নেই শিক্ষক, চুপিসারে বন্ধ হয়ে যাচ্ছে রাজ্যের বহু প্রাইমারি স্কুল
শিক্ষক নিয়োগে দুর্নীতির জেরে এমনিতেই কাঠগড়ায় উঠেছে রাজ্য। এসএসসি দুর্নীতির চূড়ান্ত রায় না বের হওয়ায় শিক্ষক শিক্ষিকাদের মধ্যেও ছড়িয়েছে ধোঁয়াশা। এমতাবস্থায় খবর পাওয়া গেল, রাজ্যের বহু আপার প্রাইমারি এবং প্রাইমারি স্কুল (Primary School) বন্ধ করে দেওয়া হচ্ছে। সেখানে শিক্ষক নেই। ছাত্রছাত্রীদের অভাবে ধুঁকতে ধুঁকতে এক সময় শেষ হচ্ছে স্কুলগুলির পথচলা। রাজ্যে শিক্ষা ব্যবস্থার এমন কঙ্কালসার অবস্থা নিয়ে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে বিভিন্ন মহলে।
স্কুলে নেই শিক্ষক-পড়ুয়া
পশ্চিম মেদিনীপুরের ডেবরা ব্লকের পরমহংস জুনিয়র হাই স্কুল শুরু হওয়ার পর থেকে এখনো পর্যন্ত কোনো স্থায়ী শিক্ষক বা শিক্ষাকর্মী নিয়োগ হয়নি। স্কুল চালাচ্ছে অবসরপ্রাপ্ত অতিথি শিক্ষকরা, মাসে ৫০০০ টাকার বিনিময়ে। শুরুর দিকে অনেক ছাত্রছাত্রী থাকলেও পরবর্তীতে তা কমে দাঁড়ায় ১৬-১৭ জনে। গত ফেব্রুয়ারি মাসে তাদেরও টিসি দিয়ে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে স্কুল।
স্কুল চালাচ্ছেন অতিথি শিক্ষক
একই পরিস্থিতি পশ্চিম বর্ধমানের ধন্দাডিহি জুনিয়র হাইস্কুলে। সেই ২০১৩ সাল থেকে এখানেও কোনো স্থায়ী শিক্ষক নেই। অতিথি শিক্ষকরাই চালাচ্ছেন স্কুল। কিন্তু ৬৫ র পরে তারাও নিয়ম মতো আর স্কুলে থাকতে পারবেন না। আবারো তালা পড়বে আরেকটি স্কুলে। রিপোর্ট বলছে, পুরুলিয়ার এমন অনেক স্কুল রয়েছে যেখানে ছাত্রছাত্রী নেই। ফলত শিক্ষকরা অন্য স্কুলে গিয়ে পড়াচ্ছেন। কিন্তু বেতন নিচ্ছেন পুরনো স্কুল থেকে।
এমন দুরবস্থার কারণ কী
রিপোর্ট বলছে, বর্তমানে রাজ্যে ৮২০৭ টি স্কুলে ছাত্র সংখ্যা রয়েছে ৫০ এর নীচে। শুরুতে অনেক পড়ূয়া নিয়ে স্কুল শুরু হলেও বর্তমানে শিক্ষক এবং শিক্ষা কর্মীদের অভাবে ছাত্রছাত্রীদের সংখ্যাও কমছে। যে অভিভাবকরা পারছেন তারা সন্তানদের দূরের কোনো স্কুলে ভর্তি করাচ্ছেন। আর যাদের সাধ্যের বাইরে তারা থেকে যাচ্ছে ওই স্কুলেই। শিক্ষানুরাগী ঐক্য মঞ্চের সাধারণ সম্পাদক এ বিষয়ে বলেন, দেশের প্রাথমিক এবং উচ্চ প্রাথমিক শিক্ষাই দেশের ভিত্তি। কিন্তু এ রাজ্যে শিক্ষা ব্যবস্থার গোড়াতেই রয়েছে গলদ। একেবারে নীচের স্তর থেকে শুরু করে আধুনিকীকরণ করা উচিত সরকারের। নয়তো মেধা থাকা সত্ত্বেও সাধারণ পরিবারের ছাত্রছাত্রীরা প্রকৃত শিক্ষা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।