জন্ম থেকেই প্রতিবন্ধী, করোনা আবহে হাত ছাড়াই রোগীদের সেবা করে চলেছেন সাহসী নারী
ছোটবেলা থেকেই তার দুটো হাত নেই। কিন্তু সমস্ত শারীরিক প্রতিবন্ধকতাকে কাটিয়ে দুটো হাত ছাড়াই মানুষের সেবা করে চলেছেন এই কন্যা। আসামের এক ছোট্ট শহরে সোনারির বাসিন্দা ২১ বছর বয়সী প্রিন্সি গোগোয়ে। শারীরিক প্রতিবন্ধকতা সত্ত্বেও মনের জোরে এগিয়ে আজ সংসারের দায়িত্ব একাই কাঁধে তুলে নিয়েছেন এই সাহসী কন্যা।
গুয়াহাটির একটি বেসরকারি হাসপাতালে কাজ করেন প্রিন্সি। এই মহামারীর আবহে ও তিনি হাসপাতলে নিরলস পরিশ্রম করে চলেছেন। এই পরিস্থিতি হয়তো এখন সমস্ত হাসপাতালের কর্মীদেরই। কিন্তু প্রিন্সির বিষয়টা এখানে একটু আলাদা। জন্ম থেকেই তার দুটি হাত নেই। কিন্তু এত কাজ সে করে কি করে? ভাবলে অবাক হয়ে যেতে হয় রোগীদের নাম লেখানো থেকে শুরু করে, হাসপাতালে সমস্ত ফোন তোলা সবকিছুই সে করে পায়ের সাহায্যে।
তবে শুনলে আরো অবাক হতে হয় এই চাকরিটা ছাড়াও গান এবং আঁকাও খুব পছন্দ করেন। পায়ের আঙুলের ফাঁকে তুলে ধরে তিনি একটার পর একটা সুন্দর সুন্দর ছবি এঁকে যান। পায়ের সাহায্যে তিনি গণেশের মূর্তিও তৈরি করেছিলেন এবং সেটি প্রায় ৩০ হাজার টাকায় বাজারে বিক্রিও হয়। তার স্বপ্ন তিনি ছোট ছোট বাচ্চাদের জন্য একটি অঙ্কনের বিদ্যালয় তৈরি করবেন। এখন নিজের পরিবারের সমস্ত দায়-দায়িত্ব তিনি একাই সামলান। পঞ্চম শ্রেণীতে ভর্তি হওয়ার সময় তাকে স্কুল থেকে ‘মানসিক রোগী’ বলে তাড়িয়ে দেওয়া হয়। কিন্তু তিনি সেই কথাকে মনে না রেখে সমস্ত বাধা বিপত্তি কাটিয়ে নিজের গ্রামের স্কুল থেকে দ্বাদশ শ্রেণী পাস করেন। প্রিন্সির মতন কন্যা গোটা দেশের আদর্শ হতে পারে। কিভাবে নিজের শারীরিক অক্ষমতাকে জয় করে নিজের মনের ইচ্ছা পূরণ করতে হয়, তা প্রিন্সি করে দেখিয়ে দিয়েছে।