বর্তমানে ছোট থেকে বড় সকলের মধ্যেই অতিরিক্ত পরিমাণে নীল ছবি দেখার প্রবণতা বাড়ছে। যা সত্যি আশঙ্কাজনক। পরিমিত মাত্রায় দেখলে কোন অসুবিধা হয় না, কিন্তু যখন এই সমস্ত দেখার বয়স হয়না তার আগেই ফোন বা কম্পিউটারের মধ্যে এই সমস্ত পর্যাপ্ত পরিমাণে পাওয়া যায় তখনই যুবসমাজের অবনতি ঘটতে থাকে। যুক্তরাষ্ট্রের খ্যাতনামা কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি প্রতিবেদনে বলা হয়, এই ধরনের ভিডিও দেখলে প্রথমে তার প্রভাব পড়ে মস্তিষ্কে। আর অতিরিক্ত পরিমাণে দেখার ফলে এটি আসক্তির পর্যায়ে চলে যায়। যা মাদকাসক্তির থেকে কোন অংশে কম নয়।
এর ক্ষতিকারক দিক -»
প্রথমত, শারীরিক মিলন সম্পর্কে ভুল ধারণা দেয় -»
এর সবচেয়ে কালো দিক হলো এটি মানুষকে শারীরিক সম্পর্ক সম্পর্কে একটা ফ্যান্টাসির জগতে নিয়ে যায়। যা কখনো বাস্তবে হওয়া সম্ভব নয়। কারণ বাস্তবের মানুষগুলো ওই ভিডিওর তারকা বা নায়ক-নায়িকাদের মতন অতটা ঝকঝকে বা আকর্ষণীয় হয়না। যার ফলে অতিরিক্ত পরিমাণে এগুলি দেখলে, উল্টোদিকের মানুষটি থেকেও এমনটা আশা করার ফলে যখন তা না পাওয়া যায় তার ফলেই শুরু হয় বিষন্নতা, মনোমালিন্য এবং সম্পর্কে টানাপোড়েন।
দ্বিতীয়তঃ, নেশায় পরিণত করে -»
এই ধরনের ভিডিওগুলি ক্রমাগত দেখতে থাকলে তা এক সময় মাদকাসক্তির নেশার থেকেও বড় আকারের নেশা ধারণ করতে পারে। এটি চোখের মাধ্যমে শরীরের ভেতরে প্রবেশ করে আর ক্রমাগত আপনাকে এর মধ্যে ডুবিয়ে ফেলবে।
তৃতীয়ত, নিজের শরীরের কদর করতে ভুলে যায়-»
কিছুদিন ধরে এই সমস্ত ভিডিওতে আসক্তি হতে হতে নিজের শরীরের সৌন্দর্য তা ক্রমশ আপনি হারিয়ে যেতে থাকেন। হতাশা হীনমন্যতায় ভুগতে থাকেন। কারণ এখানে যৌনতা নিয়ে অবাস্তব কিছু বিষয় দেখানো হয়। সেগুলো যখন আপনি বাস্তবে পুরোপুরি করতে পারেননা, তখনই আপনার জীবনে অন্ধকার নেমে আসে।
চতুর্থত, যৌন ক্ষমতা কমায়-»
প্রতিদিন এই ভিডিওগুলি দেখার ফলে আপনার যৌন ক্ষমতা ক্রমশ কমে যেতে পারে। ভিডিওগুলি দেখতে দেখতে অনেকেই মাস্টারবেশনের আসক্ত হয়ে পড়েন। অতিরিক্ত মাস্টারবেশন আপনার যৌন ক্ষমতাকে ক্রমশঃ কমিয়ে দেবে।
পঞ্চমত, নারী নির্যাতনে উৎসাহিত করে -»
এই সমস্ত ভিডিও গুলিকে আরও বেশি আকর্ষণীয় করার জন্য যে রকম পদ্ধতিতে যৌনতাকে সকলের সামনে দেখানো হয়। তা অনেক বেশি রুক্ষ এবং উগ্র ও একদিক থেকে অনিরাপদ। এমন এমন কিছু কার্যকলাপ দেখানো হয় যাতে নারী নির্যাতনের উৎসাহিত করে যুবসমাজকে। যা কখনোই কাম্য নয়।
ষষ্ঠতঃ, আপনার আচরণকে উগ্র করে তোলে -»
সমস্ত ভিডিওতে সব সময় পুরুষতান্ত্রিক সমাজকে অনেক বেশি করে দেখানো হয়। ভিডিও চলাকালীন অনেক সময় অনেক অশ্রাব্য গালাগাল ইত্যাদি শুনতেও শোনা যায়। অথচ উল্টোদিকে নারীরা কিন্তু একেবারেই নিষ্ক্রিয় থাকে, কোথাও হয়তো এটাই বুঝানো হয় যে, এইরকম জবরদস্তি এবং আক্রমণাত্মক আচরণ মেয়েরা পছন্দ করে। আর নিজের পৌরুষত্ব দেখাতে গিয়ে আপনিও হয়তো আপনার সঙ্গিনীর কাছে এমন কিছু করে বসেন যাতে আপনার সঙ্গিনীর কাছে বিষয়টি খুব কষ্টদায়ক হয়ে ওঠে।
সপ্তমত, সময়কে বাঁচান -»
কথাতেই আছে, সমুদ্রের স্রোত আর সময় একবার চলে গেলে আর ফিরে আসেনা। তাই আপনার জীবনের গুরুত্বপূর্ণ সময়ে এই সমস্ত ভিডিও দেখে সময় কাটিয়ে দেবেননা। একবার এই সমস্ত ভিডিও দেখার নেশা শুরু হলে কোথা দিয়ে সময় চলে যাবে আপনি নিজেও বুঝতে পারবেননা।
নবমত, সঙ্গীর থেকে দূরে করে দেয় -»
অনেক সময় বিপরীত মানুষটির থেকে ভিডিওর নায়ক-নায়িকাদের মতন উপযুক্ত সঙ্গী না পাওয়ার জন্য তাদের সম্পর্কের মধ্যে ভাঙন দেখা দিতে শুরু করে। সঙ্গীর সঙ্গে সময় না কাটিয়ে একাকীত্বে এই সমস্ত ভিডিও দেখার প্রবণতা অনেক বেড়ে যাচ্ছে। তাই নিজেদের মধ্যে একাকীত্ব আসতে দেবেননা। দুজনে মিলে ভালো সময় কাটান।
