whatsapp channel

পুরান অনুযায়ী গণেশকে সিদ্ধিদাতা বলা হয় কেন

ভারতের নানান পুরাণে বলা হয়ে থাকে যে,'সংকট-মোচন' দেবতা অর্থাৎ গণপতির আরাধনা করলে সব বিপদ থেকে উদ্ধার পাওয়া যায়। স্বয়ং গণেশ তাঁর ভক্তদের যাবতীয় সমস্যা থেকে ভক্তদের রক্ষা করেন বলে বিশ্বাস…

Avatar

HoopHaap Digital Media

ভারতের নানান পুরাণে বলা হয়ে থাকে যে,’সংকট-মোচন’ দেবতা অর্থাৎ গণপতির আরাধনা করলে সব বিপদ থেকে উদ্ধার পাওয়া যায়। স্বয়ং গণেশ তাঁর ভক্তদের যাবতীয় সমস্যা থেকে ভক্তদের রক্ষা করেন বলে বিশ্বাস সাধারণ মানুষের।

সাধারণত, ব্যবসায়ীরাই গণেশ পুজো বেশি করে থাকেন। তবে অনেক অঞ্চল বা বাড়িতেও ভক্তিভরে পূজিত হন সকলের প্রিয় গণেশ। বাড়িতে শুভ অনুষ্ঠান হোক কিংবা ব্যবসায়ীদের হালখাতা সবেতেই শ্রী শ্রী গণেশ দেবতার পূজা করা হয়। ভারতীয় শাস্ত্রে সপ্তাহের চতুর্থ দিন অর্থাৎ বুধবার গণেশকে উৎসর্গ করার দিন। এই দিনই সকল ভক্তরা বিঘ্নহরতার আরতি করেন। কথায় আছে ঘরে ছোট্ট গণুকে রাখলে তিনি সবার দুঃখ, সমস্যা,দারিদ্র,শত্রুতা দূর করেন। বুদ্ধিভ্রষ্ট মানুষকে বুদ্ধি দান করেন সিদ্ধিদাতা।

গণেশের জন্ম রহস্য ও পৌরাণিক কাহিনী-»
দেবতা মহাদেব শিব এবং মাতা পার্বতীর সন্তান হলেও, তাঁর জন্ম নিয়ে বেশ একটা সুন্দর গল্প রয়েছে। এক সময় মহাদেব শিব কৈলাশে উপস্থিত ছিলেন না। মহাদেবের অনুপস্থিতিতে মাতা পার্বতী একটি বালকের মূর্তি নির্মান করে তাতে প্রাণ প্রতিষ্ঠা করেন। নিজ সন্তান স্নেহে ভালোবাসা দিয়ে বড় করেন।পরম শক্তিশালী এবং বুদ্ধিমান হওয়ারও আশির্বাদ করেন মাতা পার্বতী। নাম দেন গণেশ।

মহাদেব শিব যখন তাঁর কাজ সম্পন্ন করে, পুনরায় কৈলাশে ফিরে এসে স্ত্রী পার্বতীর সাথে দেখা করতে আসেন। তখন সেখানে দ্বার রক্ষার্থী হিসাবে একটি ছোট্ট বালককে দেখতে পান। অন্যদিকে মাতা পার্বতী গণেশকে নির্দেশ দেন তাঁর স্নান না হওয়া অবদি কাউকে তাঁর গুহাতে প্রবেশ করতে না দেওয়া হয়। ছোট্ট গণেশ মহাদেবকে না চিনতে পেরে মাতা পার্বতীর নির্দেশ মেনে অন্যান্যদের মতো মহাদেবকেও গুহার ভেতরে ঢুকতে বাঁধা দেন। কিন্তু মহাদেবকে গুহার ভেতরে ঢুকতে নিষেধ করায় মহাদেব ছোট্ট গণেশের প্রতি ক্ষুব্ধ হন।

এরপর মহাদেব শিবের সাথে বালক গণেশের তুমুল সংঘর্ষ বেঁধে যায়। এই যুদ্ধে মহাদেবকে সাহায্য করতে এসে সকল দেবতাগণ একে একে গণেশের কাছে পরাজিত হন। অবশেষে মহাদেব ক্রোধের বশবর্তী হয়ে মহাদেব শিব নিজ পুত্রের মুণ্ডচ্ছেদ করেন। সংবাদ পেয়ে তৎক্ষণাৎ সেই ক্ষেত্রে পৌঁছান মাতা পার্বতী। ছেলের বিষয়ে সমস্ত কথা মহাদেবকে জানিয়ে কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন ও স্বামীকে দোষারোপ করেন কেন তিনি ছেলেকে দূরে করলেন।

এরপর মৃত গণেশকে পুনরায় তাঁর কাছে ফিরিয়ে দেওয়ার আদেশ করেন মাতা পার্বতী। অবশেষে পার্বতীর মন রাখতে সবদিক বিচার করে ছোট্ট গণেশের প্রাণ ফেরাতে নন্দী ভিঙ্গীকে একটি কাটা মুস্তক আনতে বলেন। শেষে তাঁরা মর্ত্য থেকে হাতির মাথা নিয়ে আসেন।আর তারপরই মাথায় একটি হাতির মাথা জুড়ে দিয়ে ছেলের প্রাণ ফিরিয়ে দেন মহাদেব।

কথিত আছে, মহাদেব নিজের দোষের জন্য অনুতপ্ত হন গণেশের মস্তক বদল নিয়ে। তাই ছেলেকে বর দেন ভক্তরা যখনই পুজো করবেন আগে গণেশ দেবতাকে সকল দেবতার পূর্বে পূজা করার আদেশ দেন। তিনি বলেন, কুমার গণেশ গণাধিপতি হবে ও সকল কাজের পূর্বে গণেশের উপাসনা না করলে ইহলোকের কোন কার্যই সিদ্ধ হবে না। তারপর থেকেই গণেশ পুজো করা হবে।

কথিত আছে বাঙালির শ্রেষ্ঠ পুজা দুর্গোৎসব। উমার মর্ত্যে আগমন হওয়ার আগেই তাঁর ছেলে গজাননের পুজা করা হয়। গণেশ পুজা হলেই শুরু হয় মা দুর্গার আগমনী অনুষ্ঠানের কর্মসূচি। দুর্গা পুজোতে গণেশের স্ত্রী কলা বৌ স্নান করিয়ে পুজার প্রস্তুতি চলে।

whatsapp logo
Avatar
HoopHaap Digital Media