বিগত কয়েক মাসে দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি যেন গোটা দেশে এক চরম সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে সাধারণ মানুষের কাছে। মশলাপাতি থেকে সবজি, মাছ-মাংস, চাল ও ডাল- সবকিছুর দাম বেড়েছে উল্লেখযোগ্য হারে। বলা বাহুল্য, খুব অল্প সময়ে বেশি হারে ঘটেছে এই মূল্যবৃদ্ধি। উৎসবের মরশুম শুরু হওয়ার আগেই কার্যত এভাবে দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির ছবিটা ধরা পড়েছে আমাদের রাজ্যেও। পেট্রোপণ্যের লাগামছাড়া মূল্যবৃদ্ধির প্রভাব যে বিভিন্ন সামগ্রীর পরিবহনে পড়ছে, তা মোটামুটি পরিষ্কার হয়েছিল নাগরিকদের কাছে। আর এই সবকিছু মিলিয়ে যেন খেয়ে-পরে বেঁচে থাকাটাই চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছিল মধ্যবিত্তদের কাছে।
এর আগে বর্ষাকালে টমেটো, কাঁচালঙ্কা, রসুন ও আদার দাম বেড়ে গিয়েছিল আচমকা। সাধারণ মানুষের ধরাছোঁয়ার বাইরে চলে গিয়েছিল এই জিনিসগুলি। তবে সেগুলির দাম এখন কিছুটা কমে এলেও এখন আবার উৎসবের মরশুমে চোখ রাঙাচ্ছে পেঁয়াজ। সারাদেশে পেঁয়াজের দাম বাড়তে পারে বলে আগে থেকেই ইঙ্গিত মিলেছিল। দেশের কিছু অংশে ইতিমধ্যে দেখা গেছে সেই প্রভাব। উর্ধগতি দেখা গেছে পেঁয়াজের দামে। আর এর ফলে আগামী কয়েকসপ্তাহে পেঁয়াজের ব্যাপক মূল্যবৃদ্ধির আশঙ্কা করছেন কেউ কেউ।
ইতিমধ্যে, কলকাতার বাজারে পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে কেজিপ্রতি ৬৫ থেকে ৭০ টাকা দামে। গত এক সপ্তাহ আগে অবধি এই দাম ছিল প্রতি কেজিতে ৪০ থেকে ৪৫ টাকা। বিগত এক সপ্তাহের মধ্যে কেজি প্রতি পেঁয়াজের দাম বেড়েছে ২০ থেকে ২৫ টাকা অবধি। রাজ্যের বাদবাকি সব বাজারের ছবিটাও অনেকটা একইরকম। তাই এই উৎসবের মরশুমে ক্রমেই চিন্তা বাড়াচ্ছে বাড়তে থাকে এই পেঁয়াজের দাম। অনেকেই আশঙ্কা করছেন যে আগামী কয়েক সপ্তাহের মধ্যে আরো বাড়তে পারে পেঁয়াজের দাম।
কিন্তু কেন আচমকা এই মূল্যবৃদ্ধি? জানা গেছে, এখন রবি শস্যের মরশুমে কলকাতার বাজারে যেসব পেঁয়াজ মিলছে, সেগুলি সবগুলিই হল সংরক্ষিত পেঁয়াজ। আর সেই পরিমান বাজারে তৈরি হওয়া পেঁয়াজের চাহিদার থেকে অনেকটাই কম। এছাড়াও এই সময় দক্ষিণ ভারত ও মহারাষ্ট্র থেকে যে পেঁয়াজের আমদানি ঘটে, তাও এবছর বিলম্ব হচ্ছে। আর এইসব কারণ মিলিয়ে দিনের পর দিন অগ্নিমূল্য হচ্ছে বাঙালির এই রোজকার ব্যবহৃত রান্নার সামগ্রী।