টলিউডের অন্যতম অভিনেত্রী লাবণি সরকার (Laboni Sarkar) দেখতে দেখতে অভিনয় জীবনের সাঁইত্রিশটি বছর পার করে ফেললেন। মাত্র একুশ বছর বয়সে অভিনয় জগতে আত্মপ্রকাশ ঘটে তাঁর। শৈশব থেকেই নাচ ভালোবাসতেন লাবণি। ভরতনাট্যম শিখতেন তিনি। উচ্চশিক্ষার জন্য যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়েছিলেন লাবণি। সেখানেও প্রায় সব সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানেই অংশগ্রহণ করতেন তিনি। সেখানেই একটি অনুষ্ঠানে লাবণিকে দেখে দেবাংশু সেনগুপ্ত (Debanshu Sengupta) তাঁকে প্রস্তাব দেন অভিনয়ের। তিনি বলেন, জোছন দস্তিদার (Jochan Dastidar) তাঁর ধারাবাহিকের জন্য নায়িকা খুঁজছেন। প্রথমে অভিনয় করতে রাজি ছিলেন না লাবণী। তাঁর আগ্রহ ছিল না। কিন্তু দেবাংশু জোর করে নিয়ে যান তাঁকে। জোছনবাবুর ধারাবাহিকে অভিনয়ের সময় আলাপ হয় সব্যসাচী চক্রবর্তী (Sabyasachi Chakraborty)-র সাথে। এর দুই দিন পরেই অপর্ণা সেন (Aparna Sen) লাবণিকে নির্বাচন করেন ‘সতী’-র জন্য।
এরপর থেকে জীবনে বহু সম্পর্ক তাঁকে ছেড়ে গেলেও অভিনয় ছাড়েনি লাবণিকে। তিনি বলেন, ইদানিং অভিনেতা-অভিনেত্রীদের একাংশ ধৈর্য্য হারিয়ে ফেললেও সারা জীবনে ধৈর্য্য ধরে রাখাই নিয়ম। তাঁর জীবনের প্রথম চিত্রগ্রাহক ছিলেন সব্যসাচী চক্রবর্তী, অপর্ণা সেনের পরিচালনায় সিনেমায় হাতেখড়ি। তবু বয়স যথেষ্ট কম থাকায় গভীরতা বুঝতে পারেননি লাবণি। তাই তাঁর টেনশন হয়নি। পরিচালকের নির্দেশ অনুযায়ী অভিনয় করে গিয়েছেন।
View this post on Instagram
সাম্প্রতিক কালে ওয়েব সিরিজ ‘রক্তকরবী’-র মাধ্যমে ওটিটিতে ডেবিউ করেছেন লাবণি। তিনি মনে করেন, মানুষের সমস্যা, ক্রোধ, ঘৃণা, ভালোবাসা ওয়েব সিরিজে সহজে ফুটে উঠছে বলেই দর্শকরাও আকৃষ্ট হচ্ছেন। লাবণি নিজেও ব্যক্তিগত ভাবে পছন্দ করেন ওয়েব সিরিজ। একসময় চেহারা দিয়ে নায়ক-নায়িকা বিচার হত। ফলে মাত্র উনত্রিশ বছর বয়সে লাবণি উনচল্লিশ বছর বয়সী প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায় (Prosenjit Chatterjee)-র মায়ের চরিত্রে অভিনয় করেছেন। কিন্তু তা নিয়ে ভাবেন না লাবণি। তিনি মনে করেন, এটা তাঁর ক্রেডিট।
লাবণি যে সময় ইন্ডাস্ট্রিতে এসেছিলেন তখন নায়িকাদের নাচ-গান, সামান্য ফাইট ও গ্লিসারিন চোখে দিয়ে কাঁদা ছাড়া আর কোনো কাজ ছিল না। নায়করাই প্রাধান্য পেতেন। তবে লাবণি চরিত্রাভিনেত্রী হয়ে গুরুত্বপূর্ণ চরিত্রে অভিনয় করেছেন। ফলে তিনি যথেষ্ট আনন্দিত।
View this post on Instagram