বন্ধুর সঙ্গে মনোমালিন্য! আত্মঘাতী হলেন ‘প্রথমা কাদম্বিনী’-র কস্টিউম ডিরেক্টর পূজা গায়েন
করোনা অতিমারীর কারণে লকডাউন চলছে পশ্চিমবঙ্গে। ফলে টলিপাড়ায় বন্ধ রয়েছে শুটিং। এর মধ্যেই আত্মঘাতী হলেন ‘প্রথমা কাদম্বিনী’-র কস্টিউম ডিরেক্টর পূজা গায়েন (Puja gayen)।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, 31 শে মে বিকালে পূজা ফোন করে তাঁর এক বান্ধবী জিনা সরকার (Jina sarkar)-কে ফোন করে নিজের বাড়িতে ডাকেন। জিনা এসে দেখেন, সেখানে আগে থেকেই উপস্থিত রয়েছেন পূজার আরও এক বান্ধবী টুম্পা রায় (Tampa Ray)। সেদিন রাতে জিনা ও টুম্পা পূজার বাড়িতেই একসঙ্গে রাতের খাওয়া সারেন। রাতের খাওয়ার পর মদ্যপান করতে করতে তিনজনে একসঙ্গে রাত সাড়ে এগারোটা অবধি গল্প করছিলেন। হঠাৎই গল্প করতে করতে সামান্য কথায় পূজার সঙ্গে টুম্পার বচসা শুরু হয়। একে অপরকে রীতিমত গালিগালাজ করতে থাকেন তাঁরা। এরপর বিরক্ত হয়ে পূজা নিজের ঘরে গিয়ে ঘুমের ওষুধ খেয়ে শুয়ে পড়েন।
কিন্তু টুম্পা পূজার ঘরে গিয়ে তাঁর মুখে জল ঢেলে তাঁকে জাগিয়ে তোলেন। পূজা রেগে গিয়ে টুম্পা ও জিনাকে ঘর থেকে বার করে দিয়ে ঘরের দরজা ভিতর থেকে বন্ধ করে দেন। এই ঘটনায় ভয় পেয়ে টুম্পা ও জিনা তাঁর ঘরের দরজায় ধাক্কা মেরে পূজাকে বারবার দরজা খুলতে অনুরোধ করেন। কিন্তু অনেকক্ষণ দরজা ধাক্কা দেওয়ার পরেও পূজার সাড়া না পেয়ে হাতুড়ি দিয়ে দরজা ভেঙে পূজার ঘরে ঢুকে জিনা ও টুম্পা দেখেন, গলায় গামছা বেঁধে সিলিং ফ্যানের সঙ্গে ঝুলে আত্মহত্যা করেছেন পূজা। পুলিশ জানিয়েছে, 31 শে মে রাত পৌনে বারোটা নাগাদ পূজার মৃত্যু হলেও রাত দুটোর সময় থানায় ফোন করা হয়েছিল। পুলিশ এসে পূজার ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার করে বাঘাযতীন স্টেট জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পর পূজাকে মৃত বলে ঘোষণা করা হয়। এই ঘটনায় কোনো মামলা দায়ের না করা হলেও তদন্ত করা হচ্ছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
26 বছর বয়সী পূজা কর্মসূত্রে কলকাতার নেতাজীনগরে একটি বাড়ি ভাড়া নিয়ে থাকতেন। পূর্ব বর্ধমানের দেবীপুরে গ্রামের বাড়িতে পূজার মা-বাবা থাকেন। স্টার জলসার জনপ্রিয় ধারাবাহিক ‘প্রথমা কাদম্বিনী’-তে কাজ করার সময় পূজার সঙ্গে বন্ধুত্ব হয়েছিল ধারাবাহিকে শশীর চরিত্রাভিনেত্রী জাগৃতি গোস্বামী (jagriti Goswami)-র। এদিন পূজার মৃত্যুর খবর পেয়ে মানসিক ভাবে ভেঙে পড়া জাগৃতি জানিয়েছেন, পূজা প্রাণোচ্ছ্বল স্বভাবের মেয়ে হলেও প্রায়ই মন খারাপ করত। কিন্তু তাঁর মন খারাপের কারণ কোনোদিন জানতে চাননি জাগৃতি। তবে তিনি পূজাকে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে বলেছিলেন। জাগৃতি জানিয়েছেন, একবার পূজা তাঁকে শাড়ি প্রান্তে গিয়েছিলেন। সেই সময় পূজার হাতে একাধিক কাটা দাগ দেখতে পেয়েছিলেন জাগৃতি। একই ধারাবাহিকের হেয়ারস্টাইলিস্ট মলিনা স্বর্ণকার (malina swarnakar)-এর সঙ্গেও পূজার ভালো সম্পর্ক ছিল। তিনিও পূজার মৃত্যুতে শোকপ্রকাশ করেছেন। তবে পূজার আত্মহত্যার কোনো সম্ভাব্য কারণ তাঁরও জানা নেই বলে জানিয়েছেন মলিনা।