মানুষরা। জঙ্গল থেকে জ্বালানি কাঠ সংগ্রহ করে নেওয়ায় তাদের একমাত্র জীবিকা। এখানকার আরো একটি পর্যটন আকর্ষণ হল নলরাজাগড়। ইতিহাস বলছে, এটি গুপ্ত যুগে তৈরি হওয়া নল রাজাদের দুর্গ।