Arpita Mukherjee: রাঁধুনি থেকে শিক্ষাদপ্তরে চাকরি, অর্পিতার পাশাপাশি উন্নতি হয়েছে বোন সঙ্গীতার
এক সপ্তাহ হয়ে গেল গ্রেফতার হয়েছেন অর্পিতা মুখোপাধ্যায় (Arpita Mukherjee)। পশ্চিমবঙ্গের প্রাক্তন শিল্পমন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় (Partha Chatterjee)-র ঘনিষ্ঠ বান্ধবী অর্পিতার ডায়মন্ড সিটির ফ্ল্যাট থেকে উদ্ধার হয়েছে উনত্রিশ কোটি টাকা, বিপুল পরিমাণ সোনা ও বৈদেশিক মুদ্রা। রাতারাতি উধাও হয়ে গিয়েছে চারটি গাড়ি। ইডির সন্দেহ, ওই গাড়িগুলিতে ছিল আরও আর্থিক সম্পদ। এই গাড়ির সূত্র ধরেই সামনে এসেছে অর্পিতার ভগ্নিপতি কল্যাণ ধর (Kalyan Dhar)-এর নাম। এর আগে অর্পিতার মা মিনতি মুখোপাধ্যায় (Minati Mukherjee)-র অভিযোগ ছিল, তাঁর ছোট মেয়ে সঙ্গীতা ধর (Sangeeta Dhar)-কে ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না তাঁদের বেলঘরিয়ার দেওয়ানপাড়ার মির্জা লতিফ স্ট্রিটের বাড়িতে। ইডির তদন্ত আধিকারিকরা ইতিমধ্যেই বেলঘরিয়ার বাড়িতে তল্লাশি চালিয়েছেন। তবে কিছুই মেলেনি। কিন্তু উঠে এসেছে কল্যাণ ও সঙ্গীতা সম্পর্কে বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ তথ্য।
View this post on Instagram
সঙ্গীতার উত্থান যথেষ্ট ফিল্মি। প্রতিবেশীরা জানিয়েছেন, অর্পিতার ছোট বোন সঙ্গীতার সাথে বিয়ে হয়েছিল কল্যাণের। কল্যাণ ও সঙ্গীতা থাকতেন বেলঘরিয়ার কিশোরপল্লীর বাড়িতে। অর্পিতার গাড়ি চালাতেন কল্যাণ। তবে সংসারে ছিল অত্যন্ত দারিদ্র্য। ফলে সঙ্গীতা একসময় ধুপকাঠি বিক্রি করতেন। এছাড়াও বিভিন্ন বাড়িতে রাঁধুনি হিসাবে কাজ করে সংসার চালাতেন। তবে সকলের চোখের সামনে হঠাৎই বদলে যায় কল্যাণ ও সঙ্গীতার জীবনযাত্রা। মাত্র ষষ্ঠ শ্রেণী উত্তীর্ণা সঙ্গীতা চাকরি পান শিক্ষা দপ্তরে। চাকরি পাওয়ার পর কিছুদিন বাড়ি ভাড়া নিয়ে ছিলেন কল্যাণ ও সঙ্গীতা। কিন্তু একসময় শরিকি অংশে তাঁরা নিজেদের বাড়ি করেন। কল্যাণও এলাকায় রীতিমত প্রভাবশালী হয়ে উঠেছিলেন।
ষষ্ঠ শ্রেণীর পাশ করা সঙ্গীতা কি করে শিক্ষা দপ্তরে চাকরি পেলেন, তা নিয়ে উঠেছে প্রশ্ন। এর মধ্যেই ইডির জেরার মুখে অর্পিতা জানিয়েছেন, পার্থ তাঁর ও কল্যাণের আধার কার্ড, প্যান কার্ড ও ভোটার আইডি কার্ড বেআইনি ভাবে ব্যবহার করতেন। এভাবেই অর্পিতার নামে কেনা হয়েছিল একাধিক প্রপার্টি। অর্পিতা বলেছেন, এই সম্পত্তিগুলিতে তাঁর নাম ব্যবহার হলেও এগুলির প্রকৃত মালিক ছিলেন পার্থ। এমনকি কসবা এলাকায় ‘ইচ্ছে’ নামে একটি বাড়ি রয়েছে অর্পিতার নামে। সেটি তৈরির জন্য বিপুল পরিমাণ কর ফাঁকি দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে পার্থ ও অর্পিতার বিরুদ্ধে। ইতিমধ্যেই ফিরহাদ হাকিম (Firhad Hakim) এই বিষয়ে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন।
View this post on Instagram
তবে অর্পিতা ও সঙ্গীতার বৈভব স্পর্শ করেনি তাঁদের মা মিনতিকে। তিনি থাকেন ভাঙা বাড়িতে। এমনকি হাতে একটি লোহার চুড়ি ছাড়া নেই কোনো অলঙ্কার। তাহলে কি অর্পিতা ও সঙ্গীতা যাতে পার্থর বিরুদ্ধে মুখ না খোলেন, তার জন্যই তাঁদের জীবনযাত্রা উন্নত করে তুষ্ট রেখেছিলেন পার্থ? এমনকি নিশ্চয়ই কল্যাণ জানতেন, ওই উধাও হয়ে যাওয়া চারটি গাড়ির কথা। সেগুলি এখনও পাওয়া যায়নি। কল্যাণ পেশায় ড্রাইভার হওয়ার কারণে তাঁর পক্ষে পার্থর জন্য বিশ্বস্ত ড্রাইভার যোগাড় করা সম্ভব। এমনকি ওই গাড়িগুলি অত্যন্ত বিশ্বস্ত ও দক্ষ ড্রাইভার ছাড়া ডায়মন্ড সিটির ফ্ল্যাট থেকে এক রাতের মধ্যে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া সম্ভব ছিল না। আপাতত বেলঘরিয়ার কিশোরপল্লীর বাড়িতে ঝুলছে তালা। খুব শীঘ্রই গ্রেফতার হতে পারেন সঙ্গীতাও। ক্রমশ ঘনীভূত হচ্ছে পার্থ রহস্য।