খোলামেলা পোশাক নয়, নিরাহুয়াকে গরম করতে আম্রপালীর উষ্ণতার রহস্য কি?
একসময় কলকাতার বেশ কয়েকটি বি গ্রেডেড হলে চলত ভোজপুরি সিনেমা। সময় ছিল নব্বইয়ের দশকের শেষ দিক। সারাদিনের পরিশ্রমের শেষে কুলি-শ্রমিক শ্রেণীর মানুষরা সামান্য বিনোদনের আশায় ভিড় করতেন ওই প্রেক্ষাগৃহগুলিতে। দীর্ঘদিন পরিবার ছেড়ে রোজগারের আশায় বাঙালি অধ্যুষিত শহরে পড়ে থাকা মানুষগুলি বিনোদনের পাশাপাশি পেতেন নিজের ভাষার ছোঁয়া। শহুরে বাঙালির কাছে যা অশালীন, গ্রামীণ বিহারী মানুষের কাছে তা জীবনের সত্য। বর্তমানে এই প্রেক্ষাগৃহগুলির মধ্যে কিছু পরিণত হয়েছে মাল্টিপ্লেক্সে। কয়েকটি ভেঙে উঠেছে হাইরাইজ। তৎকালীন দর্শকদের অনেকেই ফিরে গিয়েছেন দেশে।কেউ বা অতিরিক্ত মদ্যপানের ফলে হারিয়েছেন প্রাণ। যাঁরা আছেন তাঁদের হাতে নতুন প্রজন্ম তুলে দিয়েছে স্মার্টফোন যাতে কোনও সাবস্ক্রিপশন ছাড়াই ইউটিউবে মেলে দীনেশ যাদব (Dinesh Yadav) ওরফে নিরাহুয়া ও আম্রপালি দুবে (Amrapali Dubey)-র দর্শন। তা সীমিত সময়ের জন্য নয়। কাজের ফাঁকেও একবার চোখ রাখা যায় ইউটিউবে ভোজপুরি ফিল্মের দৃশ্যে। ফলে সহজলভ্য হওয়ার পাশাপাশি নতুন করেই ভাইরাল হয় 2016 সালে মুক্তিপ্রাপ্ত ভোজপুরি ফিল্ম ‘রাম লখন’-এর গান ‘ধড়ক জ্বলা ছাতিয়া’।
প্রবেশ লাল যাদব (Pravesh Lal Yadav) প্রযোজিত এই ফিল্মের পরিচালক ছিলেন সতীশ জৈন (Satish Jain)। ফিল্মের কাহিনীকারও তিনি। মুখ্য চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন নিরাহুয়া ও আম্রপালি। অ্যাকশন নির্ভর ফিল্ম ‘রাম লখন’ বিশেষ ভাবে জনপ্রিয় ভোজপুরি দর্শকদের কাছে। এই গানের মাধ্যমে তুলে ধরা হয়েছে ভোজপুরি গ্রামীণ জীবনের বিশেষ মুহূর্ত। আম্রপালীর যৌবনোচ্ছল নাচ ও নিরাহুয়ার তাঁকে কামনা নিয়ে হয়তো উষ্ণ প্রতিবেদন লেখা যেত। কিন্তু এই গানটি ভোজপুরি দর্শকদের কাছে উষ্ণতার তুলনায় বাস্তবায়নের জন্য অধিক প্রিয়।
গানে আম্রপালিকে দেখা যাচ্ছে সংসারের কাজে ব্যস্ত। অথচ নিরাহুয়া তাঁর স্ত্রীকে একান্তে পেতে চান। শেষ অবধি আম্রপালীই তাঁকে আহ্বান করেন। তৈরি হয় তাঁদের অন্তরঙ্গ মুহূর্ত। প্রকৃতপক্ষে, বর্তমান প্রজন্মের বিনোদনের কাছে ‘ধড়ক জ্বলা ছাতিয়া’ -র পিকচারাইজেশন বিশেষ সাহসী নয়। আম্রপালীও মারাত্মক রকম খোলামেলা পোশাক পরেননি। শুধুমাত্র নৃত্যশৈলী ও অভিনয় দক্ষতার মাধ্যমেই গানের মধ্যে তিনি ও নিরাহুয়া তৈরি করেছেন উষ্ণ আবেদনময় মুহূর্ত।
এই কারণেই যথেষ্ট খোলামেলা ও সাহসী ওয়েব সিরিজের যুগেও এই জুটির রয়েছে একটি আলাদা ফ্যানবেস। এই জনপ্রিয়তার কারণেই আবারও নতুন করে ভাইরাল হয়েছে ‘ধড়ক জ্বলা ছাতিয়া’।