সুরের অন্যতম সমার্থক শব্দ ছিলেন লতা মঙ্গেশকর। তাঁর চলে যাওয়াটা নতুন প্রজন্মের কাছেও দুর্বিষহতাই বটে। তাঁর কণ্ঠে বেজে ওঠা হাজার হাজার গানের জন্য তিনি গিনেস বুক অফ ওয়ার্ল্ড রেকর্ডসেও একটি উজ্জ্বল স্থান অধিকার করে নিয়েছেন। কিন্তু এই সাফল্যের পেছনে যে ভয়ংকর সংগ্রাম অবধারিত ছিল সেটা আর কে জানত!
শোনা যায়, ১৯৪২ সালে বাবার মৃত্যুর পর মাত্র ১৩ বছর বয়সে সংসারের দায়িত্ব নিজের কাঁধে তুলে নেন। অভিনয় জগৎ, সংগীত জগৎ সব জায়গাতেই সরু গলার কারণে অবহেলিত হচ্ছিলেন। শুরু করলেন মঞ্চে গান গাওয়া। প্রথম পারিশ্রমিক পেয়েছিলেন মাত্র ২৫ টাকা। এরপর ধীরে ধীরে হিন্দি ভাষার সংগীত জগতের দিকে এগোতে শুরু করেন।
১৯৪৯ সালের হিন্দি জগতের ‘মহল’ ছবির ‘আয়েগা আনেবালা’ গানটা গাইলেন লতাজি। তুমুল জনপ্রিয় হলো। পা দিলেন সাফল্যের সিঁড়িতে। লতাজি ও আশাজির জীবনকাহিনী লেখক রাজু ভারাতন জানিয়েছিলেন, ১৯৫০-৬০ সালে লতাজি প্রায় ৫০০ টাকা করে পারিশ্রমিক নিতেন। তাঁর প্রায় ৩০০০০টি বিভিন্ন ভাষার গান রয়েছে। যেখানে তিনি সংগীত জগতের অন্যান্য সদস্যদের জন্য পারিশ্রমিকের একটি অন্যতম উদাহরণ রেখে গিয়েছেন।
প্রসঙ্গত, সেযুগের এক মিউজিশিয়ান এক সাক্ষাৎকারে জানিয়েছিলেন, “লতা মঙ্গেশকর আগে প্রত্যেকটি গানের জন্য ২০,০০০ টাকা পারিশ্রমিক নিতেন এবং ধীরে ধীরে তাঁর পারিশ্রমিক ৫০,০০০ টাকায় পৌঁছায়। যদিও তিনি গত কয়েক বছরে গান করা বন্ধ করে দিয়েছিলেন, আজকের সময়ে তার আয় হতে পারত প্রতি গান পিছু ১ থেকে ১.৫ লক্ষ টাকা।” শোনা গেছে ভারত রত্না লতাজি নিজের সহশিল্পীদের নিজের যোগ্যতা অনুযায়ী পারিশ্রমিক নিতে উৎসাহিত করতেন। নিজের সঙ্গীত জীবনে বহু গানের জন্য কোনো পারিশ্রমিক নেননি লতা। নীরবে করে গিয়েছেন সংগীত সাধনা।