ঋতাভরী চক্রবর্তী (Ritabhari chakraborty) সম্প্রতি নিজের কিছু সাদা-কালো ছবি শেয়ার করেছেন ইন্সটাগ্রামে। তবে ছবি তিনি প্রায়ই শেয়ার করেন। কিন্তু এবার ছবির সাথে তিনি শেয়ার করেছেন তাঁর জীবনের বিশেষ কিছু মুহূর্তের কথা।
এই মুহূর্তগুলোই ছবিগুলিকে স্পেশ্যাল করে তুলেছে। ছবিতে ঋতাভরীর পরনে রয়েছে ডিপ নেক, স্প্যাগেটি স্লিভ নাইট ড্রেস। মাথায় রোলারস লাগানো রয়েছে হেয়ার সেটিং করার জন্য। ছবিগুলিতে কখনও ঋতাভরী আড়মোড়া ভাঙছেন, কখনও আনমনা হয়ে তাকিয়ে রয়েছেন জানলার দিকে, আবার কখনও বা মন দিয়ে বই পড়ছেন। একবার তাঁকে দেখা গেছে, কোনো বস্তু নিয়ে হেসে কথা বলতে। আসলে এগুলো প্রতিটাই জীবনের মুহূর্ত। মুহূর্তগুলিকে সাদা-কালো ফ্রেমে তুলে ধরেছেন ঋতাভরী।
কারণ ঋতাভরী ক্যাপশনে শেয়ার করেছেন একরাশ স্মৃতি। তিনি লিখেছেন প্রথম যেদিন দিদা-দাদুর বাড়ি মা ও তাঁর দিদি চিত্রাঙ্গদা(chitrangada)-র সঙ্গে চলে এসেছিলেন, সেই সকালে তাঁদের মা শতরূপা স্যান্যাল (satarupa shanyal) তাঁদের দুই বোনকে প্রথমবার চা খেতে দিয়েছিলেন। এর আগে কোনোদিন তাঁরা দুই বোন চা না খেলেও সেদিন থেকে চা খাওয়া শুরু করেছিলেন। এরপর থেকে ঋতাভরী নিজের মাকে অনুসরণ করতেন। তিনি ম্যাগাজিন বা নিউজপেপার নিয়ে টয়লেটে যেতেন, ঘুমাতে যাওয়ার আগে মায়ের মতোই মুখে ময়শ্চারাইজার লাগাতেন। তিনি মায়ের মতোই মিউজিক শুনে মাথা নাড়াতে শিখেছিলেন, কখনও বা শিখেছিলেন বাড়ির দরজায় দাঁড়িয়ে চুপচাপ আনমনা হয়ে রাস্তার দিকে তাকিয়ে থাকতে।
ঋতাভরীর কাছে কলকাতার বুকে নিজের কেনা অ্যাপার্টমেন্টে ধূমায়িত কফির কাপ ছিল তাঁর কাছে একরাশ স্বাধীনতা। সেদিন তাঁর অ্যাপার্টমেন্ট গোছাতে সাহায্য করেছিলেন তাঁর বন্ধু অনিকেত (Aniket)। জেনেভা থেকে কফি পড আনা হলেও ছিল না কফি মেশিন। পরবর্তীকালে লিভারের সমস্যার জন্য ঋতাভরীকে কফি খাওয়া ছাড়তে হয়েছিল। ঋতাভরী লিখেছেন প্রথমবার মুম্বইয়ের বান্দ্রার বাড়িতে সকালে উঠে ডাবের জল খেতে খেতে বড় জানলা দিয়ে বাইরের প্রকৃতির দিকে তাকিয়েছিলেন তিনি। সেই বড় জানলায় ছিল না কোনও গরাদ। গরাদ যেন ঋতাভরীকে বদ্ধ খাঁচার কথা মনে করায়। জীবন যেন এক উষ্ণ অনুভূতি যা প্রতি মুহূর্তে বয়ে চলে। ঋতাভরীর নস্টালজিয়ায় ভেসে গিয়েছেন অনেকেই। হয়তো মনে পড়ে গেছে, প্রথমবার অপটু হাতে চা বানানোর কথা, যা ছিল অত্যন্ত আনন্দের। এই প্রসঙ্গে মনে পড়ে যায় বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের লেখা ‘আম আঁটির ভেঁপু’ বইতে দুর্গার প্রথম চড়ুইভাতি করার কাহিনী। দুর্গাও আলুসেদ্ধ, বেগুন ভাজা রান্না করলেও তাতে নুন হয়নি। কিন্তু তবু তাতে আনন্দ কিছুমাত্র কমেনি। আসলে জীবন এভাবেই আবহমান।
View this post on Instagram