বাংলাদেশের ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিতে বর্তমানে চলছে সম্পর্কের চড়াই-উতরাই। একদিকে রয়েছেন পরীমণি (Porimoni) ও শরিফুল রাজ (Shariful Razz)। অপরদিকে চলছে শাকিব খান (Shakib Khan) তরজা। একাধিক অবৈধ সম্পর্ক তাঁর। একই সাথে রয়েছে তাঁর দুটি বিয়ে। শাকিবের প্রথম স্ত্রী ছিলেন বাংলাদেশি অভিনেত্রী-প্রযোজক অপু বিশ্বাস (Apu Biswas)। কিন্তু অপুর সাথে বিবাহ বিচ্ছেদের পর গোপনে আরও এক বাংলাদেশি অভিনেত্রী শবনম খান বুবলি (Shabnam Khan Bubly)-কে বিয়ে করেন শাকিব। শাকিব ও বুবলির পুত্রসন্তানের জন্ম হয় আমেরিকায়। গত বছর পুজোর সময় একরকম শাকিবের অমতেই বুবলি তাঁদের পুত্রসন্তান শেহজাদ খান বীর (Shehzad Khan Veer)-এর ছবি শেয়ার করেন ফেসবুকে। এরপরেই শাকিব ও বুবলির দূরত্ব তৈরি হয়। শোনা যায়, তাঁদের আইনত বিবাহ বিচ্ছেদ হয়েছে।
কিন্তু 2016 সালে শাকিবের সাথে বুবলি যখন প্রথমবার ফিল্মে অভিনয় করেন, সেই সময় তাঁর সাথে নায়কের সম্পর্ক ছিল না। সেই সময় শাকিব সিঙ্গল ছিলেন বলে জানতেন বুবলি। কারণ অপুর সাথে তাঁর সম্পর্কের কথা কখনও জনসমক্ষে আনতে চাননি শাকিব। এমনকি সেই সময় কেউই জানতেন না শাকিব ও অপুর পুত্রসন্তান রয়েছে যার নাম অ্যাব্রাম খান জয় (Abram Khan Joy)। শাকিব ও বুবলির ফিল্ম ‘বসগিরি’ ও ‘শুটার’ হিট হওয়ার পর তাঁদের জুটি নিয়ে পরপর কয়েকটি ফিল্ম তৈরি হয়। শাকিবের সাথে বুবলির বিয়ের পর তাঁরা একসাথে শুটিং করেছেন। সেই সময় অন্তঃসত্ত্বা ছিলেন বুবলি। তা নিয়ে বাংলাদেশের মিডিয়ায় আলোড়ন তৈরি হয়েছিল।
শাকিব চাননি বুবলি ও তাঁর বিয়ে এবং নায়িকার অন্তঃসত্ত্বা হওয়ার খবর সামনে আসুক। ফলে বেবিবাম্প স্পষ্ট হতেই আমেরিকায় পাড়ি দিয়েছিলেন বুবলি। তখনও অবধি সবকিছুই ছিল ইতিবাচক। কিন্তু আমেরিকায় প্রবেশের পর প্যান্ডেমিক পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল পৃথিবী জুড়ে। এই সম্পর্কে বুবলির পরিবারের সমর্থন ছিল না। তাঁর মা-বাবা চেয়েছিলেন, মেয়ে ফিরে আসুন তাঁদের কাছে। কিন্তু প্যান্ডেমিক পরিস্থিতিতে বুবলির সাথে যোগাযোগ রাখতে চাইছিলেন না শাকিব। করোনা পরিস্থিতিতে অ্যাম্বুল্যান্সের শব্দে আতঙ্কিত বুবলি বর্তমানে মনে করেন, শাকিব হয়তো চেয়েছিলেন করোনায় আক্রান্ত হয়ে যাতে বুবলিও ইহজগৎ ছেড়ে চলে যান। তবু তৃতীয় ব্যক্তিকে এই বিষয়ে জড়াননি বুবলি, শুধুমাত্র শাকিবের কেরিয়ারের কথা ভেবে। একাই আমেরিকার হাসপাতালে যেতেন বুবলি।
বীরের যেদিন জন্ম হয়, সেই সময়ও একবার শাকিবের সাথে ফোনে কথা বলে মানসিক শান্তি পেতে চেয়েছিলেন বুবলি। কিন্তো শাকিব তাঁর ফোন ধরেননি। নিজেই আমেরিকার এমার্জেন্সি নাম্বারে ফোন করে বুবলি হাসপাতালের উদ্দেশ্যে রওনা হয়েছিলেন। সেদিন হাসপাতালের রিসেপশনে পৌঁছে অজ্ঞান হয়ে পড়ে গিয়েছিলেন বুবলি। শাকিব বুবলির জন্য নামমাত্র খরচ পাঠিয়ে মেসেজ করে লিখেছিলেন, তিনি আর তাঁর খরচ চালাতে পারবেন না। সন্তানের জন্মের পর প্রয়োজনীয় ধর্মীয় রীতিও পালন করেননি শাকিব। বীরকে নিয়ে আমেরিকা থেকে ফেরার পর বর্তমানে মা-বাবার কাছেই থাকেন বুবলি। শাকিব সন্তানের খরচ দেন না বলে জানিয়েছেন তিনি। ফলে বুবলি নিজেই কাজ করে বীরের ভরণ-পোষণ করেন।
কিন্তু বুবলি জানালেন, তাঁর কাজের জায়গাতেও যেন তৈরি হচ্ছে সমস্যা। তবে বুবলি চান শাকিবের সাথে যেন তাঁর পুত্রসন্তান বীরের বন্ধন তৈরি হয়। এই কারণে ছেলেকে নিয়ে শাকিবের কাছে যান বুবলি এবং সেই ছবিও সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করেন। কিন্তু গত মে মাসে আচমকাই শাকিব, বুবলির ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে পঞ্চাশ হাজার টাকা পাঠিয়েছেন। এর কারণ জানেন না বুবলি নিজেও। 2021 সালে আমেরিকায় গিয়েছিলেন শাকিব। কিন্তু সেখানে কিছুদিন থেকে ফিরে আসার সময় তিনি জানিয়ে দেন, তাঁদের সম্পর্কে চিড় ধরেছে। বুবলির খবর রাখতে পারবেন না তিনি। এমনকি শাকিব জানান, তাঁর পক্ষে বীরের খবর রাখাও সম্ভব হবে না। অর্থাৎ এই সময় থেকেই শাকিব একপ্রকার বুবলিকে জানিয়ে দিয়েছিলেন, তাঁর সাথে বুবলির সম্পর্ক তলানিতে ঠেকেছে।